কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও কলা খাওয়ার অপকারিতা ১০টি
আপনি কি এমন একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ ফলের সন্ধান করছেন? যেটা দেখতে খুবই মনোমুগ্ধকর
আবার খেতেও অনেক সুস্বাদু! আবার বিভিন্ন ধরনের খাদ্য শক্তি ও পুষ্টিগুণ প্রচুর
পরিমাণে বিদ্যমান রয়েছে। আপনার কি জানতে হচ্ছে কি সেই পুষ্টিকর ফল? তাহলে আপনার
চিন্তার আর কোন কারণ নেই। কারণ আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটির মূল আলোচনায় হচ্ছে কলা
খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও কলা খাওয়ার অপকারিতা ১০টি সেই সম্পর্কে। এ বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্যবহুল ও কার্যকরী আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে
নেওয়া যাক!
আমরা অনেকেই হয়তো কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও কলা খাওয়ার অপকারিতা ১০টি এবং
পুষ্টিগুণ সম্পর্কে না জানার কারণে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকি। আর এই জন্যই কলাতে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে আমাদের
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে নানা ধরনের রোগ আক্রমণ করে। তাই আজকের
এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটির মাধ্যমে কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও কলা খাওয়ার
অপকারিতা ১০টি এ বিষয় সম্পর্কে এমন কিছু ইউনিক ও কার্যকরী তথ্য সম্পর্কে জানাবো,
যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই আপনার শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখতে পারবেন এবং
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে পারবেন। সাথে সাথে আপনার চেহারা হবে উজ্জ্বল,
চোখের দৃষ্টিশক্তি হবে তীক্ষ্ণ, চুল থাকবে মজবুত এবং আরও বিভিন্ন ধরনের উপকার
পাবেন। আপনি কি কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও কলা খাওয়ার অপকারিতা ১০টি বিষয়
সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য গুলো জানতে চান, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র
আপনার জন্যই। এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আশা করি আলোচ্য
বিষয়ে বিস্তারিতভাবে নির্ভুল সব তথ্য গুলো জানতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ!
পেজ সূচিপত্রঃ
.
ভুমিকা
পুষ্টিকর ফল গুলোর মধ্যে কলা হলো মহান আল্লাহ তায়ালার এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। কারণ
কলাতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন পুষ্টি উপাদান ও অনেক ধরনের গুনাগুন বিদ্যমান
রয়েছে। এই পৃথিবীতে অনেক ধরনের গুনাগুন সমৃদ্ধ ফল রয়েছে তার মধ্যে কলা অন্যতম
যা শরীরকে ফিট ও সজীব রাখতে সব থেকে বেশি ভূমিকা পালন করে। সাথে সাথে চেহারার
কালো ভাব দূর করে উজ্জ্বল করে তোলে, দৃষ্টিশক্তিকে অনেক তীক্ষ্ণ করে তোলে, চুলকে
অনেক মজবুত করে এবং রক্ত পরিষ্কার করে।
এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভালো রাখতে সহায়তা করে। তাই আজকের এই
আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন কলা
খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও কলা খাওয়ার অপকারিতা ১০টি এই সম্পর্কে। এছাড়াও কলা
খাওয়ার নিয়ম, কলার মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ, কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি, সকালে কলা
খাওয়ার উপকারিতা,
রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা, পাকা কলা খাওয়ার পুষ্টিকর দিক, রাতে কলা খাওয়ার
ক্ষতিকর দিক, কলা খাওয়ার অপকারিতা ১০টি, দুধ কলা খাওয়ার উপকারিতা এ বিষয়গুলো
সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই আপনি যদি কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও কলা
খাওয়ার অপকারিতা ১০টি এ বিষয় সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি
আপনার জন্য খুবই কার্যকরী।
কলা খাওয়ার নিয়ম
সাধারণত কলা খুবই স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি খাবার। আর এই
স্বাস্থ্যকর খাবার কলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেক ব্যক্তিবর্গই জানেন না।
প্রিয় পাঠক আপনারা যদি কলা খাওয়ার পর কলার সকল পুষ্টিগুণ আপনার শরীরে সঠিক ও
পরিপূর্ণ ভাবে পেতে চান, সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই কলা সঠিক নিয়মে সঠিকভাবে কলা
খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে কলা খেতে হবে।
সাধারণত স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী একটি ফল হচ্ছে কলা আপনারা
যদি সঠিক উপায়ে সঠিক নিয়মে প্রতিদিন নিয়মিত কলা খান, সেক্ষেত্রে আপনাদের শরীরে
মিলবে নানা ধরনের উপকারিতা। অনেক মানুষ রয়েছে যারা সকালবেলা কলা খেতে সবচেয়ে
বেশি পছন্দ করেন। তবে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে কলা খাওয়া একদমই উচিত
নয়। সকালবেলা খালি পেটে কলা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আজই তা বর্জন করুন।
কেননা এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কলাতে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক
গ্লুকোজ এবং কার্বোহাইড্রেট বিদ্যমান থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে
দেয়। এছাড়াও কলাতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন,
ফাইবার,ক্যালোরি,পটাশিয়াম, উচ্চ-ফাইবার, উচ্চ-কার্বোহাইড্রেট, খনিজ, ভিটামিন বি৬
ভিটামিন সি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণেবিদ্যমান রয়েছে পাশাপাশি প্রচুর
