৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি?

আপনি কি খুব দ্রুত সময়ে অধিক লাভবান হওয়ার ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনার চিন্তার কোন কারণ নেই।কারণ আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটির মূল আলোচনায় হচ্ছে ৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি? সেই সম্পর্কে। আর এটি খুব অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়ার একটি অন্যতম ব্যবসা। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যবহুল ও কার্যকরী আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক!
৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি?
আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে ৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি? সম্পর্কে এমন কিছু ইউনিক ও কার্যকরী তথ্য সম্পর্কে জানাবো যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই অল্প সময়ে অধিক লাভবান হতে পারবেন। অনেকেই হয়তো জানেন না যে, হাঁস পালন ব্যবসাটি অল্প সময়ে কতটা লাভজনক ব্যবসা। তাই আপনি যদি ব্রয়লার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য গুলো জানতে চান, তাহলে ৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি? এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্যই। এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আশা করি আলোচ্য বিষয়ে বিস্তারিতভাবে নির্ভুল সব তথ্যগুলো জানতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ!
পেজ সূচিপত্রঃ
.

ভুমিকা

বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষই খুব অল্প সময়ে সচ্ছল বা স্বাবলম্বী হতে চাই। এই জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের কাজ করে এবং বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। কিন্তু কার্যকরী কিছু উপায় ও পদ্ধতি না জানার কারণে অনেকেই সফল বা লাভবান হতে পারে না। তাই আজকের আলোচ্য আর্টিকেলটির আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি? সেই সম্পর্কে। 
আপনি যদি ৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি? বিষয়টি সম্পূর্ণ ভালোভাবে জেনে নেন, তাহলে আপনি খুব অল্প সময়ে অধিক লাভবান হতে পারবেন। হাঁস পালন পদ্ধতি সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা থাকলে খুব সহজেই নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। অনেকেই অনেক ভাবে জানার চেষ্টা করে থাকে, 

কিন্তু আপনি যদি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে ৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি? এই সম্পর্কে তথ্যবহুল সব আলোচনা বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। এছাড়াও হাঁস পালনের পদ্ধতি কয়টি? উন্নত জাতের হাঁসের নাম, হাঁসের বাচ্চা প্রাপ্তিস্থান, হাঁসের বাচ্চা নিয়ে এসে কয়েকদিন যেভাবে রাখবেন, হাঁসের ঘরের ব্যবস্থাপনা, 

হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বিভিন্ন বয়সের হাঁসের খাদ্য তৈরির তালিকা, হাঁসের রোগ প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি, হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, হাঁস পালনের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি কোনটি? সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি? বেইজিং হাঁস পালনের সুবিধা, বেইজিং হাঁসের রোগ বালাই, বেইজিং হাঁস পালনে লাভ-ক্ষতির হিসাব, বাংলাদেশে হাঁস পালন লাভজনক কেন? 

কোন জাতের হাঁস সবচেয়ে বেশি ডিম পাড়ে? মাংসের জন্য কোন হাঁস পালন করা সবচেয়ে ভালো হয়? এই বিষয়গুলো সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারবেন। আপনি যদি ৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি? এই সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই কার্যকরী।

হাঁস পালনের পদ্ধতি কয়টি?

৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি?
নদী-নালা, হাওর-বাওর, খাল-বিল, পুকুর, ডোবা, জলাশয় সমৃদ্ধ হচ্ছে আমাদের এই বাংলাদেশ। মূলত দেশের ভৌগোলিক অবস্থান মাথায় রেখে নিম্নাঞ্চলে যেই সকল এলাকায় নদী-নালা, হাওর-বাওর, খাল-বিল, পুকুর, ডোবা, জলাশয় ইত্যাদি রয়েছে, সেই সকল এলাকায় মানুষ খুবই অল্প পুজিতে হাঁস পালন করে জীবিকা নির্বাহ করতে সক্ষম হবেন। বর্তমান সময়ে অনেক মানুষ নিম্নাঞ্চল গুলোতে হাঁস পালন করে খুবই ভালো পরিমাণে প্রতি মাসে ইনকাম করছেন। 
তাই জন্য অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য হাঁস পালনকে বেছে নিচ্ছেন। মূলত আমাদের দেশে বাণিজ্যিক ভাবে তেমন হাঁসের খামার না থাকলেও, গ্রামের কৃষকরা এই পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করে খুবই ভালো হাঁস পালন করছেন এবং সেখান থেকে খুবই ভালো লাভবানও হচ্ছেন। হাঁস পালনের ৫টি পদ্ধতি নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • (১) উন্মুক্ত পদ্ধতি।
  • (২) হার্ডিং পদ্ধতি।
  • (৩) লেন্টিং পদ্ধতি।
  • (৪) আবদ্ধ পদ্ধতি।
  • (৫) অর্ধ-আবদ্ধ পদ্ধতি।
প্রিয় পাঠক উপরোক্তে উল্লেখিত হাঁস পালনের পদ্ধতিগুলো আপনাদের সুবিধার্থে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আশা করি আপনারা এখান থেকে উপকৃত হবেন।

