৯টি উপায়ে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি

আপনি কি অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়ার ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আপনার চিন্তার আর কোন কারণ নেই। কারণ আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটির মূল আলোচনায় হচ্ছে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যবহুল ও কার্যকরী আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক!
৯ টি উপায়ে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি
আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে এমন কিছু ইউনিক ও কার্যকরী তথ্য সম্পর্কে জানাবো যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই অল্প সময়ে অধিক লাভবান হতে পারবেন। অনেকে হয়তো জানেন না যে, টাইগার মুরগি পালন ব্যবসাটি কতটা লাভজনক ব্যবসা। তাই আপনি যদি টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য গুলো জানতে চান, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্যই। এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আশা করি আলোচ্য বিষয়ে বিস্তারিতভাবে নির্ভুল সব তথ্য গুলো জানতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ!
পেজ সূচিপত্রঃ
.

ভুমিকা

বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষই খুব দ্রুততম সময়ে সচ্ছল হতে চাই। এইজন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের কাজ করে এবং বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। কিন্তু কার্যকরী কিছু উপায় ও পদ্ধতি না জানার কারণেঅনেকেই লাভবান হতে পারেন না। আজকের এই আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে। আপনি যদি টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি বিষয়টি সম্পূর্ণ
ভালোভাবে জেনে নেন, তাহলে আপনি খুব দ্রুত সময়ে অধিক লাভবান হতে পারবেন। টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা থাকলে নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। অনেকেই অনেকভাবে জানার চেষ্টা করে থাকে, কিন্তু আপনি যদি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েন, তাহলে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে তথ্যবহুল সব

আলোচনা বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। এছাড়াও টাইগার মুরগি চেনার উপায়, টাইগার মুরগির খাবার তালিকা, টাইগার মুরগি কত দিনে ডিম পাড়ে এবং বছরে কয়টি ডিম পাড়ে, টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা, টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা এবং ব্যবহার বিধি, টাইগার মুরগির ভিটামিনের

তালিকা ও প্রয়োগ বিধি, টাইগার মুরগি কত দিনে কত কেজি ওজন হয়? ও টাইগার মুরগির ওজন বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আপনি যদি টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই কার্যকরী।

টাইগার মুরগি চেনার উপায়

সাধারণত বিভিন্ন খামারিরা এই টাইগার মুরগি পালন করে লাভবান হতে চাই। কিন্তু অনেক খামারি রয়েছে যারা টাইগার মুরগি চিনেন না, যার ফলে মুরগি নিয়ে এসে ভালোমতো লাভবান হতে পারেন না। সাধারণত অন্যান্য মুরগির চাইতে এই টাইগার মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। এই টাইগার মুরগি অন্যান্য মুরগির চাইতে তুলনামূলক দেখতে একটু আলাদা হয়ে থাকে। সাইজ ও আকৃতির দিক

দিয়ে এই টাইগার মুরগি অন্যান্য মুরগির চেয়ে অনেকটাই বড় হয়ে থাকে এবং এই মুরগি অনেক মোটা তাজা হয়। অন্যান্য মুরগির চাইতে ডিম ও মাংসের দিক দিয়ে এই টাইগার মুরগী অনেক উন্নত। দৈনিক টাইগার মুরগি ১২০ থেকে ১৫০ গ্রাম পর্যন্ত খাবার খেয়ে থাকে। টাইগার মোরগ সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১০ কেজি হয় এবং টাইগার মুরগি সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৬ কেজি হয়। সাধারণত এই মুরগিগুলো ডিম দেয় ৬