পরিমাণে ন্যাচারাল সুগারও বিদ্যমান রয়েছে।
ফলে রক্তে শর্করা এবং ক্ষুধার মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে
রক্তের শর্করা অনেক বৃদ্ধি পায় তখন টাইপ টু ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের
শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও উচ্চ-কার্বোহাইড্রেট যুক্ত
খাবার খাওয়ার ফলে ওজন অনেক বৃদ্ধি হতে পারে বিশেষজ্ঞরা বলেন। তাই সকালবেলা খালি
পেটে কলা না খাওয়াই উত্তম। সকালবেলা আপনারা নাস্তা করার পর কলা খাবেন।
এছাড়াও অনেক মানুষ রয়েছে যারা রাতের বেলা বেশি পরিমাণে কলা খায়, এটি মূলত একটি
বদ অভ্যাস। কেননা আপনারা যদি রাতের বেলা অতিরিক্ত পরিমাণে কলা খান, সেক্ষেত্রে
আপনাদের শরীরে উন্নতির বদলে বরঞ্চ অবনতি হবে। কিছু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে
সারাদিনের উপকারিতা পেতে সকালবেলা কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন । তবে খালি
পেটে কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন না, সকালের খাবারের পর কলা খাওয়ার পরামর্শ
দেন।
প্রিয় পাঠক আপনারা প্রতিদিনের যে কোন সময় কলা খেতে পারেন, কিন্তু আপনার যদি
সকালের খাবারের পরপরই বা সকালের খাবার খাওয়ার সাথে সাথে কলা খান, সেক্ষেত্রে
সারাদিনের পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকারিতা পাবেন। এছাড়াও প্রিয় পাঠক আপনারা যারা
হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছেন, সর্দি বা কাশির প্রবণতা
রয়েছে,
আপনারা কখনোই ঘুমানোর আগে বা রাতের বেলা কলা খাবেন না। কেননা কলা একটি শীতল ফল
কলাকে মূলত শীতল ফল বলে আখ্যায়িত করা হয়। আর এই ফলটি হজম হতে অনেক সময় নেই।
তাই যাদের এই ধরনের সমস্যা রয়েছে তাদের রাতের বেলা কলা না খাওয়াই ভালো। প্রিয়
পাঠক আশা করি কলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন।
কলার মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ
যেহেতু কলা খুবই পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি ফল বা খাবার, সেহেতু প্রত্যেক মানুষরই
জানা উচিত কলাতে কোন কোন পুষ্টিগুণ বিদ্যমান রয়েছে। সাধারণত কলাতে প্রচুর
পরিমাণে বিদ্যমান রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ডায়েটারি ফাইবার,
ম্যাঙ্গানিজ, ফ্যাট, ক্যালোরি, কপার, প্রোটিন, গ্লুকোজ, কার্বোহাইড্রেট, শর্করা,
ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এছাড়াও কলাতে প্রচুর পরিমাণে
পানি বিদ্যমান রয়েছে, যা আমাদের ত্বককে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে।
কলাতে বিদ্যমান থাকা নিউট্রিয়েন্টস ত্বকের ইলাস্টিসিটির ভারসাম্য বজায় রাখতে
দারুন কাজ করে। এছাড়াও ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা যেমন শুষ্ক ত্বক ঠিক করা, চুলের
উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা, শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ কমানো, ইত্যাদি করতে সহায়তা করে।
প্রিয় পাঠক আপনারা যদি শুষ্ক ত্বকের আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে চান, সেক্ষেত্রে আপনারা
অল্প কিছু পরিমাণ কলা ভালোভাবে চটকে সমস্ত মুখমণ্ডলে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে
রাখুন।
এরপর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আপনি নিজেই উপকারিতা বুঝতে পারবেন।
এছাড়াও কলা শরীরকে বিভিন্ন ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ফ্রি
অক্সিজেন রেডিকেলস পাশাপাশি বলি রেখার হাত থেকেও রক্ষা করতে সহায়তা করে। প্রিয়
পাঠক এছাড়াও আপনারা কলা খাওয়ার পর কলার খোসাটা ফেলে না দিয়ে সমস্ত মুখমণ্ডলে
ঘষে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
এরপর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন অনেক উপকার পাবেন। এছাড়াও আপনারা
অল্প পরিমাণ কলা ভালোভাবে চটকে তার মধ্যে কয়েক ফোঁটা গোলাপজল ভালোভাবে মিশিয়ে
সমস্ত মুখমণ্ডলে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর ধুয়ে ফেলুন এখানেও মিলবে
আপনার ত্বকে নানা ধরনের জাদুকরী সব উপকার। প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি পা ফাটা
সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রেও আপনারা আপনাদের পায়ের গোড়ালিতে বা ফাটা অংশে কলা চটকে
লাগাতে পারেন, তাহলে পা ফাটা দূর হয়ে যাবে।
কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম বিদ্যমান রয়েছে, যা চোখের নিচের ফোলা ভাব দূর
করতেও দারুন সহায়ক। তার জন্য আপনারা নিয়মিত কলা টুকরো করে চটকে চোখের নিচে অংশে
লাগাতে পারেন। ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা যেমন একনি, ব্রণ, ত্বকের কালো দাগ, ছো,
দূর করতে আক্রান্ত স্থানে নিয়মিত কলার পিউরি লাগাতে পারেন। কলাতে প্রচুর পরিমাণে
প্রাকৃতিক তেল, পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন বিদ্যমান রয়েছে, যা চুলের
জন্য খুবই উপকারী।
প্রিয় পাঠক আপনারা যদি নিয়মিত চুলে কলা ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে আপনাদের চুল
হবে মজবুত ও ঝলমলে। একটি পাকা কলা ভালোভাবে,চটকে বা ব্লেন্ড করে পিউরি করে নিবেন,
এরপর তার মধ্যে অল্প পরিমাণ আমান্ড ওয়েল মিশিয়ে ১৫ মিনিট চুলে লাগিয়ে রাখবেন।
এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে সমস্ত চুল ধুয়ে ফেলবেন। এছাড়াও কলাতে ট্রিপটোফেন নামক
এক ধরনের প্রোটিন বিদ্যমান রয়েছে, যা শরীরে সেরোটোনিন নামক হরমোন তৈরিতে সহায়তা
করে যেমন মনকে শান্ত ও প্রফুল্ল রাখে।
প্রিয় পাঠক আপনারা যারা ডিপ্রেশনে ভুগছেন, আপনারা নিয়মিত কলা খেতে পারেন কলাতে
