জাফরান এর উপকারিতা গুলো কি কি? - ত্বকের যত্নে জাফরান - রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার
আপনি কি আপনার সৌন্দর্যকে ধরে রাখতে চান এবং সাথে সাথে নানা ধরনের ঔষধি গুনাগুন ও
উপকারিতা পেতে চান? তাহলে আপনার চিন্তার কোন কারণ নেই। কারণ আজকে আমাদের এই
আর্টিকেলটির মূল আলোচনায় হচ্ছে জাফরান এর উপকারিতা গুলো কি কি? - ত্বকের যত্নে
জাফরান - রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার সেই সম্পর্কে। নিচে এ বিষয়ে বিস্তারিত
তথ্যবহুল ও কার্যকরী আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক!
আমরা অনেকেই হয়তো জাফরান কি বা জাফরানে কি ধরনের ঔষধি গুনাগুন ও উপকারিতা রয়েছে
সেই সম্পর্কে ভালোভাবে না জানার কারণে জাফরান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকি। তাই
আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটির মাধ্যমে জাফরান এর উপকারিতা গুলো কি কি? -
ত্বকের যত্নে জাফরান - রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার সম্পর্কে এমন কিছু ইউনিক ও
কার্য করে তথ্য সম্পর্কে জানাবো, যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই জাফরান এর
উপকারিতা গুলো কি কি? - ত্বকের যত্নে জাফরান - রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার
সম্পর্কে জেনে নিজের সৌন্দর্যকে ধরে রাখতে পারবেন। আপনি কি আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্য গুলো জানতে চান, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার
জন্যই। এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আশা করি আলোচ্য বিষয়ে
বিস্তারিতভাবে নির্ভুল সব তথ্য গুলো জানতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ!
পেজ সূচিপত্রঃ
.
ভুমিকা
মহান আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি প্রতিটি গাছ-গাছালিতেই নানান ধরনের গুনাগুন ও
উপকারিতা বিদ্যমান রয়েছে। তন্মধ্যে জাফরান হলো অন্যতম। এই জাফরানে নানা ধরনের
ঔষধি গুনাগুন রয়েছে। ফলে এটির সঠিক ব্যবহার জেনে নিয়মিত ব্যবহার করলে অনেক
উপকার পাওয়া যায়। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে
বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন জাফরান এর উপকারিতা গুলো কি কি? - ত্বকের যত্নে
জাফরান - রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার সম্পর্কে।
এছাড়াও জাফরানের পরিচিতি, জাফরান এর উপকারিতা গুলো কি কি? জাফরান এর অপকারিতা
কি? ত্বকের যত্নে জাফরান - রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার, জাফরান দুধের উপকারিতা,
জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম, জাফরান কফির উপকারিতা, জাফরান তেলের উপকারিতা, জাফরান
ক্রিমের উপকারিতা, জাফরানের দাম ২০২৪, গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার নিয়ম,
গর্ভাবস্থায় জাফরানের উপকারিতা,
জাফরান শিশুদের জন্য উপকারী এ বিষয়গুলো সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই
আপনি যদি জাফরান এর উপকারিতা গুলো কি কি? - ত্বকের যত্নে জাফরান - রূপচর্চায়
জাফরানের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই
কার্যকরী।
জাফরানের পরিচিতি
জাফরান বা যা বিশ্বের অন্যতম দামী প্রসাধনী সামগ্রী। আর এর একটি অভিজাত নাম
রয়েছে লাল সূর্যবর্ণ হওয়ার কারণে জাফরানকে লালসোনাও বলা হয়। আর বাংলায় এটি
কুমকুম নামে পরিচিত। আমাদের দেশে মূলত এটি রান্নায় ব্যবহার করা হয়। জর্দা নামের
মিষ্টান্ন ও পায়েস এবং বিরিয়ানির রং সুন্দর করতে জাফরানের ব্যবহার করা হয়। তবে
প্রাচীনকালে জাফরান গায়ে মাখা হতো,
শরীরের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য, জাফরানের গুনে ত্বক লাবণ্যময়ী হয়ে ওঠে। চলুন
জানা যাক রূপচর্চায় জাফরান কতটা উপকারী। জাফরানে বিদ্যমান রয়েছে
অ্যান্টি-মোটাজেনিক এবং অ্যান্টি-টুউসিভ এজেন্ট যা টক্সিক এজেন্ট সরিয়ে
স্পর্শকাতরতা দূর করে। এছাড়াও এর অ্যান্টিসোরার এজেন্ট রোদে পোড়া কালচে দাগ দূর
করে, সানবার্ন থেকে ত্বককে রক্ষা করে। আবার ত্বকে খুব ভালো ময়েশ্চারাইজার হিসাবে
এটি কাজ করে থাকে।
ত্বকের যত্নের পাশাপাশি জাফরানের ব্যবহার রয়েছে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও। ম্যাঙ্গানিজ
এবং এন্টি ইনফ্লেমেটরি অ্যান্টিফাঙ্গাল এজেন্ট যা ব্লাড সুগার নিরাময় করে,
শরীরের প্রয়োজনীয় হরমোন বিকাশে সহায়তা করে। এছাড়াও জাফরানে বিদ্যমান রয়েছে
ভিটামিন সি যা মুখবয়োব এবং শরীরকে ইনফেকশন বা সংক্রমণ হাওয়া থেকে রক্ষা করে।
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মসলা পণ্য হলো এই জাফরান।
আরো পড়ুনঃ ফেসবুক মনিটাইজেশন শর্ত - ফেসবুক থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় এবং
ফেসবুক থেকে কত টাকা আয় করা যায়?
