মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর ৭টি ঘরোয়া উপায়
আপনি কি দ্রুত ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? অনেকেই অনেক
ভাবে জানার চেষ্টা করে কিন্তু সঠিক ও কার্যকরী উপায়গুলো জানতে পারেনা। তাই এই
আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে আশা করছি মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর
ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক!
এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাকে এমন কিছু ইউনিক ও কার্যকরী উপায় সম্পর্কে
জানাবো যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন। তবে কোন
উপায়টি সবথেকে ভালো হবে সেটা নিতান্তই আপনার সঠিক গাইডলাইন ও খাদ্যাভ্যাসের
ওপর নির্ভর করবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক মেয়েদের দ্রুত ওজন
কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্রঃ
.
ভুমিকা
মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্বন্ধে জানার জন্য অনেকেই ইউটিউব
,গুগল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা ইনস্টাগ্রামে সার্চ দিয়ে থাকে। হয়তোবা
অনেক কিছু জানতে পারেন কিন্তু উপযুক্ত তথ্য বিশ্লেষণ এর সহিত কেউই সঠিক বার্তা
ভালোভাবে জানতে পারেন না। তাই আপনি যদি আপনার ওজন নিয়ে চিন্তিত থাকেন তাহলে আর
কোন চিন্তা নই আজকে আমাদের এই
আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে দ্রুত
ওজন কমানো যায়। তাহলে চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক, এই আর্টিকেলের মাধ্যমে
ঘরোয়া উপায়ে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় সম্বন্ধে। এই সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে
জানানোর চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
যে সকল মেয়েরা সাধারণত মোটা বা স্বাস্থ্যবান তারা প্রায় সময় তাদের স্বাস্থ্য
নিয়ে দুশ্চিন্তাই থাকেন। দুশ্চিন্তা হওয়াটাই স্বাভাবিক নয় কি? কেননা
অতিরিক্তি স্বাস্থবান শরীরের অধিকারী কেউই হতে চাই না। খেয়াল করে দেখবেন যে
মেয়েগুলো মোটা স্বাস্থ্যের অধিকারী তাদের শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দেয়
।যেমন,তাদের হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়,শরীরে অনেক রোগ বাসা বাঁধে, কাজ করতে
সমস্যা হয় ,অল্প
কাজ করলেই হাঁপিয়ে যায়, ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রত্যেকটা মেয়ে চাই স্লিম সুন্দর
বডি রাখতে। খেয়াল করে দেখবেন, কোন মেয়ে যখন তার সুন্দর,ফিট এবং স্লিম বডি
হারিয়ে ফেলে যখন স্বাস্থ্যবান হয়ে যায় তখন সে পর্যায়ে তার আগের অবস্থায়
ফিরে যাওয়া একটু কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু এখানে চিন্তার কোন বিষয় নেই কারণ
একটু কষ্ট করে সঠিক পরামর্শ সঠিক গাইডলাইন অনুসরণ করলেই মেয়েদের দ্রুত ওজন
কমানো সম্ভব। যদি আপনি মোটা স্বাস্থ্যের অধিকারী হন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি
মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলো
বিস্তারিত জানতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
- প্রথমত, আমাদের যা করতে হবে লিকুইড ক্যালোরি খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে । লিকুইড ক্যালরি হচ্ছে তরল পানিয়র সাথে আমরা যে খাবারগুলো গ্রহণ করে থাকি। যেমন চা,কফি,পেপসি ও বিভিন্ন ধরনের জুস। প্রায় প্রত্যেকটা মেয়েরই পছন্দের তালিকায় লিকুইড ক্যালোরি জাতীয় খাবার গুলো বেশি থাকে। এই খাবার গুলোকে সাধারণত আমরা খাবার হিসাবে ধরিনা কারণ এগুলো খেতে অনেক মজা লাগে তাই আমরা খাই আর এতে পেটও ভরে না । এই খাবার গুলোতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে। যা স্বাস্থ্য বাড়ানোর জন্য ওস্তাদ। নিজের অজান্তেই আমরা আমাদের স্বাস্থ্য বাড়িয়ে ফেলি। তাই অবশ্যই আগে লিকুইড ক্যালরি খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে বা পরিহার করতে হবে।