প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি বিদ্যমান রয়েছে। তাই আপনারা যদি নিয়মিত কলা খান,
আপনাদের পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকবে শরীরে মিলবে প্রচুর এনার্জি। এছাড়াও কলাতে
বিদ্যমান থাকা পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম ব্লাড প্রেসার কমাতেও
দারুন সহায়তা করে।
এছাড়াও পেক্টিন নামক ফাইবার কলাতে বিদ্যমান রয়েছে, যা কোলেস্টেরল কমিয়ে শরীর
সুস্থ রাখে। শরীরকে ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে কলায় বিদ্যমান থাকা
প্রবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া। তাইতো বিশেষজ্ঞরা বলেন নিয়মিত কলা খেলে শরীরের মিলবে
প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি ও উপকার এবং শরীর থাকবে সুস্থ সবল।
প্রিয় পাঠক আপনারা ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছেন কলাতে কি কি পুষ্টিগণ বিদ্যমান
রয়েছে, আপনারা কলা প্রতিদিন নিয়মিত খেলে কি কি উপকার পাবেন। তাই প্রত্যেক
মানুষেরই উচিত প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলা যুক্ত করা। আশা করি আপনারা কলার
মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন ধন্যবাদ।
কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি
সারা বিশ্বে খুবই কমন ও জনপ্রিয় একটি ফল হচ্ছে কলা। কলা খেতে যেমন খুবই
সুস্বাদু, ঠিক তেমনি এতে বিদ্যমান রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ উপাদান। কলা মূলত
ভিটামিন, মিনারেলস, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি ফল। কলা যে এত একটি
পুষ্টি গুনে ভরপুর ফল বা খাবার তা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। কলা যেহেতু খুব
সহজেই পাওয়া যায়, এটি যেহেতু খুবই কমন একটি খাবার, তাই জন্য আমাদের সকলেরই উচিত
কলার সকল উপকারিতা সম্পর্কে জেনে কলা খাওয়া।
তাহলে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকারিতা মিলবে। কলা যেমন পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি
খাবার, ঠিক তেমনি স্বাস্থ্যের জন্য দারুন উপকারি। প্রিয় পাঠক আপনারা যদি
প্রতিদিন নিয়মিত একটি করে কলা খান, সেক্ষেত্রে আপনাদের শরীরে মিলবে নানা ধরনের
স্বাস্থ্য উপকারিতা। কেননা কলাতে বিদ্যমান রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন,
মিনারেলস ও খনিজ পদার্থ এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত
উপকারী।
তাইতো অনেক চিকিৎসকরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। শরীরে শক্তির
ঘাটতি হলে নিয়মিত কলা খাওয়া উচিত, তাহলে শরীরে শক্তির ঘাটতি পূরণ হবে, শরীরে
মিলবে এনার্জি। কেননা কলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, ডায়েটারি
ফাইবার, আন্টি-অক্সিডেন্ট সহ আরও বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন বিদ্যমান রয়েছে। যা
শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখে। তাইতো কলাকে এনার্জির পাওয়ার হাউজ বলে
আখ্যায়িত করা হয়।
সাধারণত আপনারা কাঁচা কলা সবজি হিসাবেও খেতে পারেন, এতে করে চিনির পরিমাণ কম
থাকবে, ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকবে, আপনারা যারা ডায়াবেটিস রোগী রয়েছেন আপনারা
নিয়মিত কাঁচা কলা খেতে পারেন, এতে আপনাদের লিভার ভালো থাকবে। কেননা কাঁচা কলায়
প্রচুর পরিমাণে প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়া অনেক মানুষ
রয়েছে যারা পাকা কলা খেতে বেশি পছন্দ করে,
সকালের নাস্তায় একটি সহজলভ্য খাবার হিসাবে পাকা কলা রাখেন, পাকা কলা হজম দ্রুত
হতে সাহায্য করে। মূলত পাকা কলাতে প্রচুর পরিমাণে উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স
বিদ্যমান রয়েছে, যা দ্রুত হজমের সহায়তা করে। এছাড়াও পাকা কলাতে প্রচুর পরিমাণে
এন্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান রয়েছে। প্রিয় পাঠক তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক
আপনারা যদি প্রতিদিন নিয়মিত কলা খান, সেক্ষেত্রে আপনাদের শরীরে কি কি উপকারিতা
মিলবে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবেঃ কলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সহ আরো বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেলস, খনিজ বিদ্যমান রয়েছে। যা মূলত আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে দারুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রিয় পাঠক আমাদের সকলেরই উচিত প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলা যুক্ত করা।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়াও বিদ্যমান রয়েছে আরও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান, যা হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
- শরীরের শক্তি জোগাতে সহায়তা করেঃ প্রিয় পাঠক আপনি যদি আপনার শরীরকে অনেক দুর্বল অনুভূত করেন, সেক্ষেত্রে আপনি কলা খেতে পারেন দেখবেন আপনি এনার্জি ফিরে পেয়েছেন।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করেঃ কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম বিদ্যমান রয়েছে, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে দারুন কার্যকরী। প্রিয় পাঠক আপনারা যারা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন, আপনারা নিয়মিত প্রতিদিন কলা খেতে পারেন অথবা আপনারা আপনাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলা যুক্ত করতে পারেন, এতে করে আপনাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করেঃ কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, প্রাকৃতিক তেল, ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট বিদ্যমান রয়েছে, যা চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রিয় পাঠক আপনারা যদি নিয়মিত আপনাদের চুলে কলা ব্লেন্ড করে কয়েক চামচ আম্যান্ড অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে মাথায় চুলে ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে আপনার চুল হবে ঘন, উজ্জ্বল, সিল্কি, ঝলমলে, চুলের গোড়া শক্ত হবে, চুলের গ্রোথ বৃদ্ধি হবে ইত্যাদি। এছাড়াও আপনারা নিয়মিত কলা খেলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