যার ইংরেজি নাম স্যাফরন। কোকাস্রাটিভা নামের একটি ফুলের গর্ভদণ্ড থেকে জাফরান
উৎপাদন করা হয়। ১ পাউন্ড বা ৪৫০ গ্রাম জাফরানের জন্য ৫০-৭৫ হাজার ফুলের দরকার
হয়। অর্থাৎ এক কেজি জাফরান পেতে অন্তত দেড় লাখ ফুল প্রয়োজন। বিশ্বের জাফরানের
বড় একটি চাহিদা পূরণ করে ইরান,ভারতের কাশ্মীর, স্পেন, ইতালি,পাকিস্তান ও তুরস্ক
জাফরানের চাহিদা যোগান দিয়ে থাকে।
বংশ বিস্তারের জন্য জাফরান মানুষের সাহায্যের উপরে নির্ভরশীল। জাফরান চাষে
প্রতিটি ধাপের সবকিছুই করতে হয় হাতে হাতে, তাই এর উৎপাদন খরচ বেশি। রোপিত করোমবো
আকারে বড় এবং পুষ্ট হলে, প্রথম বছরে একটি ও পরবর্তী বছরে এক একটি গাছ থেকে ৭-৮
টি ফুল পর্যন্ত ধরে। বিশ্ববাজারে প্রতি গ্রাম জাফরান এর দাম ৪ ডলারের মতো। সেই
হিসাবে প্রতি কেজি জাফরানের দাম প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা।
উন্মুক্ত জায়গা এবং উপযুক্ত পরিবেশে জাফরান চাষ বেশ ব্যয়বহুল। সেই হিসাবে
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত কক্ষে উৎপাদন খরচ আরেকটু বেশি হওয়ার কথা। তবে এই পদ্ধতি
আবহাওয়া জনিত কারণে ফসল মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তাছাড়া বছরে একাধিকবার ফলন
উঠানো সম্ভব। জাফরান এতই ব্যয়বহুল যে সবার পক্ষে ব্যবহার করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
কিন্তু অল্প ব্যবহার করেও এ থেকে উপকারিতা পাওয়া যায়। সেই দিক থেকে এটা অনেকটাই
সাশ্রয়ী।
জাফরান এর উপকারিতা গুলো কি কি?