উন্নত জাতের হাঁসের নাম

বর্তমান সময়ে মূলত সারা বিশ্বে হাঁস পালনকারীরা তিন ধরনের হাঁস পালন করে থাকেন। সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো হলো
  • (১) প্রথম জাতটি হচ্ছে ডিম উৎপাদনের জন্য।
  • (২) দ্বিতীয় জাতটি হচ্ছে মাংস উৎপাদনের জন্য।
  • (৩) তৃতীয় জাতটি হচ্ছে মাংস ও ডিম উৎপাদনের জন্য।
  • ডিম উৎপাদনের জন্য হাঁস পালনঃ হাঁস পালনকারীরা বেশি ডিম উৎপাদনের জন্য যে হাঁস গুলো পালন করে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো ইন্ডিয়ান রানার হাঁস, তারপর জিনডিং জাতের হাঁস, সাদা সাদা পাঁশুটে পিগে দাগ কাটা হাঁস ইত্যাদি। কিন্তু ডিম উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে ভালো জাতের হাঁস হচ্ছে জিনডিং জাতের হাঁস। কেননা জিনডিং জাতের হাঁস সারা বছরই ডিম দিয়ে থাকে।
  • মাংস উৎপাদনের জন্য হাঁস পালনঃ হাঁস পালনকারীরা বেশি মাংস উৎপাদনের জন্য যে হাঁস গুলো পালন করে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো সুইডেন হাঁস, পিকিং আয়েলেশবারি, মাশকোভি ইত্যাদি। এখানে উল্লেখিত হাঁস গুলো মাংস উৎপাদনের জন্য খুবই ভালো। প্রাপ্তবয়স্ক একটি মোদ্দা হাঁসের ওজন প্রায় ৫ কেজি মতো হয় এবং প্রাপ্তবয়স্ক একটি মাদ্দি হাঁসের ওজন ৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • মাংস ও ডিম উৎপাদনের জন্য হাঁস পালনঃ খাকি ক্যাম্বেল হাঁস হচ্ছে মাংস ও ডিম উৎপাদনের জন্য খুবই বিখ্যাত। সংকর জাতের হাঁস গুলো বিভিন্ন রংয়ের হয়ে থাকে যেমন বাদামি, ছাই, খাকি কালার ইত্যাদি। তাই জন্য এই হাঁস গুলোকে খাকি ক্যাম্বেল বলে আখ্যায়িত করা হয়। মিসেস ক্যাম্বল হাঁস রানার ও রুয়েল ক্যায়ুগা জাতের সংকরায়নের মাধ্যমে জাত সৃষ্টি করে থাকেন।

হাঁসের বাচ্চা প্রাপ্তিস্থান

  • হাঁস প্রজনন কেন্দ্র হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ।
  • হাঁস প্রজনন খামার হচ্ছে নওগাঁ জেলার আঞ্চলিক।
  • কেন্দ্রীয় হাঁস প্রজনন খামার হচ্ছে খুলনার দৌলতপুরে।
উপরে উল্লেখিত স্থান গুলো ছাড়াও আপনারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাঁসের খামার থেকে হাঁস মুরগি সংগ্রহ করতে সক্ষম হবেন।

হাঁসের বাচ্চা নিয়ে এসে কয়েকদিন যেভাবে রাখবেন

হাঁসের বাচ্চা পালন করার জন্য কয়েকটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। গরমকালে হাঁসের বাচ্চাকে ২১ দিন এবং শীতকালে হাঁসের বাচ্চাকে ২৮ দিন ব্রুডার ঘরে রাখতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় বাচ্চাকে ৪-৬ সপ্তাহ পর্যন্ত কৃত্রিম উপায়ে ঘরে যেন তাপ সরবরাহ হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মূলত ব্রুডার ঘর দক্ষিণমুখী হয়। এতে করে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো ও বাতাস থেকে ঘরকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়। এছাড়াও আপনারা কাপড় কিংবা চটের পর্দা লাগিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