থেকে ৭ মাস বয়সে। টাইগার মুরগি বছরে প্রায় ১৬০ থেকে ১৮০ টি ডিম দেয়। আপনারা চাইলে এই টাইগার মুরগি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে মাংস এবং ডিম এর চাহিদা পূরণ করতে পারেন। এই টাইগার মুরগি সঠিক পদ্ধতিতে উৎপাদন করে অনেক লাভবান হওয়া যায়। বাজারে টাইগার মুরগির দাম ভালো পাওয়া যায়। তাহলে চলুন আরো কিছু টাইগার মুরগি চেনার উপায়গুলো নিচে জেনে নেয়া যাক।
  • বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য যেহেতু সব মুরগিতে রয়েছে তাই স্বাভাবিকভাবেই আপনারা টাইগার মুরগীকে দেখলে অন্য মুরগি থেকে অনেকটা আলাদা মনে হবে।
  • সাধারণত টাইগার মুরগির বডি গোলাআকৃতির হয়ে থাকে।
  • এছাড়াও অন্যান্য মুরগির চাইতে তুলনামূলক টাইগার মুরগির ওজন অনেক বেশি হয় । অন্যান্য মুরগির চেয়ে অনেক টা আলাদা মনে হবে।
  • টাইগার মুরগির রং হালকা লালচে রঙের হয় এটা তার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও সাদা কালো ও লাল এবং বিভিন্ন সংমিশ্রণে চাকরা বাকরা রং হয়।
  • টাইগার মুরগির পায়ের দিকে তাকিয়ে খেয়াল করে দেখবেন, অন্যান্য মুরগির চেয়ে টাইগার মুরগির পা অনেক মোটা সাইজের হয়।
  • আর এই মুরগি চোখের সামনে দেখলেই বোঝা যাবে এই জাতের মুরগি অন্যান্য মুরগির চেয়ে ভিন্নরকম।
  • টাইগার মুরগির ওজন অন্য মুরগির চাইতে অনেক বেশি হয়ে থাকে এবং দেখেও বোঝা যায় অনেক স্বাস্থ্যবান এবং মোটা তাজা হয় এই টাইগার মুরগী।

টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি

বর্তমানে বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি নাম টাইগার মুরগি পালন। যারা টাইগার মুরগির ব্রিডার নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন এবং প্যারেনস স্টক বানাতে চাচ্ছেন আজকের আর্টিকেলটি শুধু তাদের জন্য। ব্রিডার তৈরি করা খুব একটা সহজ কাজ নই। যদি আপনি আপনার মনোবল অটুট রেখে কাজ করতে পারেন ইনশাআল্লাহ আপনি একদিন সফলতা অর্জন করবেন।

একটি প্রাপ্তবয়স্ক টাইগার মোরগ প্রতিদিন খাবার গ্রহণ করে থাকে ১১৫ গ্রাম থেকে ১৩০ গ্রাম পর্যন্ত এবং একটি টাইগার মুরগি প্রতিদিন খাবার গ্রহণ করে থাকে ১১০ গ্রাম থেকে ১১৫ গ্রাম পর্যন্ত। একটি কথা মনে রাখবেন আপনার খামারে যদি ব্যবস্থাপনা ঠিক থাকে আপনি যদি সঠিক পদ্ধতিতে খামার ব্যবস্থাপনা করতে পারেন ইনশাআল্লাহ আপনার টাইগার মুরগির তেমন কোন রোগ বালাই হবে না।

অবশ্যই সবসময় ভেন্টিলেশন ব্যবস্থাপনাগুলো ফলো করবেন। আপনার খামারের জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। ইনশাআল্লাহ আপনার মুরগিগুলো সুস্থ থাকবে। তবে যারা ব্রিডার করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে যেমন নির্দিষ্ট সময়ের ভিতর আপনার মুরগি এবং রাতাগুলোকে আলাদা করে ফেলতে হবে। এবং আলোকসংশ্লেষণ সম্বন্ধে আপনার পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান রাখতে হবে।
কত সময় মুরগিকে আলো দেওয়া যাবে এবং কত সময় অন্ধকারে রাখতে হবে। এই বিষয়গুলো আপনাদের ক্লিয়ার হতে হবে। ডিমে আসার আগ মুহূর্তে প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা অবধি টাইগার মুরগিগুলোকে অন্ধকারে রাখা খুবই জরুরী। কারণ অন্ধকারে রেস্টিংয়ের সময়টাই মুরগির ডিম গুলো পরিপুষ্ট এবং পরিপূর্ণ হতে সহযোগিতা করে। আপনি কি জানেন প্রতিটি টাইগার মুরগির বিজ ডিমের