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মসলাগুলোর মধ্যে জাফরান একটি। জাফরান প্রাচীনকাল থেকেই
জনপ্রিয় মসলা। মূলত জাফরানের সুন্দর সুঘ্রাণ ও সুন্দর রং রয়েছে। ফলে এটি মানুষ
বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবারে ব্যবহার করে থাকে। জাফরানের স্বাস্থ্যের
বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। পেটের সমস্যা,
ঋতুস্রাবের সমস্যা এবং আলসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে এই জাফরান।
ক্রোকাস স্যাটিভাস লিনের ফুল থেকে আসে। অক্টোবর ও নভেম্বর প্রতিবছর এই ফুলটি
ফোটে। এই ফুলটি বেশি সময় স্থায়ী হয় না ৩-৪ সপ্তাহ স্থায়ী হয়। জাফরানে প্রচুর
পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মূলত আমাদের
শরীর থেকে স্ট্রেস দূর করে পাশাপাশি আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের কোষের ক্ষয় রোধ
করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে জাফরানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
গুলো মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী। জাফরানের নির্যাস থেকে
ক্রোসিন নামক বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় যার ফলে স্মৃতিশক্তি
এবং শেখার ক্ষমতা উন্নত করে। কেম্পফেরল পাওয়া যায় জাফরানের পাপড়ি থেকে। আচরণগত
এবং মস্তিষ্ক বিজ্ঞানের জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, জাফরানের
নির্যাস মস্তিষ্কে ডোপামিনের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে।
অন্য আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম জাফরান গ্রহণের ফলে
এমন প্রভাব দেখা দিতে পারে যা ইমিপ্রামাইন এবং ফ্লুওক্সেটিন ড্রাগ চিকিৎসার
অনুরুপ। হতাশা দূর করার জন্য জাফরান খুবই কার্যকারী একটি সলিউশন। সাধারণত জাফরান
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং লেবানয়েড সমৃদ্ধ হওয়ায় ফ্রি রেডিক্যাল গুলোকে নিরপেক্ষ
করে। টেস্টটিউব স্টাডিতে দেখা গেছে,
জাফরান এবং এর যৌগগুলি কোলন ক্যান্সার কোষগুলোকে মেরে ফেলে। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর
কোর্সগুলো আমাদের দেহে থাকে এবং জরায়ু, স্তন প্রোস্টেট ও ফুসফুস অন্যান্য
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। মহিলাদের পিরিয়ডের সময় শারীরিক, মানসিক এবং সংবেদনশীল
লক্ষণগুলো প্রাক মাসিক সিন্ড্রোম নামে পরিচিত।
মূলত জাফরান প্রাক মাসিক সিন্ড্রোম মোকাবেলার জন্য কার্যকরী। ২০-৪৫ বয়সী
মহিলাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত প্রতিদিন ৩০ গ্রাম
জাফরানের নির্যাস গ্রহণ করলে প্রাক মাসিক সিন্ড্রোম এর লক্ষণ গুলি চিরতরে দূর
হয়ে যাবে।
- রাতে শোয়ার সময় এক গ্লাস কুসুম গরম দুধের সাথে এক চিমটি জাফরান মিশিয়ে প্রতিদিন নিয়মিত খেলে আপনার ভাইটালিতি বাড়বে।
- নিয়মিত জাফরান খাওয়ার ফলে ঠান্ডা লাগা ও জ্বরের হাত থেকে রক্ষা করে এই যে আফরান।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে জাফরান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাপানে পারকিনসন এবং স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন ধরনের অসুখে জাফরানের ব্যবহার হয়।
- বিশেষ করে মেয়েদের জন্য জাফরান খুবই উপকারী একটি উপাদান। মেয়েদের শারীরিক দিক উন্নত করে পাশাপাশি প্রতিদিন হালকা কুসুম গরম দুধের সাথে এক চিমটি জাফরান খেলে মেয়েদের হরমোন উদ্দীপিত হয়।
- জাফরানে বিদ্যমান রয়েছে হাইড্রোলকোহলিক নির্যাস যার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
- এছাড়াও জাফরানে রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার যা আমাদের পেটকে দীর্ঘক্ষন ভরা রাখে। ফলে বেশি খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা যাবে না। তাই জন্য শরীরে মেদও যাবে না।
- জাফরান ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। জাফরানের বিদ্যমান রয়েছে ক্যারোটিনয়েড, ক্রসেটিন, টিউমার প্রতিষেধক, প্রোস্টেট ক্যান্সার ও স্কিন ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি রাজ করে এইসব প্রাণঘাতী রোগ থেকে রক্ষা করে।
- জাফরান খেলে বিষন্নতা মানসিক চাপ ও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূরীভূত হয়। এছাড়াও রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধে এক চিমটি জাফরান মিশিয়ে খেলে রাতে ঘুম খুব ভালো হয়।
- গবেষণায় দেখা গেছে, জাফরান চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে পাশাপাশি চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা এবং চোখে ছানি পড়া প্রতিরোধেও খুব ভালো কাজ করে।
- আন্টি-ইনফ্লেমেটরি জাফরানে বিদ্যমান থাকায় মাংসপেশির ব্যথা, জয়েন্টের ব্যথা, বাতের ব্যথা এবং বিভিন্ন ধরনের দুর্বলতা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- জাফরান নিয়মিত খেলে কিডনি যকৃত এবং মূত্রথলির বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও জাফরান টিউমার এবং ক্যান্সার নিরময়ে দারুন কার্যকরী।
- নিয়মিত জাফরান সেবন করার ফলে শ্বাস প্রশ্বাসের নানা ধরনের সমস্যা যেমন অ্যাজমা,পারটুসিস,বুকে বসে যাওয়া কফ ও কাশি দূর করে পাশাপাশি পেটের গ্যাস থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। হজমের সমস্যা এবং হজম সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
জাফরান এর অপকারিতা কি?