হাঁসের ঘরের ব্যবস্থাপনা

হাঁসের ঘর তৈরি করার জন্য অবশ্যই আপনাকে আগে যে বিষয়গুলো লক্ষ্য করতে হবে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে হাঁসের ঘরে যেন আলো-বাতাস সরবরাহ হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। দুই বর্গফুট করে প্রতি প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসের জন্য জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। উঠতি হাঁসের জন্য এক বর্গফুট জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। হাঁসের ঘর এমন জায়গায় স্থাপন করবেন, যেখানে পুকুর রয়েছে এবং শিয়াল কিংবা বন-বিড়ালের হাত থেকে রক্ষা করা যায়। 
হাঁসের ডিম যেন গড়িয়ে পড়তে না পারে এবং হাঁস যেন আরামে থাকতে পারে, সেজন্য মেঝেতে তেতুল কাঠের গুড়া বিছিয়ে দিতে হবে। এছাড়াও আপনাদের বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে যেন হাঁসের ঘরের ঘর যেন ভিজে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রতিদিন খর গুলো উলটপালট করে দিতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে হাঁসের ঘর যেন সব সময় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়। এতে করে হাঁসের শরীরও মন যেমন ভালো থাকবে, ঠিক তেমনি ডিম ও মাংস উৎপাদন বেশি হবে।

হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা

হাঁস পালনে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে হাঁস তাদের নিজের খাবার নিজেরাই খাল-বিল, পুকুর, নদী-নালা থেকে সংগ্রহ করে নেয়। হাঁসের খাবার মূলত কিছুটা মুরগির কায়দায়, কিন্তু হাঁসের খাবার মুরগির চাইতে সম্পূর্ণই আলাদা। আপনারা যদি হাঁসকে মুরগির খাবার খাওয়ান, তাহলে হাঁসের স্বাভাবিক উৎপাদন হবে না। বেশি ডিম ও মাংস উৎপাদনের জন্য হাঁসকে প্রতিদিন নিয়মিত সুষম খাদ্য প্রদান করতে হবে।

আপনারা হাঁসকে যেই সকল খাবার দিতে পারেন ঘরোয়া খাবার সেগুলো হলো শামুক, ঝিনুক, মাছের ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট অংশ, চালের গুড়া, কুশি ইত্যাদি। তবে আপনারা একটা কথায় অবশ্যই মাথায় রাখবেন যে হাঁস বেশি পরিমাণে খাবার গ্রহণ করে। তাই হাঁসকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার প্রদান করতে হবে। আপনারা যদি বেশি ডিম উৎপাদন এবং বেশি মাংস উৎপাদন করে লাভবান হতে চান,

সেক্ষেত্রে হাঁসের সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে হবে পাশাপাশি হাঁসের খাবারের দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য দিতে হবে। তাহলেই আপনারা বেশি পরিমাণে ডিম ও মাংস উৎপাদন করতে পারবেন এবং এখান থেকে খুবই ভালো পরিমাণে লাভবান হতে পারবেন। এছাড়াও আরেকটি বিষয় মনে রাখবেন হাঁসকে কখনো শুকনো খাবার প্রদান করবেন না। কেননা হাঁস যতটুকু খাবার খায়, তার চেয়ে অধিক পরিমাণে পানি খায়। আর তাই জন্য একটি প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসকে প্রতিদিন দুই বেলা খাবার দেওয়ার চেষ্টা করবেন। আর যেই খাবারই দেন না কেন সাথে বেশি পরিমাণে পানি মিশিয়ে হাঁসকে খেতে দিবেন।