বাজার মূল্য কত ? প্রতিটি বিজ ডিমের বাজার মূল্য ২৫ থেকে ৩০ টাকা। যা শুনতে অনেকটাই অবাক লাগে কিন্তু এটাই সত্য। এভাবেই আপনারা অনেকেই টাইগার মুরগি পালন করে সাবলম্বী হতে পারবেন। একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা মনে রাখবেন ব্রিডার তৈরীর ক্ষেত্রে অযথা কেউ মেডিসিনের ব্যবহার করবেন না। মনে রাখবেন অতিরিক্ত মেডিসিনে কিন্তু মুরগির সাইড ইফেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং মুরগির রোগ

প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কাজেই না বুঝে আপনারা কখনোই আপনারা মেডিসিনের ব্যবহার করবেন না। যদিও ব্যবহার করতে হয়, প্রথমে রোগ নির্ণয় করবেন, কিংবা অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরেই মেডিসিন ব্যবহার করবেন। টাইগার মুরগিকে খাবারের পাশাপাশি

প্রতিদিন শাক-সবজি, তরুলতা মুরগিকে খাওয়াতে পারেন। এখান থেকে খাবারের খরচ কিছুটা কমবে এবং মনে রাখবেন, প্রকৃতি থেকে যে ধরনের শাক-সবজি তরুলতা পাওয়া যায় সেগুলোতে বিভিন্ন রকম ঔষধি গুণাবলী রয়েছে। যার কারণে মুরগি সুস্থ থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আপনারা চাইলে এই পদ্ধতিটা কাজে লাগাতে পারেন।

টাইগার মুরগির খাবার তালিকা

সারা বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন জাতের মুরগি রয়েছে এবং তাদের খাবারও ভিন্ন ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি স্বাভাবিক গঠন এবং স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য টাইগার মুরগির জন্য প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে সঠিক পদ্ধতিতে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া খুবই জরুরী। অন্যান্য মুরগির চেয়ে টাইগার মুরগির তুলনামূলক ওজন বেশি হয়ে থাকে এজন্য পুষ্টিকর খাবার দেওয়া খুবই প্রয়োজন এই মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক। ওজন অনুযায়ী এবং বয়স অনুযায়ী টাইগার মুরগীকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার

দিতে হবে। সাধারণত একটি প্রাপ্তবয়স্ক টাইগার মুরগি ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করে থাকে। যারা বাণিজ্যিকভাবে টাইগার মুরগি পালন করতে চান, কিংবা বাড়িতে পালন করতে চান টাইগার মুরগি, তাহলে তাদের অবশ্যই টাইগার মুরগির খাদ্য তালিকার সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে চলুন নিচে জেনে নেয়া যাক খাদ্য তালিকা সমূহ।
  • টাইগার মুরগির বাচ্চা জন্ম নেওয়ার পর সাধারণত তাদের দৈহিক ওজন ৪০ থেকে ৪৫ গ্রাম হয়ে থাকে। সাধারণত তখন তাদের দৈহিক বৃদ্ধি শূন্য হয়ে থাকে তাই তাদের খাবারের পরিমাণও ওই সময় শূন্য হবে।
  • সাধারণত যখন টাইগার মুরগির বাচ্চার বয়স একদিনের হবে খাবার তালিকা অনুযায়ী এবং বয়স অনুযায়ী ৫৬ গ্রাম তার ওজন হবে। তার দৈনিক বৃদ্ধি ১৪ গ্রাম এবং দৈনিক গড় শূন্য হবে। খাবার হার ০.২৩২ এবং ১৩ গ্রাম দৈনিক খাবার খাই।
  • দ্বিতীয় দিন টাইগার মুরগির বাচ্চার ৭২ গ্রাম ওজন হয়। ১৬ গ্রাম দৈনিক বৃদ্ধি হয়। টাইগার মুরগির বাচ্চার ০.৪১৭ খাদ্য পরিবর্তন হার এবং গড় ০ শতাংশ দৈনিক বৃদ্ধি। তখন দৈনিক খাবার খায় ১৭ গ্রাম এবং মোট ৩০ গ্রাম খাবার খায়।
  • সাধারণত তৃতীয় দিনে টাইগার মুরগির বাচ্চার ওজন ৯০ গ্রাম হয়ে থাকে। ১৭ গ্রাম দৈনিক বৃদ্ধি হার এবং গড় বৃদ্ধির শূন্য। এছাড়া খাবার হার ০.৫৭৩ এবং প্রতিদিন ২১ গ্রাম খাবার খাই। মোট খাবার খায় ৫১ গ্রাম।
  • চতুর্থ দিনে টাইগার মুরগির বাচ্চার ওজন ১০৯ গ্রাম হয়ে থাকে। ২০ গ্রাম দৈহিক বৃদ্ধি এবং প্রতিদিন শূন্য থাকবে গড় বৃদ্ধি। ০.৬৭৯ গ্রাম খাবার হার এবং প্রতিদিন খাবার গ্রহণ করে মোট ৭৪ গ্রাম।
  • পঞ্চম দিনে টাইগার মুরগির বাচ্চার ওজন ১৩১ গ্রাম হয়। ওজন বাড়ে ২২ গ্রাম দৈনিক এবং খাবার হার ০.৭৭৩ গ্রাম ও প্রতিদিন ২৭ গ্রাম খাবার খায়। দৈনিক খাবারের পরিমাণ ১০৫ গ্রাম।
  • ষষ্ঠ দিনে টাইগার মুরগির বাচ্চার ওজন ১৫৭ গ্রাম হয়। ২৬ গ্রাম দৈহিক বৃদ্ধি এবং ওজন বাড়ার হার কোন পরিবর্তন হবে না ও খাবার হার ০.৮৪১ গ্রাম এবং প্রতিদিন ৩১ গ্রাম খাবার খায়। খাদ্যের পরিমাণ মোট ১৩২ গ্রাম।
  • সপ্তম দিনে টাইগার মুরগির বাচ্চার বয়স অনুযায়ী ১৮৫ গ্রাম হয়। প্রতিদিনের বৃদ্ধি ২৮ গ্রাম। তবে এ সময় মুরগির গড় বৃদ্ধি পাবে। বৃদ্ধির হার ২৬.৪ এবং খাবার হার ০.৯০২ গ্রাম ও খাবার গ্রহণ করবে প্রতিদিন ৩৫ গ্রাম। খাবারের পরিমাণ মোট ১৬৭ গ্রাম।

টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

৯ টি উপায়ে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি

টাইগার মুরগিকে সঠিক নিয়মে এবং সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন দিলে এই জাতের মুরগির সাধারণত কোন ধরনের অসুখ বিসুখ হয় না। ভ্যাকসিন দেওয়ার ফলে টাইগার মুরগি সুস্থ থাকে ও রোগ থেকে মুক্তি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে মাংস এবং ডিম উৎপাদন খুবই ভালো হয় এবং খামারিরা অনেক লাভবান হয়। এই টাইগার মুরগি অনেক উন্নত জাত। সঠিক পদ্ধতিতে পালন করতে
পারলে বাণিজ্যিকভাবে অনেক লাভবান হওয়া যায়। আর লাভবান হতে হলে টাইগার মুরগি কিভাবে পালন করতে হবে A টু Z বিস্তারিত সবকিছু জানতে হবে। তাহলে চলুন টাইগার মুরগির ভ্যাকসিনের তালিকাসমূহ গুলো নিচে দেখে নেয়া যাক।
ক্রমিক নং বয়স ও দিন রোগের নাম ভ্যাকসিনের নাম প্রয়োগ পদ্ধতি
০১ ১-৩ দিন বয়সে রাণীক্ষেত+ ব্রংকাইটিস আইবি+ এনডি চোখে ড্রপের মাধ্যমে ফোঁটা ফোঁটা করে দিতে হবে।
০২ ১১-১২ দিন বয়সে গামবোরো আই বি ডি চোখে ড্রপের মাধ্যমে ফোঁটা ফোঁটা করে দিতে হবে।
০৩ ১৭-১৮ দিন বয়সে গামবোরো আই বি ডি খাবার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে।
০৪ ১৯-২৩ দিন বয়সে রাণীক্ষেত ল্যাসোটা চোখে ড্রপের মাধ্যমে ফোঁটা ফোঁটা করে দিতে হবে।
০৫ ২৪-২৮ দিন বয়সে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ( বার্ড ফ্লু ) এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (H5N1) চামড়ার নিচে ইনজেকশনের মাধ্যমে দিতে হবে।
০৬ ৩০-৩৫ দিন বয়সে ফাউল পক্স ফাউল পক্স ডানায়সূচ ফুটাতে হবে।
০৭ ৬-৭ সপ্তাহ বয়সে রাণীক্ষেত এনডি ঘাড়ের চামড়ার নিচে ইনজেকশনের মাধ্যমে দিতে হবে।
০৮ ৮ সপ্তাহ বয়সে ফাউল কলেরা ফাউল কলেরা চিকৎসকের নির্দেশনা মোতাবেক দিতে হবে।
০৯ ৯ সপ্তাহ বয়সে ইনফেকশাস করাইজা, সালমোনেলা করাইজা + সালমোনেলা চিকৎসকের নির্দেশনা মোতাবেক দিতে হবে।
১০ ১২ সপ্তাহ বয়সে ফাউল কলেরা ফাউল কলেরা চিকৎসকের নির্দেশনা মোতাবেক দিতে হবে।
১১ ১৫-১৬ সপ্তাহ বয়সে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (বার্ড ফ্লু) এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (H5N) চামড়ার নিচে ইনজেকশন দিতে হবে।
১২ ১৬ সপ্তাহ বয়সে করাইজা, সালমোনেলা, রাণীক্ষেত, ব্রংকাইটিস জি + এনডি +আইবি চিকৎসকের নির্দেশনা মোতাবেক দিতে হবে।

টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা এবং ব্যবহার-বিধি

টাইগার মুরগি পালন করে লাভবান হতে হলে অবশ্যই টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা ও প্রয়োগবিধি সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞান রাখতে হবে। যে ওষুধগুলি টাইগার মুরগির শরীরে প্রয়োগ করলে টাইগার মুরগির গ্রোথ দ্রুত বৃদ্ধি হবে। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সে সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে চলুন নিচে জেনে নেয়া যাক টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা এবং প্রয়োগ বিধি।