জাফরানের উপকারিতা যেমন রয়েছে ঠিক তেমনি জাফরানের অপকারিতা ও রয়েছে। সাধারণত
জাফরান ব্যবহারে আমরা নানা ধরনের উপকার পেয়ে থাকি। কিন্তু সঠিক উপায়ে ব্যবহার
না করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। জাফরান
অনেক সময় ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় কিন্তু যদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়
তাহলে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া, মাথাব্যথা, শুষ্ক মুখ,
পেটের ব্যথা, বমি বমি ভাব সহ প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত জাফরান
খেলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে জরায়ুর সংকোচনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এছাড়াও গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণে জাফরান ব্যবহার না করলে গর্ভপাত হওয়ার
সম্ভাবনা দেখা দেয়। তাই অতিরিক্ত জাফরান ব্যবহার না করে পর্যাপ্ত পরিমাণে জাফরান
ব্যবহার করতে হবে। স্তন পান করা মায়েরা জাফরান ব্যবহার
করলে শিশু এবং মা উভয় সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। তাই জন্য স্তন পান করানো
মায়েদের জাফরান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া অতিরিক্ত জাফরান সেবনের
ফলে নাক, কান ইত্যাদি থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে পাশাপাশি জন্ডিস ডায়রিয়ার মতো
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ত্বকের যত্নে জাফরান - রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার
প্রাচীনকাল থেকে রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি ত্বকের তারুণ্যতা
ধরে রাখতে সহায়তা করে পাশাপাশি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে। আগেকার দিনে রাজকন্যাদের রূপচর্চার উপাদানের মধ্যে অন্যতম ছিল এই
জাফরান। এই জাফরানে রয়েছে সুমিষ্ট গন্ধ। জাফরান বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনীতে
ব্যবহার করা হয়। ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক এর সমস্যা দূর করে।
বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি রূপচর্চায় জাফরানের জুড়ি মেলা
ভার। ফেসপ্যাক হিসেবে জাফরান ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা অনেক গুনে বৃদ্ধি পায়।
ত্বকের রোদে পড়া কালচে দাগ দূর করতে জাফরান খুবই কার্যকরী।
- চন্দন কাঠ, দুধ ও জাফরানের ফেসপ্যাকঃ হাফ কাপ ঘন দুধে ১-২ চিমটি জাফরান ভিজে কিছুক্ষণ রাখুন। তারপর এক টেবিল চামচ চন্দন গুড়া জাফরান ও দুধের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এবার ক্রিমের মতো হাতের আঙ্গুলে নিয়ে আপনার পুরো মুখমণ্ডল ও গলায় ভালোভাবে লাগান। তারপর ২০-৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার মুখ ভালো হবে ধুয়ে ফেলুন।
- গোলাপ জল ও জাফরানের ব্যবহারঃ যদি আপনার মুখের ত্বক তৈলাক্ত হয় তাহলে এই ফেসপ্যাকটি আপনার জন্য উপযুক্ত। এটি আপনি নিয়মিত প্রাকৃতিক টোনার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। ২ টেবিল চামচ গোলাপ জল এর মধ্যে ২ চিমটি জাফরান মিশিয়ে চামচের সাহায্যে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করুন। তারপর এক ঘন্টা রেস্টে রেখে দিন। এবার একঘন্টা পর পরিষ্কার সুতি কাপড় অথবা তুলা প্রাকৃতিক টোনারে চুবিয়ে আপনার ফেস চেপে চেপে মুছুন। এটি ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের পরিবর্তন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। এই প্যাকটি আপনি চাইলে ফ্রিজে রেখে অনেকদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নাই।
- মধু ও জাফরানের ফেসপ্যাকঃ আপনার স্কিন যদি রুক্ষ হয় তাহলে এই ফেসপ্যাকটি আপনার জন্য খুবই উপকারী। এক টেবিল চামচ মধু নিন সাথে দুই চিমটি জাফরান মিশিয়ে নিন। ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ১০ মিনিট পর আপনার মুখ ও গলার ত্বকে ভালোভাবে মাসাজ করুন। ১০-১৫ মিনিট রাখার পর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে নিন।