- দ্বিতীয়ত, খাবার গ্রহণের আগে ৫০০ মিলি পানি খাওয়া। প্রত্যেকবার খাবার গ্রহণের আগে হাফ লিটার পানি খেয়ে নিতে হবে। এটা করলে যে বিষয়টা হয় পেট অল্প খাবারে ভরে যায়। গবেষণাতে দেখা গিয়েছে, খাবার খাওয়ার আগে পানি পান করলে ওজন হ্রাস পেতে সাহায্য করে। তাই প্রত্যেকবার খাবার খাওয়ার আগে ৫০০ মিলি পানি পান করার অভ্যাস করতে হবে।
- তৃতীয়ত, ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। ফাইবার যুক্ত খাবার ওজন কমানোর সময় আমাদের পেট ভরা রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওজন কমানোর সময় আমাদের পেট যখন ফাঁকা থাকে তখন খাবার খেতে ইচ্ছা করে, যেকোন খাবার খেলে ওজন বেড়ে যাবে, তাই ফাইবারযুক্ত খাবার খেলে পেট ভরা থাকবে ওজন ও বাড়বে না। কারণ ফাইবার যুক্ত খাবারে ক্যালোরি খুবই অল্প পরিমাণে থাকে। খাদ্য তালিকায় লাল চাল রাখা, লাল চালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। আর এটি আমাদের পেট অনেকক্ষণ ভরা রাখে তাই অন্য কিছু খেতেও মন চায় না। হোল গ্রেইন ওটস খেলেও ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- চতুর্থত, প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ একেবারেই পরিহার করা। সাধারণত আমরা বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো বেশি পছন্দ করি যেমন বিরিয়ানি,বার্গার, পিজ্জা ইত্যাদি। কারণ তারা খাবার মজা করার জন্য অনেক রকম মসলা ব্যবহার করে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ভালো না। তাই ওজন কমাতে চাইলে বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার করতে হবে।
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে ওজন কমানোর জন্য তাহলে কি কিছুই খাবো না?
খাবেন অবশ্যই খাবেন। তাহলে চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক কোন খাবারগুলো আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্য ভালো যেটা খেলে ওজনও বাড়বে না পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতেও পারবেন
এবং নিজেকে সুন্দর ফিট এবং স্লিম রাখতে পারবেন।
- প্রথম, ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া । তাজা ফলমূল শাকসবজি খাওয়া। শাকসবজিতে খুবই অল্প পরিমাণে ক্যালরি থাকে, ফাইবারও বেশি থাকে এবং পুষ্টিগুণ তো আছেই । এগুলোতে অল্প পরিমাণে ক্যালরি থাকে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে প্রচুর পরিমাণে শাক সবজি খেতে পারবেন । বেশি খেলেও শরীরে বেশি ক্যালরি যাবে না, কারণ এগুলোতে অল্প পরিমাণে ক্যালরি থাকে এবং পুষ্টিগুণ পাওয়া যাবে অনেক বেশি। আর আমরা তো জানি না কোন শাকসবজিতে কোন পুষ্টিগুণ আছে তাই আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন রঙের শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। কারণ একেকটা শাকসবজিতে একেক রকম পুষ্টিগুণ রয়েছে। তাহলে আমাদের শরীর ওজন কমবে এবং শরীরে যে পর্যাপ্ত পুষ্টির প্রয়োজন তার ঘাটতিও পূরণ হয়ে যাবে। লাল রংয়ের সবজিতে প্রচুর লাইকোপিন থাকে যেমন: টমেটো। তারপর হলুদ আর কমলা রঙের শাকসবজি ও ফলমূল গুলোতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন যেমন:গাজর, মিষ্টি আলু, আনারস, পেঁপে। বিটা ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন তৈরি করে। এগুলো মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায়।
- দ্বিতীয়, রান্নার ক্ষেত্রে পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর তেলের ব্যবহার করতে হবে। অনেক সময় শাকসবজি সিদ্ধ খেতে পারেন । কারণ সিদ্ধ শাকসবজিতে অনেক বেশি পুষ্টি থাকে। নাহলে পরিমাণ মতো স্বাস্থ্যকর তেল দিতে পারেন।
