বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪ খুব সহজে কিভাবে করবেন?
আপনি কি বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪ এ কিভাবে করবেন সেই বিষয় নিয়ে চিন্তিত? চিন্তার
কোন কারণ নেই আপনার। কারণ আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের মূল আলোচনায় হচ্ছে বয়স্ক
ভাতা আবেদন ২০২৪ এ কিভাবে করবেন? সেই সম্পর্কে ও বয়স্ক ভাতা আবেদনের সম্পূর্ণ
প্রক্রিয়া বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে
নেওয়া যাক!
আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪ সম্পর্কে এমন কিছু ইউনিক ও
কার্যকরী তথ্য সম্পর্কে জানাবো যেগুলোকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই বয়স্ক
ভাতার আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন। আমরা অনেকেই বয়স্ক ভাতার বিষয়ে কমবেশি জানি
আবার অনেকেই এ সম্পর্কে কোন ধারণাও রাখেন না। তাই আপনি যদি বয়স্ক ভাতার আবেদন
২০২৪ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য গুলো জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি
শুধুমাত্র আপনার জন্যই। তাই এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
তাহলে আশা করি আপনি বয়স্ক ভাতা বিষয়ে বিস্তারিতভাবে নির্ভুল সব তথ্য গুলো জানতে
পারবেন। ইনশাআল্লাহ!
পেজ সূচিপত্রঃ
.
ভুমিকা
বয়স্ক ভাতা হচ্ছে সরকারিভাবে বা সামাজিকভাবে সুবিধা বঞ্চিত বয়স্ক নাগরিকদের
জীবনের সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাপনা। এই বয়স্ক
ভাতা সরকারি ও বেসরকারি সকল সংস্থাগুলি দেশের বয়স্ক নাগরিকদের সুবিধার্থে প্রদান
করে থাকে। আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে বিস্তারিতভাবে জানতে
পারবেন বয়স্ক ভাতা কি, বয়স্ক ভাতা কত টাকা ২০২৪, বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির যোগ্যতা
কি কি, বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন ২০২৪ কিভাবে করবেন?
অফলাইনে বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪ কিভাবে করবেন? বয়স্ক ভাতা পাবার জন্য অন্যান্য
পদ্ধতি, কিভাবে বয়স্ক বা তার আবেদন যাচাই করবেন? বয়স্ক ভাতা তালিকা ২০২৪,
বয়স্ক ভাতাভোগী মারা গেলে তার জমানো টাকা কি নমিনি তুলতে পারবে, বয়স্ক ভাতা কত
বছর বয়সে দেওয়া হয় এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে সম্পূর্ণ জানতে
পারবেন।
বয়স্ক ভাতা কি?
দেশের বয়োজ্যেষ্ঠ দুস্থ ও সহায় সম্বলহীন এবং উপার্জন করতে পারে না, উপার্জনে
অক্ষম, সেই বয়োজ্যেষ্ঠ জনসংখ্যা গুলোর সামাজিক অবস্থানের নিরাপত্তা এবং পরিবারের
কাছে ও সমাজের কাছে সম্মান বৃদ্ধি করার জন্য প্রতিমাসে যে সরকারি অর্থ প্রদান করা
হয় সেটাই হচ্ছে বয়স্কভাতা। সাধারণত সমাজের যে বয়োজ্যেষ্ঠ গুলো ইনকাম করতে
পারেনা, উপার্জনে অক্ষম এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যায়
ভুগেন সে সকল বয়স্ক জনগোষ্ঠীদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং সামাজিক মর্যাদার এবং
আর্থিক সহযোগিতার লক্ষ্যে ১৯৯৭-১৯৯৮ অর্থবছরে এই বয়স্ক ভাতার কর্মসূচিটি চালু