ক্রমিক নং বয়স ও দিন ঔষধের নাম
০১ ১ম দিন পরিমাণ মত দিতে হবে। লাইসোভিট বা গ্লুকোজ
০২ টানা ২-৪ দিন পরিমাণ মত দিতে হবে। এমক্সাসিলিন
০৩ ৩-৫ দিনের ভিতর পরিমাণ মত দিতে হবে। আইবি+এনডি লাইভ ভ্যাক্সিন (রানীক্ষেত ও ব্রংকাইটিস)
০৪ ১০-১২ দিনের ভিতর পরিমাণ মত দিতে হবে। গামবোরো লাইভ ভ্যাক্সিন
০৫ ১২-১৪ দিনের ভিতর পরিমাণ মত দিতে হবে। লিভারটনিক ও ভিটামিন
০৬ ১৮-২২ দিনের ভিতর পরিমাণ মত দিতে হবে। গামবোরো লাইভ ভ্যাক্সিন
০৭ ২৪-২৬ দিনের ভিতর পরিমাণ মত দিতে হবে। এনডি লাইভ ভ্যাক্সিন (রানীক্ষেত)
০৮ ২৪-২৬ দিনের ভিতর পরিমাণ মত দিতে হবে। এম্প্রোলিয়াম + সিপ্রো
০৯ ৩০ তম দিনে পরিমাণ মত দিতে হবে। ফাউলপক্স ভ্যাক্সিন
১০ ৩৫ তম দিনে পরিমাণ মত দিতে হবে। কৃমিনাষক ঔষধ
১১ ৪৫-৪৮ দিনের ভিতর পরিমাণ মত দিতে হবে। রানীক্ষেত লাইভ ভ্যাক্সিন (প্রাদুর্ভাব বেশি থাকলে)
১২ ৫০ দিন থেকে নিয়মিত পরিমাণ মত দিতে হবে। প্রোবায়োটিক + ভিটামিন + লিভারটনিক

টাইগার মুরগির ভিটামিনের তালিকা ও ব্যবহার-বিধি

টাইগার মুরগিকে নিচে উল্লেখিত ভিটামিন গুলো নিয়মিত প্রয়োগ করলে টাইগার মুরগির দ্রুত বৃদ্ধি ঘটবে, বেশি ডিম উৎপাদন হবে এবং এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা বেড়ে যাবে। তাই কখন কোন ভিটামিন টাইগার মুরগিতে প্রয়োগ করতে হবে তা সকল খামারিদের জানা আবশ্যক। তাহলে চলুন টাইগার মুরগির ভিটামিনের তালিকা ও প্রয়োগবিধি নিচে জেনে নেওয়া যাক।
ক্রমিক নং ভিটামিনের নাম ব্যবহার-বিধি প্রয়োগমাত্রা
০১ এডি-৩ই সপ্তাহে ২ দিন সকালে খাবারের পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে। ২ লিটার পানিতে ১ মিলি পরিমাণ।
০২ ক্যালসিয়াম সপ্তাহে ১ দিন বিকেলে খাবারের পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে। ১ লিটার পানিতে ১ মিলি পরিমাণ।
০৩ জিংক সপ্তাহে ১ দিন সকালে খাবারের পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে। ১ লিটার পানিতে ১ মিলি পরিমাণ।
০৪ লিভার টনিক সপ্তাহে ১ দিন সকালে খাবারের পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে। ৩ লিটার পানিতে ১ মিলি পরিমাণ।
০৫ ই-সেল এক সপ্তাহ অন্তর পরপর ২ দিন প্রয়োগ করতে হবে। ২ লিটার পানিতে ১ মিলি পরিমাণ।

টাইগার মুরগি কত দিনে কত কেজি ওজন হয়?

সাধারণত স্বাভাবিক মুরগির তুলনায় টাইগার মুরগির ওজন তুলনামূলক অনেক বেশি হয়। কারণ সাধারণ মুরগির চেয়ে টাইগার মুরগির গ্রোথ বেশি বৃদ্ধি পায়। লক্ষ করে দেখবেন ৩৫ দিনে অন্যান্য মুরগি ঠিকমতো বড়ই হয় না, কিন্তু টাইগার মুরগি ৩৫ দিনে প্রায় ১ কেজি ওজনের হয়ে যায়। সাধারণত টাইগার মুরগি সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১০ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। গড় অনুপাতে সাধারণত টাইগার মোরগ ৮ থেকে ১০ কেজি হয় এবং টাইগার মুরগি ৫ থেকে ৬ কেজি ওজনের হয়। আবার কেউ যদি মনে করে আরো
বড় করে খাবে, তাহলে আরো বড় করা যাবে টাইগার মুরগি। কিন্তু আবার বেশি বড় করলে দেখা যায় মুরগি মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই জন্য টাইগার মুরগি এর থেকে বড় না করাই ভালো। আপনি যখন টাইগার মুরগী দোকান থেকে কিনবেন তখন অবশ্যই ওজনের দিকে লক্ষ্য রাখবেন। কারণ অনেক দোকানি আছেন যারা অন্যান্য মুরগি দিয়ে টাইগার মুরগি বলে চালিয়ে দেয়।

টাইগার মুরগি কত দিনে ডিম পাড়ে এবং বছরে কয়টি ডিম পাড়ে?