বিভিন্ন বয়সের হাঁসের খাদ্য তৈরির তালিকা

ক্রমিক নং বিভিন্ন বয়সের হাঁসের খাদ্য তৈরীর উপাদান হাঁসের বাচ্চার বয়স ০-৬ সপ্তাহ বাড়ন্ত হাঁসের বয়স ৭-১৯ সপ্তাহ ডিম পাড়া হাঁস অথবা ২০ সপ্তাহের বেশি
০১ চালের কুঁড়া ১৮.০০ ১৭.০০ ১৭.০০
০২ ভুট্টা ভাঙ্গা ১৮.০০ ১৮.০০ ১৭.০০
০৩ গম ভাঙ্গা ৩৬.০০ ৩৬.০০ ৩৬.০০
০৪ সয়াবিন মিল ২২.০০ ২৩.০০ ২৩.০০
০৫ প্রোটিন কনসেন্ট্রট ২.০০ ২.০০ ২.০০
০৬ ঝিনুক চূর্ণ ২.০০ ২.০০ ৩.৫০
০৭ ভিটামিন ও খনিজের মিশ্রিণ ০.২৫ ০.২৫ ০.২৫
০৮ ডিসিপি ১.২৫ ১.২৫ ০.৭৫
০৯ মিথিওনিন ০.১০ ০.১০ ০.১০
১০ লাইসিন ০.১০ ০.১০ ০.১০
১১ লবন ০.৩০ ০.৩০ ০.৩০
১২ মোট উপাদান ১০০ কেজি ১০০ কেজি ১০০ কেজি
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ প্রতি ১০০ কেজি খাদ্য উপাদানের সাথে ৩৫ গ্রাম রোভিমিক্স বা ভিটাব্লেন্ড, ৫ গ্রাম নিয়াসিন এবং ৩৫ গ্রাম কোলিন ক্লোরাইড মিশিয়ে নিলে খাদ্যের মান খুবই ভালো হবে এবং বিভিন্ন বয়সের হাঁস দ্রুত বড় হবে ও সুস্থ থাকবে।

হাঁসের রোগ প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি

হাঁসকে প্রথম কলেরা টিকা ২১ দিন বয়সে দিতে হবে। তারপর পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় কলেরা টিকা ৩৬ দিন বয়সে দিতে হবে এবং তৃতীয় কলেরা টিকা ৭০ দিন বয়সে কলেরা টিকা প্রদান করতে হবে। যে হাঁস গুলো আগে থেকেই রোগাক্রান্ত হয়ে থাকবে সেগুলোকে মানে আক্রান্ত হাঁস গুলোকে টিকা প্রদান করা যাবে না। সব সময় সুস্থ হাঁসকে টিকা প্রদান করতে হবে। হাঁসকে রোগমুক্ত রাখার জন্য অবশ্যই নিয়মিত টিকা প্রদান করতে হবে, কেননা টিকা প্রদানের কোন বিকল্প নেই। আপনারা যখন হাঁসকে টিকা প্রদান করবেন, তখন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে টিকা প্রদান করবেন।

হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা

যদিও হাঁসের তেমন রোগবালাই হয় না। কিন্তু আপনারা যদি একটু সচেতন হয়ে হাঁসের সঠিকভাবে পরিচর্যা করেন, তাহলে খামারের রোগ বালাইয়ের সংখ্যা অনেকাংশেই কমে যাবে। তবে হাঁস পালনের ক্ষেত্রে অবশ্যই হাঁসকে ডাক প্লেগ ও ডাক কলেরা টিকা প্রদান করতে হবে। আপনি যদি হাঁস পালন করে ভালো পরিমাণে লাভবান হতে চান, তাহলে সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার খামার রোগমুক্ত রাখতে হবে।
আর এই জন্য কিছু টিকা রয়েছে সেগুলো সময় মতো হাঁসকে প্রদান করতে হবে। আপনি যদি একজন ভালো মানের আদর্শ খামারি হতে চান, তাহলে সেক্ষেত্রে হাঁসকে রোগ মুক্ত রাখার পাশাপাশি হাঁসের খামারে যেন আলো-বাতাস প্রবেশ করতে না পারে, সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়াও হাঁসকে নিরাপদ পানি দিতে হবে। হাঁসের খাবারের পাত্র সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। 

খামারের ভিতরে কোন হাঁস যদি অসুস্থ হয়ে যায়, তাহলে সেক্ষেত্রে সেই হাঁসকে আলাদা করে দিতে হবে। প্রতিদিন নিয়মিত হাঁসকে সুষম খাবার প্রদান করতে হবে। আপনি যদি এই কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারেন, তাহলে আপনার খামার রোগমুক্ত থাকবে। এতে করে আপনি হাঁস পালন করে লাভবান হতে পারবেন।

হাঁস পালনের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি কোনটি?