- জাফরান ও পুদিনা পাতার ফেসপ্যাকঃ আপনার ত্বকে যদি অতিরিক্ত ব্রণ হয় তাহলে এই ফেসপ্যাকটি আপনার জন্য খুবই কার্যকরই হবে। এক চামচ গোলাপজলের সাথে দুই চিমটি জাফরান কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। তারপর একমুঠো পুদিনা পাতা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে তারপর ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এরপর ভিজিয়ে রাখা গোলাপজল ও জাফরানের সাথে ব্লেন্ড করা পুদিনা পাতা বাটা ভালোভাবে মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে নিতে হবে। তারপর আপনার ত্বকে ফেসপ্যাকটি লাগান। ৩০মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার ফেস ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই ফেস প্যাকটি ব্যবহারের ফলে আপনার মুখের ব্রণ দূর হবে।
- উজ্জ্বল ত্বকের জন্য জাফরানের ফেসপ্যাকঃ একটি পাত্রে পরিমাণ মতো পানি নিয়ে দুই চিমটি জাফরান সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সকাল বেলা ভেজানো জাফরানের মধ্যে এক চামচ মধু, দুই ফোটা নারিকেল তেল সবকয়টি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করুন। তারপর পরিষ্কার সুতি কাপড় বা তুলোর সাহায্যে আপনার মুখের ত্বকে ও ঘাড়ে লাগান। ১৫ মিনিট মতো অপেক্ষা করুন। এবার পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার মুখমন্ডল ধুয়ে ফেলুন।
- নিস্তেজ ত্বকের জন্য ফেসপ্যাকঃ চার টেবিল চামচ দুধের সাথে দুই চিমটি জাফরান কয়েক ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন তারপর কয়েক ঘন্টা পর চামচের সাহায্যে নাড়াচাড়া করুন। এবার পরিষ্কার-সুতি কাপড় বা তুলার সাহায্যে এই মিশ্রণটি আপনার মুখে ও ঘাড়ে লাগান। শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে আপনার ফেস ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাকটি আপনার ত্বককে এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য করে। এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের ব্রণ ও ব্রণের দাগ-ছোপ দূর হবে।
জাফরান দুধের উপকারিতা
ক্যালসিয়ামের দারুন উৎস হচ্ছে দুধ এবং এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এক গ্লাস কুসুম গরম দুধের সাথে এক চিমটি জাফরান মিশিয়ে গ্রহণ করলে দুধের স্বাদ ও
গন্ধ হাজার গুনে বেড়ে যায়। জাফরান ও দুধ একসাথে খেলে যেমন দারুন ঘুম হয়, ঠিক
তেমনি ত্বকের রং এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে খুবই সাহায্য করে। জাফরানের মধ্যে এমন
কিছু বিশেষ গুনাগুন রয়েছে যার ফলে আপনার
শরীরের নানা ধরনের প্রাণঘাতি রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। জাফরান ও দুধ নিয়মিত
সেবনের ফলে বিষন্নতা এবং মানসিক চাপের মতো নানা ধরনের সমস্যা দূরীভূত করে।
জাফরানে বিদ্যমান রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম,
আয়রন, জিংক, ডায়েটারি ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬,
কার্বোহাইড্রেট, ফসফরাস, প্রদাহরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
প্রভৃতির দারুন উৎস হচ্ছে এই জাফরান। জাফরান হচ্ছে বিভিন্ন গুনাগুনের ভরপুর
পাশাপাশি বিদ্যমান রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গুনাগুন। নিয়মিত জাফরান এবং দুধ
সেবনের ফলে হৃদরোগ, ঠান্ডা, অনিদ্রা ইত্যাদি সমস্যা দূর হবে। এটি আমাদের শরীরে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে দারুন কাজ করে। আপনি যদি প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে
এক গ্লাস দুধের সাথে এক চিমটি জাফরান মিশিয়ে সেবন করে ঘুমান,
তাহলে আপনি আপনার শরীরের পরিবর্তন নিজেই বুঝতে পারবেন। দুধ এবং জাফরান খুবই
পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ একটি খাবার। এছাড়াও প্রতিদিন জাফরান ও দুধ একসাথে মিশিয়ে খেলে
সর্দি-কাশি কম হবে, স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করবে, ঋতুস্রাবের ব্যথা