করা হয়। মূলত এটি উপার্জন করতে পারে না এবং উপার্জনে অক্ষম কিংবা দুস্থ তাদের
জন্য এই কর্মসূচি প্রবর্তিত হয়েছে। বয়স্ক ভাতা কর্মসূচির মাধ্যমে যেমন
বয়োজ্যেষ্ঠদের জীবন যাপন হবে সহজ নিরাপদ তেমনই তাদের
জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। দেশে প্রাথমিকভাবে সকল ইউনিয়ন পরিষদের সকল ওয়ার্ডে
মোট ১০ জন ৫ জন পুরুষ এবং পাঁচ জন মহিলা দরিদ্র বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রত্যেক মাসে
১০০ টাকা হারে বয়স্কভাতা প্রদান করা হতো। পরবর্তী সময়ে এই কর্মসূচির আওতাভুক্ত
করা হয় দেশের সকল সিটিকর্পোরেশন ও পৌরসভাকে।২০০৯-২০১০ অর্থবছরে বয়স্ক ভাতার
সংখ্যা গিয়ে দাড়াই ২০ লক্ষ থেকে বৃদ্ধি হয়ে ২২
লক্ষ ৫০ হাজার। তখন ২৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি হয়ে ৩০০ টাকা হারে নির্ধারণ করা হয়
বয়স্ক ভাতা। বয়স্ক ভাতা ২০১০-২০১১ অর্থবছরের সংখ্যা ২ লক্ষ ২৫ হাজার বৃদ্ধি
হয়ে হয় ২৪ লক্ষ ৭৫ হাজার গিয়ে দাঁড়ায়। বয়স্ক ভাতা জনপ্রতি ৫০০ টাকা হারে
ভাতা প্রদান করা হয় ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৩১ লক্ষ ৫০ হাজার বয়োজ্যেষ্ঠ
ব্যক্তিদেরকে।
বয়স্ক ভাতা কত টাকা ২০২৪ এ পাবেন?
বয়স্ক ভাতা হচ্ছে একটি বাংলাদেশ সরকারের একটি আর্থিক অনুদান কর্মসূচি। সাধারণত
বয়স্ক ভাতা বয়স্কদের জন্যই মূলত গঠিত একটি কর্মসূচি। যারা সমাজের সকল চাহিদা ও
নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত একইরূপে দেশের কোন সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে না তাদের
জন্যই বয়স্ক ভাতা নির্ধারিত। বয়স্কদের মূলত ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স হলেই এই
বয়স্ক ভাতা প্রদান করা হয়। সাধারণত পুরুষদের ৬৫
এবং মহিলাদের সর্বনিম্ন ৬২ বয়স হলে সরকার কর্তৃক এ ভাতা প্রদান করা হয়। বয়স্ক
ভাতা কর্মসূচি চালু হয় ১৯৯৭-১৯৯৮ সালে। প্রাথমিকভাবে দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের
প্রত্যেক ওয়ার্ডে ৫ পুরুষ এবং ৫ জন মহিলা মোট ১০ জন কে প্রত্যেক মাসে ১০০ টাকা
হারে বয়স্ক ভাতা দেওয়া হতো। তারপর পরবর্তী সময়ে দেশের সকল পৌরসভা এবং
সিটিকর্পোরেশনকে এড করা হয়। ২০০৯-২০১০ অর্থবছরের ২০
লক্ষ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২২ লক্ষ ৫০ হাজার সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায়। ২৫০ থেকে ৩০০
টাকা হারে প্রতি মাসে ভাতা প্রদান করা হতো। তারপর পরবর্তী সময়ে ২০১০-২০১১
অর্থবছরের ২ লক্ষ ২৫ হাজার বৃদ্ধি পেয়ে ২৪ লক্ষ ৭৫ হাজার সংখ্যায় গিয়ে
দাঁড়ায়। তখন বয়োজ্যেষ্ঠদেরকে জন প্রতি ৫০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হতো।
২০১৬ - ২০১৭ অর্থবছরে ৩১ লক্ষ ৫০ হাজার ব্যক্তিকে বয়স্ক ভাতা ৬০০ টাকা হারে
প্রদান করা হয় এবং বাৎসরিক ৭২০০ টাকা। ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরের ৪২০৫.৯৬ কোটি টাকা
বয়স্ক ভাতা দেওয়া হয়। বয়স্ক ভাতা যখন প্রাথমিকভাবে চালু হয় তখন খুব স্বল্প
পরিমাণে ছিল। এখন আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির যোগ্যতা কি কি?