- কিডনি ভালো রাখতে সহায়তা করেঃ প্রিয় পাঠক আপনারা যারা কিডনি জনিত সমস্যায় ভুগছেন আপনারা নিয়মিত কলা খেতে পারেন, সেক্ষেত্রে আপনাদের কিডনি জনিত সমস্যা গুলো দূর হবে পাশাপাশি আপনাদের কিডনি সুস্থ থাকবে।
- হজম শক্তির বৃদ্ধিতে সহায়তা করেঃ বর্তমান সময়ে অনেক মানুষেরই হজম জনিত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়। প্রিয় পাঠক আপনারা যারা হজম জনিত সমস্যায় রয়েছেন আপনারা নিয়মিত কলা খেতে পারেন, সেক্ষেত্রে আপনাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেঃ সাধারণত কলাতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান রয়েছে, যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বটে। প্রিয় পাঠক আপনারা যারা আপনাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে চান, আপনারা নিয়মিত কলা খেতে পারেন এতে করে আপনাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হবে পাশাপাশি ত্বক হবে উজ্জ্বল।
- ওজন কমাতে সহায়কঃ বর্তমান সময়ে বাজারে বিভিন্ন ধরনের বাইরের খাবার যেমন ফাস্টফুড খেয়ে অনেকেরই হঠাৎ করে ওজন বৃদ্ধি পেয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আপনারা আপনাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত কলা খেতে পারেন। কলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বিদ্যমান রয়েছে। এতে করে ক্ষুধা দূর হবে, অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে, ওজন বাড়ার কোনো রকম সম্ভাবনা থাকে না।
- মেজাজ ভালো রাখেঃ কলাতে প্রচুর পরিমাণে ট্রিপটোফেন নামক এক ধরনের উপাদান বিদ্যমান রয়েছে, যা সেরেটোনিন নামক হরমোন তৈরিতে সহায়তা করে। আর এই সেরোটোনিন নামক হরমোন বিভিন্ন ধরনের বিষন্নতা দূর, করে মেজাজ ভালো রাখতে, মনকে প্রফুল্ল রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও কলাতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম বিদ্যমান রয়েছে, যা মন ভালো রাখতে ও ভালো ঘুমের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
- রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ সাধারণত কলাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন বিদ্যমান রয়েছে। আর এই আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধিতে দারুন সহায়ক, যা রক্তস্বল্পতা দূরীভূত করতে সাহায্য করে। মূলত শরীরে রক্তের লোহিত রক্ত কণিকা গঠনে আয়রন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও কলাতে বিদ্যমান থাকা ভিটামিন বি৬ রক্তে গ্লুকোজের মেটাবলিজমের প্রক্রিয়ায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করেঃ সাধারণত কলাতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন বি৬ বিদ্যমান রয়েছে, যা মস্তিষ্কের সকল কার্যক্রম ভালো রাখতে সহায়তা করে পাশাপাশি স্মৃতিশক্তি উন্নত করে। তাই জন্য সকলেরই উচিত প্রতিদিন নিয়মিত কলা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। কেননা এটি অত্যন্ত উপকারী একটি ফল।
- মানসিক চাপ কমায়ঃ কলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬ ও পটাশিয়াম বিদ্যমান রয়েছে, যা মানসিক চাপ কমাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এটি মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়,মনকে প্রফুল্ল রাখে পাশাপাশি নার্ভের কার্যকারিতা আরো উন্নত করে।
- হাড়ের শক্তি বাড়ায়ঃ কলাতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম বিদ্যমান রয়েছে, যা হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রিয় পাঠক আপনারা যদি নিয়মিত কলা খান, তাহলে সেক্ষেত্রে আপনাদের হাড় মজবুত হবে পাশাপাশি অস্টিওপ্যারেসিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমবে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধ করবেঃ কলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান রয়েছে, যা শরীরের ফ্রি রেডিক্যাল দূর করবে, যা মূলত ক্যান্সার সৃষ্টির অন্যতম কারণ। বিশেষ করে কলাতে বিদ্যমান থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ও ভিটামিন সি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- ডায়রিয়ার জন্য উপযোগীঃ মূলত কলাতে এক ধরনের প্রতিরোধে স্টার্চ বিদ্যমান রয়েছে, যা মূলত পরিপাকের প্রক্রিয়াকে সবসময় সচল রাখে পাশাপাশি বৃহদন্ত্রে প্রবেশ করে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া গুলোকে খাদ্য রূপান্তরিত করে। তাইতো যখন মানুষের ডায়রিয়া হয় শরীর থেকে অপক্ষয়িতো খনিজ পদার্থ পূরণে কলা খাওয়ার মাধ্যমে তা আপনারা পূরণ করতে সক্ষম হবেন।
- ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করেঃ সাধারণত কলাতে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন বিদ্যমান রয়েছে যেমন ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬ সহ আরো বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যা শরীরে সুস্থ কোষ তৈরিতে সহায়তা করে এবং প্রয়োজনীয় হিমোগ্লোবিন, ইনসুলিন, অ্যামিনো এসিড গঠনেও সহায়ক। শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য প্রতিদিন সকলেরই কলা খাওয়া উচিত।