কমায়, হৃদযন্ত্র ভালো রাখে, স্বাস্থ্য উন্নত করে,
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে, রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে, অবসর দূর করে, রক্তস্বল্পতা দূর
করে, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দূর করে। এক গ্লাস
দুধের সাথে এক চিমটি জাফরান নিয়মিত প্রতিদিন পান করুন। তাহলে আপনার ত্বক ভেতর
থেকে উজ্জ্বল হবে পাশাপাশি আপনার ত্বক প্রাণবন্ত ও লাবণ্যময়ী হয়ে উঠবে।
জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম
জাফরান ও দুধ খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে রাতের বেলা। বিশেষ করে আপনারা
যখন রাতে ঘুমোতে যাবেন, ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধের সাথে এক চিমটি
জাফরান ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর দুধ ও জাফরান
চামচের সাহায্যে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করুন, যখন দেখবেন দুধের কালার টা হলুদ
বর্ণের হয়ে গেছে,তখন বুঝবেন খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে গেছে তখন খেয়ে নিবেন। দুধ ও
জাফরানের সাথে আপনি বিভিন্ন ধরনের বাদাম মধু কিসমিস যুক্ত করতে পারেন এতে করে
জাফরান ও দুধের শোভা বৃদ্ধি পায়।
জাফরান কফির উপকারিতা
কফির সাথে এক চিমটি জাফরান মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আপনারা তো
নিয়মিত কফি খেয়ে থাকেন। আপনারা যদি চান কফির স্বাদ এবং গুণ হাজারগুন বেড়ে যাক,
তাহলে আপনারা কফির সাথে এক চিমটি করে জাফরান মিশিয়ে নিয়মিত খেতে পারেন। এর জন্য
আপনাকে প্রথমে কফি তৈরি করে নিতে হবে, তারপর কফির সাথে এক চিমটি জাফরান মিশিয়ে
চামচ দিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে নিতে হবে।
এইবার জাফরান মিশ্রিত কফি আপনার খাওয়ার জন্য উপযুক্ত হয়ে যাবে। প্রতিদিন তো
নিয়মিত আপনারা কফি খান কফিতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আরো
পুষ্টিগুণ দ্বিগুণ করার জন্য প্রতিদিন কফি খাওয়ার সময় এক চিমটি জাফরান মিশিয়ে
খেতে পারেন। যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন, সাধারণত তাদের জন্য এই কফি
এবং জাফরান খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী।
নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে কফির সাথে যদি এক চিমটি জাফরান মিশিয়ে প্রতিদিন পান
করেন, তাহলে শরীর থেকে অতিরিক্ত ফ্যাট অনায়াসে দূর হয়ে যাবে। কিন্তু একটা বিষয়
অবশ্যই মনে রাখবেন এই উপাদানের সাথে কোন রকম চিনি ব্যবহার করা যাবে না, একটু
স্বাদ বাড়ানোর জন্য সামান্য পরিমাণ মধু মিশাতে পারেন। মনে রাখবেন সামান্য পরিমাণ
মধু, যদি আপনি চান, আর না মেশালে আরো ভালো।
জাফরান তেলের উপকারিতা
জাফরান তেল অনেক উপকারী চুলের জন্য। জাফরানে বিভিন্ন রকম উপকারী গুণ বিদ্যমান
রয়েছে। আর এই গুনগুলো জাফরান তেলেও রয়েছে। চুল পড়া রোধ করার জন্য জাফরান তেল
দারুন কার্যকরী। সাধারণত জাফরান তেল চুল পড়া রোধ এবং চুলের গ্রোথ বৃদ্ধি করে,
চুল লম্বা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। কিন্তু চুলকে লম্বা করার জাফরান তেলের
বৈজ্ঞানিকভাবে কোন যথার্থ ব্যাখ্যা নেই। কিন্তু বাস্তবে
এই তেল ব্যবহার করার জন্য উপযোগী হয়েছে কারণ জাফরান তেল ব্যবহারের ফলে চুলের
বিভিন্ন রকম সমস্যা দূর হয়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক জাফরান তেলের কিছু
উপকারিতা।
- জাফরান তেল ব্যবহারের ফলে চুল পড়া অনেকাংশেই কমে যায়।
- জাফরান তেল ব্যবহার করায় চুলের দ্রুত বৃদ্ধি হয়।
- চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়।
জাফরান ক্রিমের উপকারিতা
প্রাচীনকাল থেকেই জাফরান রূপচর্চার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে আসছে। এই জাফরান
বিভিন্ন রকম প্রসাধনীতে ব্যবহার করা হয়। জাফরানে বিভিন্ন প্রকার উপকারী গুণ
রয়েছে। যা আমাদের ত্বককে স্বাস্থ্যকর ও লাবণ্যময়ী এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা
বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক জাফরান ক্রিম