প্রতিটি জিনিস পাবার জন্য যেমন কিছু ক্রাইটেরিয়া বা শর্ত থাকে তেমনি ভাবে বয়স্ক
ভাতা প্রাপ্তির যোগ্যতা ও কিছু শর্তাবলী রয়েছে।
- বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- স্থায়ী বাসিন্দার পরিচয় হিসেবে জন্ম নিবন্ধন কার্ড বা এন আই ডি কার্ড/জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।
- বয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৬৫ বছর এবং বয়স্ক মহিলাদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৬২ বছর হতে হবে। তাহলে সরকারিভাবে এই বয়স্ক ভাতার জন্য বিবেচনা করা হবে।
- বয়স্ক ভাতা প্রার্থীর বাৎসরিক আয় গড়ে সর্বোচ্চ ১০,০০০ (দশ হাজার) টাকা হতে হবে।
- বয়স্ক ভাতা টি সরকারি বাছাই কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত হবে।
- বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন ২০২৪ কিভাবে করবেন
- বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন ২০২৪-এ করতে হলে কয়েকটি স্টেপে কাজ করতে হবে। এই স্টপ গুলি নিচে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হলো।
বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন যোগ্যতা
- আবেদনকারীর বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
- বয়স্ক ভাতাই আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
- বয়স্ক ভাতায় আবেদনকারীর মাসিক আয় ৫০০০ টাকার বেশি হওয়া যাবে ন।
- বয়স্ক ভাতায় আবেদনকারীর সম্পত্তির পরিমাণ নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করতে পারবে না।
- বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
- এন আই ডি/জাতীয় পরিচয় পত্রের ইস্কান কপি একটি। আবেদনকারী প্রার্থীর পাসপোর্ট সাইজ ছবির স্ক্যান কপি একটি।
- নির্ধারিত বয়স সীমার প্রমাণস্বরূপ জন্ম সনদ এর ফটোকপি।
- আবেদনকারী প্রার্থীর মোট সম্পত্তির তালিকা।
- বয়স্ক ভাতার টাকা গ্রহণ করার জন্য ব্যাংক একাউন্টের তথ্য থাকতে হবে।
অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন প্রক্রিয়া
বয়স্ক ভাতা পাবার জন্য সম্পূর্ণ আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়। নিচে
দেওয়া তথ্য গুলি অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে
পারবেন। একটি বিষয় স্মরণ রাখুন বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন সম্পন্ন ফ্রি বা
বিনামূল্যে। তাই কোন মধ্যস্থতাকারী বা দালালের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা আবেদন করা
উচিত নয়।
- প্রথমে, আপনাকে বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন পোর্টালে যেতে হবে। বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন পোর্টালে যাওয়ার জন্য নিচে দেওয়া লিংকে ক্লিক করুন।
- "নতুন আবেদন" নামে একটি বাটনে ক্লিক করুন।
- সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী ফরমটি নির্ভুলভাবে পূরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো আপলোড করুন।
- "জমা দিন" নামে বাটনে ক্লিক করুন।
- আপনার আবেদনটি একটি অন্যান্য আবেদন নম্বর সহিসে জমা হয়ে থাকবে।
- আপনার আবেদনটি কমপ্লিট হয়েছে কিনা সেটা যাচাইয়ের পরে কনফার্ম করার জন্য আপনাকে একটি এসএমএস পাঠানো হবে।
- যদি আপনার আবেদনটি সরকারি ওয়েবসাইটে গৃহীত বা মঞ্জুর হয় তাহলে আপনার দেওয়া ব্যাংক একাউন্টে নিয়মিত ভাতা জমা হবে।
অফলাইনে বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪ কিভাবে করবেন
বয়স্ক ভাতার আবেদন অনলাইন ছাড়া অফলাইনেও করা যায়। অফলাইনে আবেদন করার জন্য
আপনাকে যা যা করতে হবে সেগুলি নিচে দেওয়া হল।
- আপনার নিজের এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনের সমাজসেবা মূলক কার্যালয়ে যান।
- ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশনের সমাজসেবা অফিস থেকে বয়স্ক ভাতার একটি নির্দিষ্ট আবেদন পত্র গ্রহণ করুন।
- সেই আবেদন পত্রটি নির্ভুলভাবে পূরণ করুন।
- আবেদনপত্র ও সাথে সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো জমা দিন।
বয়স্ক ভাতা আবেদন ফরম
আপনাদের সুবিধার্থে বয়স্ক ভাতা আবেদন ফরম টি নিচে পিডিএফ ফাইল সহকারে সংরক্ষণ
করা হলো। প্রয়োজনে "PDF File Download" বাটনে ক্লিক করে আবেদন ফরমটি সংগ্রহ
করুন।
বয়স্ক ভাতার আবেদন পাবার জন্য অন্যান্য পদ্ধতি
আপনি যদি বয়স্ক ভাতার আবেদন জন্য অন্যান্য পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্যগুলো জানতে চান তাহলে নিচে দেওয়া তথ্য গুলি আপনাকে অনুসরণ করতে
হবে।
- আপনার এলাকার সরকারি ভাবে বাস্তবায়িত সংস্থা কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন।
- আপনার নিকটস্থ বয়স্ক ভাতা সহযোগিতা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করুন এবং প্রয়োজনে তাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
- স্থানীয় লোকজনদের মাধ্যমে বা ইন্টারনেটে বয়স্কদের সন্ত্রাসবিরোধী সেবা ও ভাতা সম্পর্কে বিভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া যায়।
- আপনাদের এলাকায় স্থানীয় সামাজিক সংগঠন এর সাথে যোগাযোগ করুন যারা এ ধরনের তথ্য আদান প্রদান করে থাকে।
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও অনলাইনে অনুসন্ধান করুন বয়স্কদের ভাতা প্রদান করে এমন সংগঠনের সাথে যোগাযোগ করুন।
বয়স্ক ভাতা কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
যারা ইতিমধ্যেই বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করেছিলেন তাদের নাম সেখানে সিলেক্ট করা
থাকবে। এই বয়স্ক ভাতা কার্ড দেখানোর মাধ্যমে আপনি প্রতিমাসে একটা নির্দিষ্ট
অংকের টাকা ভাতা হিসেবে পাবেন। এইজন্য আপনাকে আপনার বয়স্ক ভাতা কার্ডটি ডাউনলোড
করে প্রিন্ট করার পর সেটি লেমেনেটিং করে সাথে রাখতে হবে। বয়স্ক ভাতা অনলাইনে
আবেদন করার জন্য একটি ফরম পূরণ
করতে হবে এবং ভাতা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতাভোগী কে নির্বাচন
করবেন। আর এর মাধ্যমে জানতে পারবেন বয়স্ক ভাতা প্রার্থী ভাতা পাবার যোগ্য কিনা।
এই আবেদন সম্পন্ন হওয়ার পর বয়স্ক ভাতা ভোগী কে যাচাই করা হবে । নির্বাচিত
বয়স্ক ভাতা ভোগী প্রার্থীকে একটি বই প্রদান করা হবে। এতে থাকবে সমাজকল্যাণ
অধিদপ্তর থেকে ব্যক্তি পর্যন্ত লেনদেনের করার সকল হিসাব ও কত টাকা
আদান প্রদান করা হয় এবং এগুলোর নিয়ম-নীতি সবিস্তারে উল্লেখিত থাকবে। অর্থাৎ এই
বইকে বয়স্ক ভাতা কার্ড বলা হয়ে থাকে। তাই এই বইয়ে যেকোনো তথ্য পরিবর্তন করার
জন্য অন্য কোন মাধ্যমে অর্থাৎ অনলাইনে বয়স্ক ভাতা কার্ড ডাউনলোড করার পদ্ধতি এখন
পর্যন্ত কার্যকর করা হয়নি। কিন্তু বর্তমান সময়েও বয়স্ক ভাতা কার্ডের কথা কোথাও
উল্লেখ করা হয়নি। বয়স্ক ভাতা পাবার জন্য নির্বাচিত
হওয়ার পরে প্রথম পর্যায়ে কিভাবে ভাতার টাকা গ্রহণ করতে চান সে বিষয়টি অনলাইন
আবেদন পত্রে উল্লেখ করে দিতে হবে। বর্তমান সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এর বিভিন্ন
অ্যাকাউন্ট সিস্টেম কার্যকর হওয়াতে বয়স্ক ভাতার টাকা গ্রহণ করা অনেক সহজ হয়ে
গেছে। আগেকার সময়ের মতো লাইনে দাঁড়িয়ে বয়স্ক ভাতার টাকা গ্রহণ করার কষ্ট
পুরোটাই কমে গেছে বললেই চলে। তবে বয়স্ক ভাতা কার্ড
ডাউনলোড করার কোন পদ্ধতি না থাকলেও এটি ট্র্যাকিং করার পদ্ধতি ঠিকই রয়েছে।
বর্তমান সময়কে যেহেতু ডিজিটাল যুগ বলা হয় তাই এই বয়স্ক ভাতাটি অনলাইন ভিত্তিক