- পেটের প্রদাহ কমায়ঃ কলাতে বিদ্যমান থাকা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ উপাদান পেটের প্রদাহ এবং ব্যথা কমাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য যেসব রোগীরা হজমের সমস্যায় ভোগেন তাদেরকে চিকিৎসা করা কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেঃ সাধারণত কলার মোচায় লো গ্লাইসেমিক বিদ্যমান রয়েছে, যা ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। যেসব রোগীরা আপনারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, আপনারা নিয়মিত কলার মোচা খেতে পারেন। মূলত এটি হৃদরোগের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।
প্রিয় পাঠক উপরোক্তে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের উপকারার্থে
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
ভালোভাবে জানতেও বুঝতে পেরেছেন।
সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানে না। মূলত অনেকেই আমাদের কাছে জানতে
চাই সকালবেলা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। তাদের জন্যই আজকের এই আর্টিকেলটি
লেখা, সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিন্ন
ধরনের ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান রয়েছে। অন্যান্য
সময়ের তুলনায় কলা খেয়ে আপনি আপনার শরীরে যতটুকু না উপকার পাবেন,
তার থেকে বেশি উপকার পাবেন আপনি যদি সকালবেলা নিয়মিত কলা খান। শুধুমাত্র কলাই না
সকালবেলা যে কোন ফল খেলেই আপনি বেশি উপকার পাবেন। আর অবশ্যই মনে রাখবেন সকালবেলা
কলা কিংবা অন্যান্য ফল খাওয়ার আগে অবশ্যই হালকা করে নাস্তা করার পর ফল খাবেন।
প্রিয় পাঠক আপনি যদি একজন শারীরিক পরিশ্রম করা মানুষ হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে
আপনি প্রতিদিন নিয়মিত কলা খেতে পারেন, এতে করে আপনার শরীরে অনক এনার্জি
পাবেন।
ফলে আপনার কাজ করার শক্তি বৃদ্ধি হবে। এছাড়াও কলা পেট পরিষ্কার করতেও
দারুণ সহায়ক, দ্রুত হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও কলায় রয়েছে আরও বিভিন্ন ধরনের
উপকারিতা যদি আপনারা নিয়মিত সকালবেলা কলা খান, সেক্ষেত্রে আপনাদের শরীরে মিলবে
কলার সকল উপকারিতা। কলা খাওয়ার আগে সকালবেলা অবশ্যই সকালের নাস্তা করবেন।
কেননা কলাতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম বিদ্যমান রয়েছে, আপনি যদি সকাল বেলা
খালি পেটে একসঙ্গে কয়েকটি কলা খান, সেক্ষেত্রে পেট খারাপ, পেট ফাঁপা, পেটের
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই জন্য সকাল বেলা খাবার খাওয়ার পর কলা
খাবেন। তাহলে আপনার শরীরে মিলবে কলার অনেক উপকারিতা। কলাতে প্রচুর পরিমাণে
ফাইবার, ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম,
আয়রন,অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সহ আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে,
যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পাশাপাশি শরীরের শক্তি জোগাতে এবং
বেশি গঠনে কার্যকারী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রিয় পাঠক এছাড়াও আপনারা
যদি আপনার ওজন কমাতে চান বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, সেক্ষেত্রে সকালের নাস্তার
সাথে কলা খেতে পারেন। যেসব ব্যক্তিরা ওজন কমাতে চান,
আপনাদের জন্য কলা হচ্ছে একটি আদর্শ খাবার। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত
উপকারী একটি খাবার হচ্ছে কলা। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে কলা খাবেন, কেননা অতিরিক্ত
কোন কিছুই ভালো নই। নিয়মিত সকালবেলা কলা খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে, শরীরে
পানির চাহিদা পূরণ হবে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে, হজমের সমস্যা দূর হবে, স্মৃতিশক্তি
বৃদ্ধি পাবে, হাড়ের শক্তি বাড়বে, ক্যান্সার প্রতিরোধ হবে,
মানসিক চাপ দূর হবে, রক্তস্বল্পতা দূর হবে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে,
চুলের সমস্যা দূর হবে, ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হবে ইত্যাদি। তাই জন্য
অনেক চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে সারাদিনের উপকারিতা পেতে চাইলে
সকালবেলা কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়াও এটাও বলে দেন যে সকালবেলা নাস্তা করার
পর কলা খেতে, তাহলে কলার সকল উপকারিতা শরীরে মিলবে।
এছাড়াও আপনারা চাইলে দিনের যেকোনো সময় কলা খেতে পারেন, কিন্তু অন্যান্য সময়ের
তুলনায় সকালবেলা কলা খাওয়ার উপকারিতা সবচেয়ে বেশি। প্রিয় পাঠক উপরে সকালবেলা
কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিতভাবে জানিয়েছি। আশা করি আপনারা
এখান থেকে সকালবেলা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতেও বুঝতে
পেরেছেন।
রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা
সাধারণত কলা খুবই পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি ফল। সাধারণত পুষ্টিবিদদের মতে, খুবই
স্বাস্থ্যকর একটি ফল হচ্ছে কলা। কলাতে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন,
মিনারেলস, খনিজ পদার্থ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সহ আরও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান
বিদ্যমান রয়েছে। সাধারণত কলা আমাদের ঘুমের গুণগত মান উন্নত করতে সহায়তা করে
পাশাপাশি শিথিলতা বাড়ায়। কেননা কলাতে প্রচুর পরিমাণে ট্রিপটোফেন এবং