এর কিছু উপকারিতা।
- জাফরান ক্রিম ত্বকে ব্যবহারের ফলে ত্বককে ৪-৫ শেড ফর্সা করতে সাহায্য করে।
- ত্বকের তারুণ্যতা ধরে রাখে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- মুখে অতিরিক্ত ব্রণ হওয়ার ফলে বিভিন্ন রকম দাগ ছোপ দেখা দেয়। ব্রনের দাগ ছোপ দূর করতে জাফরান ক্রিম দারুন কাজ করে।
- এছাড়াও রোদে পোড়া দাগ দূর করতে এই জাফরান ক্রিম ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
- অনেকের মুখে মেছতার দাগ থাকে,জাফরান ক্রিম মেছতার দাগ খুব সহজেই দূর করে দেয়।
- জাফরান ক্রিম ব্যবহারের ফলে যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের ত্বকের তৈল গ্রন্থিকে নিয়ন্ত্রণ করে, তৈলাক্ত ভাব দূর করে।
- জাফরান ক্রীম চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতেও বেশ কার্যকরী।
- জাফরান ক্রিম ব্যবহারের ফলে আগুনে পোড়া দাগ দূর হয়।
জাফরানের দাম ২০২৪
জাফরানের সঠিক দাম কত হতে পারে এটা হয়তো অনেকেই জানেনা। কারণ জাফরানের দাম
আকাশচুম্বি সেটা আমরা হয়তো অনেকেই জানি। বিশ্বের অন্যতম নামিদামি প্রসাধনী হচ্ছে
এই জাফরান। এটি লাল সূর্যবর্ণ হওয়ায় জাফরানকে লালসোনাও বলা হয়। এই জাফরান সবার
পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। খুবই স্বল্প পরিসরে কম জায়গায় বাংলাদেশে জাফরান চাষ করা
হয়।
এছাড়াও বিশ্বের জাফরানের বড় একটি চাহিদা পূরণ করে ইরান,ভারতের
কাশ্মীর,স্পেন,ইতালি,পাকিস্তান ও তুরস্ক জাফরানের চাহিদা যোগান দিয়ে থাকে।
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মসলাগুলোর ভিতর জাফরান একটি। কিন্তু স্থানভেদে
জাফরানের দাম কমবেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বাজারে ১ গ্রাম জাফরানের দাম ৩০০-৪০০
টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর এক কেজি জাফরানের দাম প্রায় ৫ লক্ষ টাকা অনুমান করা
যায়।
গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থার সময় একজন গর্ভবতী মা এক গ্লাস গরম দুধের সাথে এক চিমটি জাফরান
মিশিয়ে নিয়মিত পান করতে পারেন। গর্ভবতী মায়েদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জাফরান
খাওয়া তাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন
জাফরান খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর জাফরান খেতে শুরু
করবেন। গর্ভবতী মায়েরা দুধের সাথে জাফরান, জাফরানের ফালুদা জাফরানের পায়েস,
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রান্নায় অল্প অল্প করে ব্যবহার করে খেতে পারেন। সাধারণত
জাফরান গর্ভবতী মা এবং বাচ্চার জন্য খুবই উপকারী।
গর্ভাবস্থায় জাফরানের উপকারিতা
জাফরান বিভিন্ন রকম পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উপাদানে ভরপুর। জাফরান নিয়মিত পর্যাপ্ত
পরিমাণে খাওয়ার ফলে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়
যেমন ঘুমের সমস্যা দূর হয়, গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর হয়,শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা
দূর করে, খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা-অবসাদ দূর করে,
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর হয়।
তাই জন্য গর্ভবতী মায়েরা জাফরান দুধের সাথেও মিশিয়ে খেতে পারে আবার বিভিন্ন
ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবারের সাথেও মিশিয়ে খেতে পারেন। নিয়মিত এক চিমটি করে
প্রতিদিন জাফরান খাওয়ার ফলে গর্ভের সন্তানের গায়ের রং ফর্সা হয় পাশাপাশি শিশুর
মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে এবং বিভিন্ন রকম গ্রোথ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
জাফরান শিশুদের জন্য উপকারী
প্রতিটি মা বাবাই শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তায় থাকেন। পুষ্টির পরিমাণ ঠিক
রাখার জন্য আপনারা জাফরানকে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। কারণ জাফরান হলো