বর্তমানে খালবিল বা হাওরে হাঁস পালন সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। অনেক মানুষ খালবিলে কিংবা জলাশয়ের ধারে তিরপাল টাঙিয়ে কিংবা হাঁস পালনের জন্য একটি জলাশয়ের পাশে ঘর তৈরি করে যেন অন্য কোন আক্রমণাত্মক পশু হাঁসকে আক্রমণ করতে না পারে সেইজন্য হাঁস পালনকারীরা এভাবে ব্যবস্থাপনা করে হাঁস পালন করছেন। প্রিয় পাঠক এই পদ্ধতি অবলম্বন করে হাঁস পালন করেন, তাহলে এভাবে হাঁস পালন করে অধিক লাভবান হতে পারবে। 

কেননা বিলে কিংবা হাওরে যদি হাঁস পালন করা যায়, সেক্ষেত্রে হাঁসের খাবার খুবই অল্প পরিমাণে প্রয়োজন হবে। কেননা হাঁস পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন ও পুষ্টি খালবিল থেকে বা হাওর থেকে পেয়ে থাকে। এছাড়াও তারা শারীরিক বৃদ্ধির জন্য খালবিলে বা হাওরে অনেক বড় জায়গা পায়। ফলে হাঁসের বৃদ্ধি দ্রুত হয় পাশাপাশি হাঁস দ্রুত ডিম দেওয়া শুরু করে। এতে করে হাঁস পালনকারীরা কম মূলধনে অধিক পরিমাণে লাভবান হয়। 

তাই হাঁস পালনের জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধতিটি হচ্ছে খালবিল বা হাওরে হাঁস পালন। এছাড়াও আপনারা যদি চান, তাহলে উন্মুক্ত পদ্ধতিতেও হাঁস পালন করতে পারেন। কেননা আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চল গুলোতে মূলত উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বেশি হাঁস পালন করা হয়। উন্মুক্ত পদ্ধতি হচ্ছে দিনের বেলায় হাঁস গুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং হাঁস গুলো তারা তাদের নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য গুলো নিজে নিজে সংগ্রহ করে খায়। 
আবার হাঁস গুলো যখন সন্ধ্যায় ঘরে ফিরবে তখন দৈনিক তাদের কিছু সুষম খাবার প্রদান করতে হবে। হাঁস গুলো যখন প্রতিদিন ঘরে ফিরে আসবে তখন তাদের খাবার খেতে দিতে হবে, তাহলে তারা খাবারের লোভে বাসস্থানে ফিরে আসবে। রাতের বেলা একটি নির্দিষ্ট স্থানে আবদ্ধ করে রাখে। উন্মুক্ত পদ্ধতিতেও আজকে খুবই অল্প পরিমাণে খাবার সরবরাহ করতে হয়, তেমন খাবারের প্রয়োজন হয়। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে পূর্ণবয়স্ক কিংবা বাড়ন্ত হাঁস পালন করা খুবই লাভজনক। 

উন্মুক্ত পদ্ধতিতে হাঁস পালন করলে খাদ্য খরচ খুবই অল্প পরিমাণে হয়। এছাড়াও বাসস্থানের জন্য খরচ খুবই অল্প পরিমাণে হয়। হাঁসের পিছনে কাউকে অধিক পরিমাণে সময় ব্যয় করতে হয় না। আর অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় উন্মুক্ত পদ্ধতিতে হাঁস পালন করা খুবই সুবিধাজনক। হাঁস নিজের ইচ্ছামতো মুক্ত আলো বাতাসে চলাচল করতে পারে। ফলে অন্যান্য পদ্ধতি তুলনায় এই পদ্ধতিতে হাঁসের বৃদ্ধি ও অধিক পরিমাণে হয়। তাইতো অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় খাল বিল কিংবা জলাশয় অথবা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে হাঁস পালন করা সবচেয়ে সহজ।

সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি?

অন্যান্য জাতের হাঁস পালন থেকে বেইজিং জাতের হাঁস পালন অধিক লাভজনক। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে বেইজিং জাতের হাঁসটি দারুন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কেননা বেইজিং জাতের হাঁসটি পালন করে অনেক খামারীরা বেশ লাভবান হচ্ছে তাই জন্য। সাধারণত দুইটি কারণে হাঁস পালন করা হয়, মংস উৎপাদনের জন্য এবং ডিম উৎপাদনের জন্য। আপনাকে প্রথমে বিবেচনা করতে হবে আপনি কি জন্য হাঁস পালন করতে চান, 

মাংস উৎপাদনের জন্য নাকি ডিম উৎপাদনের জন্য? মাংস উৎপাদনের জন্য যদি আপনি হাঁস পালন করতে চান, তাহলে বেইজিং জাতের হাঁস উৎপাদন করতে পারেন। এছাড়াও আপনি বেইজি হাঁস ছাড়াও বেলজিয়াম বা পেকিং হাঁসও পালন করতে পারেন। এই জাত গুলো বেশ ভালো। এ হাঁসগুলো যদি আপনারা তিন মাস সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলে এদের ওজন ৩-৫ কেজি পর্যন্ত হয়। 