ম্যাগনেসিয়াম বিদ্যমান রয়েছে।
তাই জন্য আপনারা যদি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কয়েকটি কলা খান, সেক্ষেত্রে
আপনাদের রাতের ঘুম খুবই ভালো হবে। তবে অবশ্যই মাথায় রাখবেন রাতে কখনোই অতিরিক্ত
পরিমাণে কলা খাবেন না, কেননা কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম
বিদ্যমান রয়েছে, যা পেশির টানের সমস্যা দূর করতে সহায়ক। প্রিয় পাঠক আপনি যদি
রাতে নিয়মিত একটি করে কলা খান, তাহলে আপনার শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা
নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
এছাড়াও কলাতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট বিদ্যমান রয়েছে, যা রাতে ঘুমাতে
যাওয়ার আগে খাওয়া উচিত নয়। তবে কলাতে যেহেতু প্রাকৃতিক শর্করা বিদ্যমান
রয়েছে, সেহেতু শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এছাড়াও যে সকল মানুষের সর্দি,
কাশি, ঠান্ডা, জ্বর, হজমে সমস্যা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে, তারা কখনোই রাতের
বেলা কলা খাবেন না। আর যাদের রাতের বেলা কলা খেলে কোন ধরনের সমস্যা হয় না, তারা
প্রতিদিন নিয়মিত এক থেকে দুইটি কলা খেতে পারেন, তাহলে অনেক উপকার পাবেন।
এছাড়াও যে সকল ব্যক্তির অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে তারা কখনোই রাতের বেলা কলা খাবেন
না। তাছাড়া আপনারা ব্যায়ামের পর সকালে বিকালে যে কোন সমস্যায় কলা খেতে পারেন
কোন সমস্যা নেই। এছাড়াও যে সকল মানুষ বাইরের ভাজাপোড়া খাবার খেয়ে পেটের অবস্থা
অনেক খারাপ,তারা প্রতিদিন নিয়মিত রাতে কলা খেতে পারেন, এতে করে আপনাদের পেট ভালো
থাকবে। প্রিয় পাঠক আশা করি আপনারারাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে
বিস্তারিত জানতে ও বুঝতে পেরেছেন।
পাকা কলা খাওয়ার পুষ্টিকর দিক
প্রিয় পাঠক তাহলে চলুন পাকা কলা খাওয়ার পুষ্টিকর দিক সম্পর্কেজেনে নেওয়া যাক।
মূলত কাঁচা কলা কেউ এমনি খাই না, সাধারণত পাকা কলা সবাই এমনি খাই। প্রিয় পাঠক
আপনারা ইতিমধ্যেই নিয়মিত কলা খেলে কি কি উপকার পাবেন, সেগুলো উল্লেখ করেছি।
সাধারণত কলার মধ্যে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে, সেহেতু
আপনারা ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন কলা খুবই স্বাস্থ্য উপকারী একটি খাবার।
সাধারণত একটি মাঝারি সাইজের কলাতে ক্যালরি ১০৫ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ২৭ গ্রাম,
চিনি ১৪ গ্রাম, ফাইবার ৩ গ্রাম, প্রোটিন ১ গ্রাম বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে
ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, কপার,
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রিয় পাঠক
আপনারা যদি নিয়মিত সকাল বেলা সকালের নাস্তা করার পর পাকা কলা খান, সেক্ষেত্রে
আপনার শরীর মিলবে পাকা কলার নানা উপকারিতা।
আপনার যদি কোন ধরনের হজমের সমস্যা থাকে সেগুলো দূর হয়ে যাবে। কেননা পাকা কলা
হচ্ছে হজমের সমস্যা দূর করার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী একটি সলিউশন। আর যদি আপনার
শরীরে হজের সমস্যা দূর হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা
গুলো আর থাকবে না। প্রিয় পাঠক এই সমস্যা গুলো থেকে আপনারা মুক্তি পেতে নিয়মিত
আপনাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলা যুক্ত করতে পারেন।
কেননা পাকা কলায় রয়েছে নানান ধরনের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা। এছাড়াও আপনারা যদি
নিয়মিত পাকা কলা খান, সেক্ষেত্রে আপনাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে,
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে, ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূরীভূত হবে, চুলের সমস্যা
দূর হবে ইত্যাদি। তাই জন্য আপনারা যারা অল্পতেই অসুস্থ হয়ে পারেন, আপনারা
নিয়মিত পাকা কলা খেতে পারেন, এতে করে আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
পাবে।
কলাতে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে, যা হৃদরোগের
ঝুঁকি কমাতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে, ওজন
নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও যারা অতিরিক্ত পরিমাণে ডায়াবেটিস রোগে
আক্রান্ত রয়েছেন, আপনারা নিয়মিত পাকা কলা খেতে পারেন, এতে করে আপনাদের
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করবে। প্রিয় পাঠক আশা করি আপনারা পাকা কলা
খাওয়ার পুষ্টিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন।
রাতে কলা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
সাধারণত রাতের বেলা কলা খেলে আমাদের শরীরে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু
এই সমস্যাগুলো আমাদের শরীরে কেন হচ্ছে সেগুলো আমরা অনেকেই জানিনা,আর এই না জানার
কারণে তাই জন্য এই সমস্যাগুলো প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরে দেখা দেয়। প্রিয় পাঠক
আপনার যদি রাতের বেলা কলা খাওয়ার অভ্যাস থাকে, সেক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই রাতে কলা
খাওয়ার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানা উচিত।
যদিও রাতের বেলা কলা খাওয়ার উপকারি দিকও রয়েছে, কিন্তু আবার বেশ কিছু ক্ষতিকর
দিক ও বিদ্যমান রয়েছে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি রাতের বেলা অতিরিক্ত পরিমাণে কলা
খান, সেক্ষেত্রে আপনার স্বাস্থ্যের উপকারের বদলে অপকার হবে। যেসব মানুষের ঠান্ডা,
জ্বর, সর্দি, পেটের সমস্যা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, অ্যাজমার সমস্যা থেকে থাকে,