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ উপাদানে ভরপুর। শিশুদের জন্মের পর থেকে পুষ্টির যোগান
দেবে এমন একটি উপাদান হলো এই জাফরান। যেকোনো বয়সের বাচ্চাদের পুষ্টির চাহিদা
পূরণে জাফরান বেশ ভালো কাজ করে।
জাফরানে বিদ্যমান রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম,
আয়রন, জিংক, ডায়েটারি ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬,
কার্বোহাইড্রেট, ফসফরাস, প্রদাহরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রভৃতির। জাফরান
বাচ্চাদের দ্রুত হাড় গঠনে সহায়তা করে। অল্প বয়সে বাচ্চাদের প্রায় সময় জ্বর,
ফ্লু, সর্দি, কাশি, ইত্যাদি রোগে ভোগে। এগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
জাফরান শিশুদের হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও শিশুদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শৈশবকাল মস্তিষ্ক ও স্নায়ু বিকাশের জন্য খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। এতে বিটা-ক্যারোটিন বিদ্যমান রয়েছে ফলে শিশুদের রেটিনাকে
শক্তিশালী করে এবং শিশুদের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে। শিশুদের ত্বক অনেক সংবেদনশীল
তাই জন্য যেকোনো ধরনের ক্রিম ব্যবহার করা যায় না। এজন্য আপনারা নিয়মিত জাফরান
শিশুদের ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে শিশুদের ত্বক থেকে শুষ্ক ও রুক্ষতা ভাব
দূর হবে। শিশুদের জন্য খুবই উপকারী এই জাফরান।
লেখকের ইতি কথাঃ জাফরান এর উপকারিতা গুলো কি কি? - ত্বকের যত্নে জাফরান - রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার
সম্মানিত পাঠক, আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে জাফরান এর উপকারিতা গুলো কি কি? -
ত্বকের যত্নে জাফরান - রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার সম্পর্কে পুরোপুরি বিস্তারিত
জানতে পেরেছেন। উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো ভালোভাবে পড়ে নিলেজাফরান এর উপকারিতা
গুলো কি কি? - ত্বকের যত্নে জাফরান - রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার সম্পর্কে খুব
সহজেই জানতে পারবেন। জাফরান নানান ধরনের উপকারী পুষ্টিগুণে ভরপুর। নিয়মিত জাফরান
সেবন করলে অনেক ধরনের রোগ-বালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কিন্তু অনেকেই এই জাফরানের গুনাগুন গুলো সম্পর্কে জানেনা। এইজন্য অনেকেই এই
জাফরান ব্যবহারও করে না। এজন্য তারা জাফরানের নানান ধরনের উপকারিতা থেকে বঞ্চিত
হয়। তাই আপনি যদি জাফরানের বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা ও গুনাগুন গুলো সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে চান তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেলটি পড়া আবশ্যক।
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগের সাথে
পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এই ধরনের তথ্য বহুল
আর্টিকেল নিয়মিত পোস্ট করে থাকি। তাই আপনি যদি এ ধরনের আরও তথ্যবহুল উপকারী
আর্টিকেল পড়তে চান, তাহলে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন। সাথে সাথে এই
আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে আপনার নিকট আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজনদের
কাছে তাদের উপকারার্থে শেয়ার করে দিন।
যেন তারা জাফরান এর উপকারিতা গুলো কি কি? - ত্বকের যত্নে জাফরান - রূপচর্চায়
জাফরানের ব্যবহার এ বিষয় সম্পর্কে পুরোপুরি ভালোভাবে জেনে নিতে পারে। জাফরান এর
উপকারিতা গুলো কি কি? - ত্বকের যত্নে জাফরান - রূপচর্চায় জাফরানের ব্যবহার এ
বিষয়টি নিয়ে আপনার যদি কোন গুরুত্বপূর্ণ মতামত বা প্রশ্ন থাকে, তাহলে অবশ্যই
নিচে দেওয়া মতামত বক্সে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আবার আপনাদের সাথে কথা হবে নতুন
কোন আর্টিকেল নিয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ ও সুস্থ থাকুন।
কনফিডেন্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url