টাইগার মুরগি পালন করা প্রত্যেক নতুন খামারিদের মনে প্রশ্ন জাগে টাইগার মুরগি কত দিনে ডিম পাড়ে? বছরে ডিম কতটি দেয় ? তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক টাইগার মুরগি কতটি ডিম পাড়ে বছরে এবং কত দিনে ডিম পাড়ে। সাধারণত ৫ থেকে ৬ মাস বয়সে টাইগার মুরগি ডিম দেওয়া শুরু করে। টাইগার মুরগি বছরে প্রায় ১৬০ থেকে ১৮০ টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। টাইগার মুরগির সাধারণত খুবই উন্নত জাতের একটি মুরগি। এভাবেই পর্যায়ক্রমে আড়াই থেকে তিন বছর পর্যন্ত টাইগার মুরগি ডিম

দিয়ে থাকে। বছরে টাইগার মুরগি দুইবার ডিম দিতে সক্ষম হয়। তারপর আস্তে আস্তে ডিম দেওয়া কমে যায়। যারা টাইগার মুরগির খামার করেন টাইগার মুরগির ডিম দিয়ে বাচ্চা ফুটান সেই বাচ্চা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত পালন করেন এবং তারপর ডিম দেওয়া শুরু করবে। তাহলে আপনারা খুবই লাভবান হবেন। কারণ টাইগার মুরগি যথেষ্ট পরিমাণে ডিম দেয় এবং পাশাপাশি মাংসও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে। আশা করা যায়, আপনারা যদি বাণিজ্যিকভাবে টাইগার মুরগি পালন করেন, তাহলে খামারিরা অনেক লাভবান হবেন।

টাইগার মুরগির ওজন বৃদ্ধির উপায়

টাইগার মুরগির ওজন বৃদ্ধির উপায়
টাইগার মুরগি কেউ যদি পালন করতে চাই তাহলে তাকে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী পালন করতে হবে এবং আপনি চাইলে মুক্ত আকাশে কিংবা খামার আকারে টাইগার মুরগী পালন করতে পারেন। যেখানে টাইগার মুরগি পালন করবেন সেখানে অবশ্যই আলো বাতাস পূর্ণ জায়গা হতে হবে এবং জায়গাটা পরিষ্কার রাখতে হবে। ভুট্টা ভেঙে বা ভুট্টা গুড়া করে কিংবা ভুট্টার সাথে লবন, ব্লিচিং পাউডার,হালকা

করে সোয়াবিন তেল, খুদ, ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়ে টাইগার মুরগিকে খাওয়াতে পারেন। ফলে টাইগার মুরগির গ্রোথ এবং বৃদ্ধি খুব তাড়াতাড়ি ভালোভাবে হবে। সাথে তরুলতা শাক-সবজি খাওয়ালেও টাইগার মুরগির অনেক উপকার হবে। কারণ বিভিন্ন রকম শাক-সবজি এবং তরুলতা তে রয়েছে নানারকম ঔষধি গুনাগুন। এবং খুবই দ্রুত টাইগার মুরগি বড় হবে। টাইগার মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

স্বাভাবিক মুরগির চেয়ে অনেক বেশি, যার ফলে টাইগার মুরগি কম অসুস্থ হয়। একটু যদি খেয়াল করে যত্ন সহকারে, নিয়ম অনুযায়ী টাইগার মুরগী পালন করা যায়, তাহলে অনেক লাভবান হওয়া যাবে। টাইগার মুরগিকে দ্রুত বড় করার জন্য অনেকে আবার পল্টি মুরগির খাবারও খাইয়ে থাকে। যা আমাদের কাছে ফিড নামে পরিচিত। এমনিতেই টাইগার মুরগির গ্রোথ বা বৃদ্ধি অনেক বেশি অন্যান্য মুরগির