আর আপনি যদি মাংস উৎপাদনের জন্য হাঁস পালন করতে চান, সেক্ষেত্রে সুইডেন, আয়লেশবারি, রুয়েল ক্যাগুয়া, মাসকভি ইত্যাদি হাঁস বেস জনপ্রিয় এগুলো পালন করতে পারেন। আপনারা যদি এই হাঁস গুলোর সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলে একটি পূর্ণবয়স্ক মোদ্দা হাঁসের ওজন ৬ কেজি পর্যন্ত হয়। আবার একটি পূর্ণবয়স্ক মাদ্দি হাঁসের ওজন ৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। 
এছাড়াও ডিম উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে ভালো জাত হচ্ছে ইন্ডিয়ার রানার এবং রুয়েল ক্যাগুয়া হাঁসের সংকরায়নের মাধ্যমে তৈরি করা খাকি ক্যাম্বেল জাতীয় হাঁস। এই জাতটি বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। আর এই হাঁসটি পালনের মাধ্যমে মানুষ অনেক লাভবান হয়। খাকি ক্যাম্বেল হাঁস যেমন ডিম উৎপাদন এই জনপ্রিয়, ঠিক তেমনি মাংস উৎপাদনে বেশ জনপ্রিয়।

বেইজিং হাঁস পালনের সুবিধা

  • বেইজিং হাঁস খুবই দ্রুত বড় হয়।
  • বেইজিং হাঁস ২-৩ বছর পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে।
  • বেইজিং হাঁসের বুকের মাংসের সাইজ অনেকটা বড় হয় ।
  • এছাড়াও বেইজিং হাঁস অন্যান্য হাঁসের সাথে পালন করা যায়।
  • বেইজিং হাঁসের ডিম ও মাংস বেশ সুস্বাদু হয়। আবার ডিম আকারে বড় হয়।
  • বেজি হাত যেমন দ্রুত বড় হয় ঠিক তেমনি তিন মাসের মধ্যে ডিম দেওয়া শুরু করে।
  • আবার বেইজিং হাঁসের যখন ডিম উৎপাদন অনেকাংশে কমে যাবে তখন মাংস হিসাবে বাজারে বিক্রয় করা যাবে।

বেইজিং হাঁসের রোগ বালাই

বেইজিং হাঁসের মূলত ডাক প্লেগ ও ডাক কলেরা রোগ হয়। আর এই জন্য বেইজিং হাঁসের বয়স যখন ২৫ দিন হবে তখন ও যখন ৪০ দিন বয়স হবে তখন ডাক প্লেগ ভ্যাকসিন বা টিকা প্রদান করতে হবে এবং যখন বেইজিং হাঁসের বয়স ৭০ দিন হবে ও যখন ৯০ দিন বয়স হবে তখন কলেরা রোগের ভ্যাকসিন বা টিকা প্রদান করতে হবে। বেইজিং হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিকভাবে কিছু অ্যান্টিবায়োটিক এবং ভিটামিন বি জাতীয় ঔষধ সেবন করাতে হবে। তাহলে বেইজিং হাঁসের মৃত্যুহার অনেকাংশেই কমে যাবে।

বেইজিং হাঁস পালনে লাভ-ক্ষতির হিসাব

বেইজিং হাঁস মূলত খামারিরা ৭০-৮০ দিন পর্যন্ত পালন করে থাকে। বেইজিং হাঁস যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়, তখন তাদের মাংসের জন্য বাজারে বিক্রি করা হয়। বেইজিং হাঁস পালনে লাভ ক্ষতির হিসাব নিচে উল্লেখ করা হলো।
হাঁস পালনে ব্যয়ের খাত সমূহ হাঁস পালনে ব্যয়ের খরচ সমূহ
বাচ্চা ক্রয় বাবদঃ ১০০ টি হাঁসের বাচ্চা * ৭৫ টাকা দরে ৭৫০০ টাকা
খাদ্য বাবদ খরচঃ ৭০০ কেজি * ৪০ টাকা দরে ২৮,০০০ টাকা
টিকা, ডাক ও প্লেগ ভ্যাক্সিন বাবদ ১০০ টাকা
মেডিসিন ও ভিটামিন বাবদ ৪০০ টাকা
আরোও অন্যান্য খরচ বাবদ ২০০০ টাকা
মোট = ৩৮,০০০ টাকা
হাঁস বিক্রয়ঃ গড়ে ২.৫ কেজি ওজন*১০০ টি হাঁস * ২৮০ টাকা দরে ৭০,০০০ টাকা
যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে মোট লাভ থাকবে ৭০,০০০ – ৩৮,০০০ ৩২,০০০ টাকা

বাংলাদেশে হাঁস পালন লাভজনক কেন?