তাহলে আপনারা কখনোই রাতের বেলা কলা খাবেন না।
কেননা এই সকল রোগীদের জন্য রাতের বেলা কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত
ক্ষতিকর। তবে যাদের রাতের বেলা কলা খেলে কোনরকম সমস্যা হয় না, তারা প্রতিদিন
নিয়মিত একটি করে কলা খেতে পারেন। এতে করে ক্ষতির হওয়া সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু
আপনারা যদি প্রতিদিন রাতে অতিরিক্ত পরিমাণে কলা খান, সেক্ষেত্রে আপনার হজমে
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও যাদের একটুতেই ঠান্ডা লেগে যায়,
জ্বর হয়, গলা ব্যথা হয়, পেটের সমস্যা হয়, তারা কলা খাবেন না।
আপনার যদি এই সমস্যাগুলো থেকে থাকে, তাহলে আপনি যদি রাতের বেলা কলা খান,
সেক্ষেত্রে আপনার সমস্যাগুলো আরো বেড়ে যাবে। আর যারা অতিরিক্ত পরিমাণে কলা খান,
তাদের এই সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নই। শুধু কলা
নয়, সকল ফল বা খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত। প্রিয় পাঠক আশা করি রাতে
কলা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
কলা খাওয়ার অপকারিতা ১০টি
প্রিয় পাঠক এখন আপনাদের সাথে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
করব। সাধারণত কলা খুবই কমন ও পুষ্টিগুণে ভরপুর জনপ্রিয় একটি খাবার বা ফল। আমাদের
যদি হঠাৎ করে ক্ষুধা লাগে তাহলে ক্ষুধা নিবারনের জন্য যে সকল খাবার গুলো খায়
সেগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম খাবার হচ্ছে কলা। সাধারণত কলা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য
অত্যন্ত উপকারী, কিন্তু এর কিছু অপকারিতাও বিদ্যমান রয়েছে।
সাধারণত যে সকল মানুষের রাতে ঘুমের সমস্যা রয়েছে, তারা মূলত রাতের বেলা কলা
খাওয়া থেকে দূরে থাকবেন,না হলে অনিদ্রার সমস্যা দেখা দিবে। এছাড়াও দিনের বেলা
কখনোই অতিরিক্ত পরিমাণে কলা খাবেন না। প্রিয় পাঠক আপনি যদি চিন্তা করেন আপনি ওজন
নিয়ন্ত্রণ করবেন, সেক্ষেত্রে আপনি অতিরিক্ত কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কেননা
আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে কলা খান, সেক্ষেত্রে আপনার ওজন কমার বদলে ওজন বৃদ্ধি
পাবে।
এছাড়া যে সকল রোগীরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা কলা খাওয়া থেকে দূরে থাকবেন।
কেননা কলাতে প্রচুর পরিমাণে ন্যাচারাল সুগার ও কার্বোহাইড্রেট বিদ্যমান রয়েছে।
কার্বোহাইড্রেট ও ন্যাচারাল সুগার বিদ্যমানের ফলে যে সকল মানুষের দাঁতের সমস্যা
রয়েছে পাশাপাশি ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের সেই সমস্যাগুলো আরো বেড়ে যেতে
পারে। তাই জন্য যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত পাশাপাশি দাঁতের সমস্যায় ভুগছেন
আপনারা অতিরিক্ত কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
আর যদি খেতে অনেক মন চায়, সেক্ষেত্রে অল্প পরিমাণে খেতে পারেন। এছাড়াও যে সকল
মানুষের ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে আপনারা রাতের বেলা কখনই কলা খাবেন না।
আপনারা যদি রাতের বেলা কলা খান, সেক্ষেত্রে আপনাদের ঠান্ডা আরো বেড়ে যাবে।
অ্যাজমার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও যে সকল মানুষজন অতিরিক্ত কলা খেতে
ভালোবাসেন আপনারা অতিরিক্ত কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, নাহলে ঠান্ডা জনিত
সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন।
এছাড়াও যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, আপনারা কখনো অতিরিক্ত পরিমাণে কলা খাবেন
না, নাহলে আপনাদের ওজন বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এছাড়া ও কিছু কিছু
মানুষের কলায় এলার্জি রয়েছে, যা মূলত চর্মরোগ বা পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
সৃষ্টি করতে পারে, তারা কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
এছাড়াও যে সকল মানুষ অতিরিক্ত পরিমাণে কলা খায় তাদের কিডনি জনিত সমস্যা দেখা
দিতে পারে। অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নই, তবে কলা যেহেতু সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে
সহায়তা করে পাশাপাশি শরীরকে সতেজ রাখতে খুবই সহায়ক, সেজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে
কলা খাওয়া সকলেরই উচিত।
দুধ কলা খাওয়ার উপকারিতা
দুধ যেমন বিভিন্ন পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি খাবার বা ফল, ঠিক তেমনি কলা ও পুষ্টি
গুণে ভরপুর একটি খাবার। প্রিয় পাঠক আপনাদের মন চাইলে অল্প পরিমাণে দুধ কলা
একসাথেও খেতে পারেন আবার দুধ আগে কলা পড়ে এভাবেও খেতে পারেন। কেননা
সুস্বাস্থ্যের জন্য দুধ ও কলা অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু দুধ কলা একসঙ্গে খাওয়া
নিয়ে অনেকেরই অনেক রকম মতামত রয়েছে। আবার অনেক বিশেষজ্ঞ মতে দুধ কলার সংমিশ্রণ
উত্তম খাবার নয়। কেননা দুধ ও কলায় বিদ্যমান রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন উপাদান।
দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, প্রোটিন,বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন,
ভিটামিন বি-১২ ইত্যাদি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। তবে দুধে ফাইবার ও ভিটামিন সি
থাকে না, কার্বোহাইড্রেট খুবই সামান্য পরিমাণে থাকে। মূলত দুধ হচ্ছে নিরামিষ
ভোজীদের জন্য প্রোটিনের দারুন একটি উৎস। অন্যদিকে কলা হচ্ছে শরীরের জন্য অত্যন্ত
উপকারী একটি ফল, যা খুবই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। কলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বিদ্যমান