তুলনায় কিন্তু পোল্টির খাবার খাওয়ালে আরো তাড়াতাড়ি গ্রোথ বৃদ্ধি পাই টাইগার মুরগির। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনি যতটি টাইগার মুরগি পালন করবেন, তার জন্য যতটুকু জায়গা প্রয়োজন ঠিক ততটুকু জায়গায় মুরগি পালন করবেন। এবং খামার তৈরি করার চেষ্টা করবেন। কারণ বেশি জায়গা নিয়ে মুরগি পালন করলে মুরগির ওজন বাড়ে না। এটা অনেকেই ভুল করে থাকে। কারণ তারা যদি

অনেক জায়গা পায়, তাহলে খাবে দৌড়াদৌড়ি করবে তখন ওজনটা বাড়বে না। আর কম জায়গায় হলে খাবে সেরকম দৌড়াদৌড়ি করতে পারবে না, তখন ওজনটা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। তাই জন্য যতোটুকু বয়সে যতটুকু জায়গা প্রয়োজন ঠিক ততটুকু জায়গায় টাইগার মুরগির খামার তৈরি করতে হবে। তাহলেই মুরগির খুবই দ্রুত গ্রোথ আসবে। অনেক সময় পরিবেশের উপরও মুরগির গ্রোথ নির্ভর করে ও লিটার

কতটুকু সুন্দর আছে, কতটুকু ঝরঝরা আছে এটার উপরে অনেক সময় গ্রোথ নির্ভর করে। এভাবেই টাইগার মুরগির ওজন বৃদ্ধি পায়। উপরোক্ত বিষয়গুলির দিকে লক্ষ্য রেখে আপনি যদি নিয়ম অনুযায়ী টাইগার মুরগি পালন করেন, তাহলে ইনশাআল্লাহলা টাইগার মুরগির গ্রোথ বৃদ্ধি পাবে এবং লাভোবান হবেন।

লেখকের ইতি কথাঃ ৯ টি উপায়ে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি

সুপ্রিয় পাঠক, আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে পুরোপুরিভাবে জানতে পেরেছেন। টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে ভালোভাবে পশু অধিদপ্তর বা পশু বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জেনে নিলে অবশ্যই আপনি টাইগার মুরগি পালন করে খুব অল্প সময়েই অধিক লাভবান হতে পারবেন। টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি গুলো জানার পরে টাইগার মুরগি পালন

করে কতটুকু লাভবান হবেন সেটা নিতান্তই আপনার নিরলস পরিশ্রম ও টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি গুলোর উপর নির্ভর করছে। এছাড়াও টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা নিয়ে কাজ করলেও অবশ্যই একজন ভালো পশু-চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। তাহলে খুব দ্রুততম সময়ে অধিক লাভবান হতে পারবেন।

সম্মানিত পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগের সাথে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এই ধরনের তথ্যবহুল ও কার্যকরী আর্টিকেল নিয়মিতই পোস্ট করে থাকি। তাই আপনি যদি এ ধরনের আরও তথ্যবহুল ও উপকারী আর্টিকেল পড়তে চান তাহলে অবশ্যই এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন। সাথে সাথে এই আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে আপনার নিকট আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজনদের কাছে

তাদের উপকারার্থে শেয়ার করে দিন। যেন তারা টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে পুরোপুরি ভালোভাবেভাবে জেনে নিতে পারে। টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে আপনার যদি কোন মতামত বা প্রশ্ন থাকে, তাহলে অবশ্যই নিচে দেয়া মতামত বক্সে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আবার আপনাদের সাথে কথা হবে নতুন কোন আর্টিকেল নিয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ ও সুস্থ থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কনফিডেন্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url