বাংলাদেশে হাঁস পালন খুবই লাভজনক। কেননা হাঁস পালনের জন্য খুবই কম জায়গার প্রয়োজন হয়। যেহেতু বাংলাদেশীরা খোলামেলা অথবা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে হাঁস পালন করে এই কারণেই খুবই অল্প পরিমাণে হাঁসকে খাবার দিতে হয়। এজন্য হাঁস পালনে খুবই অল্প পরিমাণে টাকা খরচ হয় এবং সেখান থেকে বেশি পরিমাণে আয় করা যায়। এজন্য বাংলাদেশে হাঁস পালন করা খুবই লাভজনক। একটি হাঁস বছরে ৩০০টি পর্যন্ত ডিম দেয়। মুরগির তুলনায় হাঁস অনেক বেশি ডিম দেয়। 
হাঁস খোলামেলা অথবা উন্মুক্ত অবস্থায় পালন করার ফলে হাঁস নিজের খাদ্য নিজেই সংগ্রহ করে খেতে পারে। এছাড়াও হাঁসের যত্ন, পরিচর্যা ও খাবার খরচ খুবই অল্প পরিমাণে লাগে। হাঁস উন্মুক্ত কিংবা খোলামেলা পদ্ধতিতে পালন করার কারণে হাঁসের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং ডিমও বেশ ভালো দেয় । আর এই সকল কারণ গুলোর জন্যই বাংলাদেশে হাঁস পালন করা খুবই লাভজনক। হাঁস পালনে খুবই অল্প টাকা ইনভেস্টে,বেশি পরিমাণে লাভবান হওয়া যায়।

কোন জাতের হাঁস সবচেয়ে বেশি ডিম পাড়ে?

কোন জাতের হাঁস সবচেয়ে বেশি ডিম পাড়ে?
সারা বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের হাঁসের জাত রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে হাতে গুনা কয়েকটি হাঁসের জাত বিদ্যমান। আর আমাদের দেশের হাঁসের জাত গুলির মধ্যে বেশিরভাগই সংকর জাতের হাঁস। কেননা আমাদের দেশে খোলামেলা কিংবা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বেশিরভাগ হাঁস পালন করা হয়। ফলে হাঁসের জাতের সঠিক বৈশিষ্ট্য ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। বর্তমান সময়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সঠিক হাঁসের জাত সংকরায়নের চেষ্টা ইতিমধ্যেই চলছে। 

মূলত আমাদের দেশে ডিম উৎপাদন করার জন্য যেমন হাঁস পালন করা হয়, ঠিক তেমনি মাংস উৎপাদন করার জন্য হাঁস পালন করা হয়। বাংলাদেশে ডিম উৎপাদনের জন্য খাকি ক্যাম্বেল খুবই পরিচিত। আর ডিম উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে ভালো জাত হচ্ছে জিনডিং হাঁস। জিনডিং হাঁস বছরে প্রায় ৩০০ টির মতো ডিম দিতে সক্ষম। এছাড়াও ইন্ডিয়ান রানার হাঁস ও খাকি ক্যাম্বেল ডিমের জন্য বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু বেজিং বা পেকিন হাঁস মাংস উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বেস্ট। 