রয়েছে,
এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন বি৬, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম,
ম্যাগনেসিয়াম, কপার, আয়রন, ভিটামিন সি, ডায়েটারি ফাইবার, প্রবায়োটিনের মতো সকল
পুষ্টি উপাদান। প্রতি ১০০ গ্রাম কলায় ৮৯ গ্রাম ক্যালরি বিদ্যমান থাকে। আপনারা
যদি নিয়মিত কলা খান, সেক্ষেত্রে আপনাদের পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকবে, হারিয়ে যাওয়া
এনার্জি ফিরে পাবেন। কলা আপনারা যেকোনো সময় খেতে পারেন।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে কলা ও দুধ আলাদা আলাদা ভাবে খেলে যথাযথ পুষ্টি পাওয়া যাবে।
তাই জন্য প্রিয় পাঠক আপনারা দুধ খাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পর কলা খেতে পারেন। প্রিয়
পাঠক আপনারা যদি প্রতিদিন নিয়মিত দুধ ও খেলা খান, সেক্ষেত্রে আপনার ত্বক হবে
মসৃণ পাশাপাশি আপনার শরীরের পর্যাপ্ত ক্যালরির চাহিদা পূরণ হবে। কলা যেমন ত্বক
মসৃণ করে, ঠিক তেমনি ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ ছোপ ব্রণের চিহ্ন এবং দাঁত সাদা
করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সাধারণত বাচ্চা থেকে বড় সকলেই দুধ কলা একসাথে খেতে অনেক পছন্দ করে। আর এটি
খাওয়ার ফলে শরীরে নানা ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। যে সকল ব্যক্তিদের
কোষ্ঠকাঠিন্য, হজমে সমস্যা, এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন হার্টের সমস্যা,
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তারা প্রতিদিন দুধ ও কলা নিয়মিত খেতে পারেন এতে
করে আপনার শরীরে মিলবে নানা উপকারিতা। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখবেন দুধ ও কলা
পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি খাবার,
সেহেতু রাতের বেলা দুধ কলা খেলে, তাহলে আপনাদের পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা
দিতে পারে। তাই জন্য দিনের বেলা দুধ কলা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। আর যদি রাতের বেলা
দুধ কলা খান, সেক্ষেত্রে অল্প পরিমাণে খাবেন, অতিরিক্ত খাবেন না। নাহলে নানা
ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। সাধারণত শরীরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি চাহিদা পূরণ এবং
ওজন বৃদ্ধির জন্য পুষ্টিবিদরা দুধ ও কলা একসাথে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে
থাকেন।
তবে দুধ কলা যেহেতু খুবই পুষ্টিগুনে ভরপুর খাবার সেহেতু দুধ কলা একসঙ্গে না
খাওয়াই ভালো। দুধ খাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পর কলা খাবেন। দুধে যেমন আলাদা আলাদা
ভিটামিন, খনিজ, মিনারেলস বিদ্যমান রয়েছে, সেহেতু কলাতেও আলাদা আলাদা কিছু
ভিটামিন, মিনারেলস, খনিজ পদার্থ বিদ্যমান রয়েছে। প্রিয় পাঠক আশা করি দুধ ও কলা
খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন।
লেখকের ইতি কথাঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও কলা খাওয়ার অপকারিতা ১০টি
সম্মানিত পাঠক আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও কলা
খাওয়ার অপকারিতা ১০টি সেই সম্পর্কে পুরোপুরি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। উপরে
উল্লেখিত বিষয়গুলো ভালোভাবে পড়ে নিলে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং
পুষ্টিগুণ, কলা কেন খাওয়া উচিত? কলাতে কি কি ভিটামিন আছে? সে সম্পর্কে খুব সহজেই
জানতে পারবেন। কলা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গ কে বিশেষভাবে দেখভাল করে সুস্থ ও
ফিট রাখার মহা ঔষধ বা প্রধান খাবার এবং চালিকা শক্তি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা
পালন করে।
নিয়মিত সাধ্যমত কলা খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগ-বালা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কিন্তু অনেকেই কলার ভিতরে থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও প্রোটিন এই গুনাগুন গুলো
সম্পর্কে জানেনা। তাই অনেকেই কলা তেমন খায় না। এজন্য তারা বিভিন্ন ধরনের রোগে
আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তাই আপনি যদি সব ধরনের রোগ-বালা থেকে মুক্ত থাকতে চান এবং
আপনার শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে চান তাহলে অবশ্যই কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও
কলা খাওয়ার অপকারিতা ১০টি এই আর্টিকেলটি পড়া আবশ্যক।
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগের সাথে
পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এই ধরনের তথ্যবহুল
আর্টিকেল নিয়মিত পোস্ট করে থাকি। তাই আপনি যদি এ ধরনের আরও তথ্যবহুল উপকারী
পোষ্ট করতে চান, তাহলে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন। সাথে সাথে এই আর্টিকেলটি
পড়ে ভালো লাগলে আপনার নিকট আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজনদের কাছে তাদের
উপকারার্থে শেয়ার করে দিন।
যেন তারা কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও কলা খাওয়ার অপকারিতা ১০টি এ বিষয়
সম্পর্কে পুরোপুরি ভালোভাবে জেনে নিতে পারে। কলা খাওয়ার উপকারিতা ২০টি ও কলা
খাওয়ার অপকারিতা ১০টি এ বিষয়টি নিয়ে আপনার যদি কোন গুরুত্বপূর্ণ মতামত বা
প্রশ্ন থাকে, তাহলে অবশ্যই নিচে দেওয়া মতামত বক্সে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আবার
আপনাদের সাথে কথা হবে নতুন কোন আর্টিকেল নিয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ ও সুস্থ
থাকুন।
কনফিডেন্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url