কর্মসূচি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ভাতা ভোগী ব্যক্তির সকল তথ্য অনলাইনে বয়স্ক ভাতা
সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে জমা থাকে। ভাতার টাকা লেনদেন করার সঠিক হিসাব বা ভাতাভোগী
ব্যক্তির অগ্রগতি জানতে ট্র্যাকিং আইডি ব্যবহার করার মাধ্যমে বয়স্ক ভাতার নতুন
কর্মসূচি ট্র্যাকিং সন্ধান করতে পারেন।
বয়স্ক ভাতা আবেদন যাচাই
বয়স্ক ভাতা ভোগী ব্যক্তির আবেদনটি যাচাই করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কিছু পদক্ষেপ
নিতে হবে। সেটি হলো বয়স্ক ভাতা ভোগী ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী জন্মতারিখ
তারিখ ও NID কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রের বয়স সঠিকভাবে মিল আছে কিনা এবং
বয়স্ক ভাতা যোগ্যতা আছে কিনা এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। তারপর অনলাইনের মাধ্যমে
বয়স্ক ভাতার আবেদন পত্রটি পূরণ করার পর আবেদনের মূল
ওয়েবসাইটের https://mis.bhata.gov.bd/onlineApplication এ গিয়ে মেনু
অপশনে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার পরে দুইটি অপশন দেখা যাবে। তার মধ্যে থেকে
“বয়স্ক ভাতা নামক” অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। তারপর স্ক্রিনে যে অংশটি
দেখা যাবে সেখানে চাওয়া তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করে “অনুসন্ধান” অপশনে
ক্লিক করতে হবে। এন আই ডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রের বয়সের সাথে
জন্ম নিবন্ধনের তারিখ মিল থাকলে “অনুসন্ধান” অপশন থেকে আপনার বয়স্ক ভাতার
আবেদনটি দেখা যাবে। এরপর থেকে আপনার বয়স্ক ভাতার যাচাই প্রক্রিয়া শুরু হবে। তখন
আপনি আপনার সকল তথ্যগুলো নির্ভুলভাবে যাচাই করে আপনার বয়স্ক ভাতা সংক্রান্ত সকল
তথ্য যাচাই করে নিতে পারবেন।
বয়স্ক ভাতা তালিকা ২০২৪
বয়স্ক ভাতা দেশের বয়োজ্যেষ্ঠ ও সহায় সম্বলহীন উপার্জন করতে অক্ষম এমন
জনগোষ্ঠীর জন্য গঠিত একটি কর্মসূচি। যারা স্বল্প উপার্জনে তাদের নিত্য
প্রয়োজনীয় চাহিদা ও সামাজিক নিরাপত্তা ভোগ করতে পারে না অবহেলিত, লাঞ্ছিত,
দেশের বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত, মূলত তাদের সম্মান ও নিরাপত্তার জন্য সরকার
বয়স্ক ভাতা কর্মসূচি প্রত্যাবর্তন করেন। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বর্তমানে এই দেশের
বয়স্ক
ভাতা প্রাপ্ত ৪,০১০০০ জন ব্যক্তি। তালিকা অনুসারে বয়স্ক ভাতা ২০২৪ এ মোট
৪,০১,০০০ জন ব্যক্তি পেয়েছেন। এর ভিতর পুরুষ পেয়েছেন ২,১১,০০০ জন। এবং মহিলা
পেয়েছেন ১,৯০,০০০জন।
বয়স্ক ভাতা পাবার জন্য দেশের বয়জ্যষ্ঠ পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে কিছু
গুরুত্বপূর্ণ শর্তাবলী প্রয়োগ করা হয়েছে। তার মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ও
অন্যতম শর্ত হলো ভাতা প্রার্থীর বয়স সীমা ৬৫ বছরের
উর্ধ্বে হতে হবে। তবে ভাতা প্রার্থী বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে বয়সের দিক
দিয়ে কিছুটা তারতম্য রয়েছে। ভাতা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বয়স্ক পুরুষের
সর্বনিম্ন ৬৫ বছরসীমা ও বয়স্ক মহিলাদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৬২ বছর বয়সসীমা থেকে
এ ভাতা প্রযোজ্য হবে। তবে ভাতা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির জন্ম
নিবন্ধন কার্ডে যদি আবেদনকৃত ব্যক্তির বয়সসীমা পরিবর্তিত হয়ে কম অথবা বেশি থাকে
তাহলে অবশ্যই তার জন্ম নিবন্ধন কার্ড এই নির্দিষ্ট ভাতা প্রাপ্তির বয়স অনুযায়ী
পূর্ণ করতে হবে তাহলেই আবেদনকৃত ব্যক্তি তার বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে পারবে।
বয়স্ক ভাতা কেন গৃহীত হয় না?