এছাড়াও বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে মাসকভি হাঁসও ব্যাপক হারে জনপ্রিয়। জিনডিং হাঁস বছরে ডিম দেয় ২৫০-৩০০টি এবং জিনডিং হাঁসের ওজন হয় ১.৬-২. ২কেজি। এছাড়াও খাকি ক্যাম্বেল বছরে ডিম দেয় ২৫০-৩০০টি এবং খাঁকি ক্যাম্বেল হাঁসের ওজন হয় ১.৮- ২.৫কেজি। ইন্ডিয়ান রানার হাঁস বছরে ডিম দেয় ২৫০- ৩০০টি এবং ইন্ডিয়ান রানার হাঁসের ওজন হয় ১.৫- ২.৩কেজি। বেইজিং বা পেকিং হাঁস বছরে ডিম দেয় ১৫০টি বেইজিং বা পেকিং হাঁসের ওজন হয় ২.৫-৫ .০কেজি। 
মাসকভি বা চীনা হাঁস বছরে ডিম দেয় ১২০টি এবং মাসকভি বা চীনা হাঁসের ওজন হয় ৩-৮কেজি। দেশি ডিম+মাংস উভয় বছরে দেয় ৮-১২০টি এবং হাঁসের শারীরিক ওজন হয় ২-২.৫ কেজি। হাঁস পালনকারী সকল মানুষের মনে একটি প্রশ্ন জাগে কোন জাতের হাঁস সবচেয়ে বেশি ডিম দেয়? বেশি ডিম দেয় জিনডিং ও খাকি ক্যাম্বেল হাঁস। ডিমের প্রোডাকশন যদি ভালো হয়,সেক্ষেত্রে তাহলে এরা ৮৫%-৯০% পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। এছাড়াও ইন্ডিয়ান রানার হাঁস বেশ ভালো ডিম দেয়।

মাংসের জন্য কোন হাঁস পালন করা সবচেয়ে ভালো হয়?

বাংলাদেশে মাংস উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে ভালো জাতের হাঁস হচ্ছে বেইজিং হাঁস। মাংস উৎপাদনের জন্য বেইজিং হাঁসের জনপ্রিয়তা ব্যাপক। বেইজিং হাঁস পেকিং বা বেলজিয়াম নামে সুপরিচিত। বেইজিং হাঁসের যদি সঠিকভাবে পরিচর্যা করা যায় ৩-৪ মাস পর্যন্ত, তাহলে সেক্ষেত্রে বেইজিং হাঁসের ওজন ৩-৫ কেজি পর্যন্ত শারীরিক ওজন হয়। এছাড়াও মাংস উৎপাদনের জন্য সুইডেন, আয়লেশবারি, রুয়েল ক্যাগুয়া, মাসকভি হাঁস দারুন জনপ্রিয়। আর এই সকল জাতের মোদ্দা হাঁসের ওজন ৬ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং মাদ্দি হাঁসের ওজন ৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

লেখকের ইতি কথাঃ ৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি?

সুপ্রিয় পাঠক, আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে ৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি? এই বিষয় সম্পর্কে পুরোপুরিভাবে জানতে পেরেছেন। এই আর্টিকেলটি পড়ার সাথে সাথে হাঁস পালন পদ্ধতি সম্পর্কে আরো ভালোভাবে ধারণা পেতে আপনার নিকটস্থ পশু অধিদপ্তর বা পশু বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জেনে নিলে অবশ্যই আপনি হাঁস পালন করে খুব অল্প সময়েই অধিক লাভবান হতে পারবেন। 

হাঁস পালনের পদ্ধতি গুলো সম্পূর্ণ জানার পরে হাঁস পালন করে আপনি কতটুকু লাভবান হবেন সেটা নিতান্তই আপনার নিরলস পরিশ্রম ও হাঁস পালনের পদ্ধতি গুলোর উপর নির্ভর করছে। এছাড়াও হাঁস পালন পদ্ধতি সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পেতে অথবা কোন সমস্যায় পড়লে অবশ্যই একজন ভালো পশু চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। তাহলে খুব অল্প সময়ে অধিক লাভবান হতে পারবেন। আর এভাবেই আপনি নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।

সম্মানিত পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটির সম্পূর্ণ মনোযোগের সাথে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এই ধরনের তথ্য বহুল ও কার্যকরী আর্টিকেল নিয়মিত পোস্ট করে থাকি। তাই আপনি যদি এ ধরনের আরও তথ্যবহুল ও উপকারী সব আর্টিকেল পড়তে চান তাহলে অবশ্যই এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন। সাথে সাথে এই আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে আপনার নিকট আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজনদের কাছে তাদের উপকারার্থে শেয়ার করে দিন। 

যেন তারা ৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি? সেই সম্পর্কে পুরোপুরি ভালোভাবে জেনে নিতে পারে। ৫টি উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি - সবচেয়ে লাভজনক হাঁসের জাত কোনটি? সম্পর্কে আপনার যদি কোন গুরুত্বপূর্ণ মতামত বা প্রশ্ন থাকে, তাহলে অবশ্যই নিচে দেয়া মতামত বক্সে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আবার আপনাদের সাথে কথা হবে নতুন কোন আর্টিকেল নিয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ ও সুস্থ থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কনফিডেন্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url