- বয়স্ক ভাতা প্রার্থী আবেদনকারী ব্যক্তি সরকারি কোন কর্মচারী হিসেবে পেনশন ভোগী হলে।
- অভাবগ্রস্থ ও দুঃস্থ মহিলা হিসেবে বয়স্ক ভাতা প্রার্থী ব্যক্তি ভিজিডি কার্ডধারী হলে।
- বয়স্ক ভাতা প্রার্থী ব্যক্তি নিয়মিত সরকারি অনুদান বা অন্য কোনভাবে ভাতা প্রাপ্ত হলে।
- বয়স্ক ভাতা প্রার্থী ব্যক্তি কোন সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান বা কোন বেসরকারি সংস্থা হতে ভাতা অনুদান প্রাপ্ত হলে।
বয়স্ক ভাতাভোগী মারা গেলে তার জমানো টাকা কি নমিনি তুলতে পারবে?
যদি কোন বয়স্ক ভাতাভোগী মারা যায় তাহলে তার জমানো টাকা বা নমিনি যথাযথ আবেদনের
সাপেক্ষে মারা যাওয়া ভাতা ভোগীর ব্যাংকের হিসাবে গচ্ছিত টাকা তুলতে পারবে। সাথে
সাথে অতিরিক্ত মৃত্যুমাসসহ পরবর্তী দুই মাস অর্থাৎ মোট তিন মাসের টাকা একসাথে
সমাজসেবা অফিসারের প্রত্যয়ন পত্র সাপেক্ষে ব্যাংক থেকে তুলতে পারবেন। এইজন্য কোন
বয়স্ক ভাতাভোগী মারা গেলে তার মৃত্যুর
সাত দিনের মধ্যে নিকটস্থ ইউনিয়ন পরিষদ হতে মৃত্যু সনদ সংগ্রহ করতে হবে। সাথে
সাথে বয়স্ক ভাতাভোগীর মৃত্যুর পরপরই তার ভাতা বহিটি আপনার নিকটস্থ উপজেলা/শহর
অথবা সমাজসেবা অফিসে জমা দিন। তাহলে বয়স্ক মৃত ভাতাভোগীর নমিনি তার একাউন্টে
পূর্বের গচ্ছিত ৩০০০ টাকা ও এর সাথে আরো পরবর্তী দুই মাসের ভাতার টাকা একত্রে করে
তুলতে পারবে।
লেখকের ইতি কথাঃ বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪ সম্পর্কে
সম্মানিত পাঠক আশা করছি উপরোক্ত আলোচনাগুলো থেকে বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪ কিভাবে
করবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত নিয়ম গুলো ফলো করলে
আপনি সম্পূর্ণভাবে বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন। তাই
বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪ এর প্রসেস গুলো সাবধানতার সাথে এপ্লাই করুন।তাহলে আপনি
সম্পূর্ণভাবে বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪ নির্ভুলভাবে কমপ্লিট করতে পারবেন।
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগের সাথে পড়ার
জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এ ধরনের তথ্যবহুল আর্টিকেল
নিয়মিত পোস্ট করে থাকি।তাই আপনি যদি এ ধরনের আরও তথ্যবহুল উপকারী পোস্ট পড়তে
চান তাহলে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন এবং এই পোস্টটি আপনার নিকটাত্মীয় ও
পরিবার পরিজনদের
মধ্যে এবং আপনার বন্ধু মহলে শেয়ার করে দিন ও তাদেরকে বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪
কিভাবে সম্পন্ন করবে সেই সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিন। বয়স্ক ভাতা আবেদন ২০২৪
কিভাবে সম্পন্ন করবেন এ বিষয়ে আপনার যদি কোন মতামত বা প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই
নিচে দিয়ে মতামত বক্সে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আবার আপনাদের সাথে কথা হবে নতুন
কোন আর্টিকেল নিয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ ও সুস্থ থাকুন।
কনফিডেন্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url