- তৃতীয়, স্বাস্থ্যকর নাস্তা করা । স্বাস্থ্যকর নাস্তা যেমন শসা টমেটো গাজর খেতে পারেন। কারণ এগুলোতে অল্প পরিমাণে ক্যালরি থাকে। অসাস্থ্যকর খাবার পরিহার করতে হবে যেমনঃ ফাস্টফুড, চকলেট, স্নাক্স, চিপস প্রসেস ফুড ইত্যাদি।
- চতুর্থ, পরিমিত পরিমানে খাবার গ্রহণ করা। আমরা স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেও পরিমিত পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করব । কারণ আমরা যদি আমাদের শরীরের চাহিদার তুলনায় বেশি খাবার গ্রহণ করি আমাদের শরীরে বেশি ক্যালরি প্রবেশ করে তাহলে কিন্তু ওজন কমানো যাবে না। তাই পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করতে হবে। উপরোক্ত বিষয়গুলি মাথায় রেখে চললে কখনোই আমাদের শরীরে মেদ জমবে না। বিশেষ করে আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে আপনি কি কি খাবার খাচ্ছেন ? সেগুলো কি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নাকি ক্ষতিকর ? মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে একটি অন্যতম উপায় হল খাদ্য তালিকা থেকে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করা। এবং পরিমিত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা।
সঠিক ভাবে খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা
পুষ্টিবিদরা সুস্থ ও সাবলীল জীবনের জন্য পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার নির্বাচন এবং
সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন । আমাদের আলোচ্য বিষয়ের সর্বপ্রথম
যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে সেটি হলো ওজন কমানোর মূল
হাতিয়ার সঠিকভাবে খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা। সুস্থ থাকতে যেমন ভিটামিন মিনারেল এর
প্রয়োজন ঠিক তেমনি ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতেও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের প্রয়োজন। খাদ্য
তালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে কার্বোহাইড্রেট ,প্রোটিন ভিটামিন, মিনারেল ,ফাইবার
এবং কম ক্যালরিযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার রাখা অতীব জরুরী। যে খাবার গুলোতে
ফাইবার বেশি থাকে কম ক্যালরিযুক্ত ওই খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় রাখা অতি আবশ্যক
সাধারণত মেয়েদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। মেয়েদের ভিতরে অনেকে সকালের
নাস্তা করে না ওজন কমানোর জন্য কিন্তু এটা ঠিক নয়। সকালবেলা অবশ্যই হালকা
নাস্তা করতে হবে। দুপুর বেলা হালকা ভাত খেতে পারেন সাথে পরিমাণ মতো সবজি। রাতের
খাবার কোনভাবেই স্ক্রিপ্ট করা যাবে না। অনেক মেয়ে রাতে খেতে
চায় না ওজন কমানোর জন্য কিন্তু রাতে না খাওয়ার কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে
তাই রাতে হালকা কিছু হলেও খাওয়া উচিত। অনেকে মনে করে চর্বিযুক্ত খাবার
স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো না ওজন বৃদ্ধি করে এই ধারণাটি একেবারেই ভুল কারণ
ফ্যাটযুক্ত খাবার শরীরের জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজন। অনেকেই আবার সুস্থ থাকতে ওজন
নিয়ন্ত্রণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইউটিউব থেকে ধারণা নেই । এগুলো থেকে না
ধারণা নিয়ে কোন খাবারটি প্রয়োজন, কোন খাবারটি ভালো, কোনটি খাবার তালিকা থেকে
বাদ দিতে হবে
,তার জন্য একজন ভালো অভিজ্ঞ ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিতে পারেন। বিশেষ করে
যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের মিষ্টি জাতীয় খাবার স্ক্রিপ্ট করতে হবে। কারণ
মিষ্টি জাতীয় খাবার শরীরের সুগারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। রক্তে যদি ইউরিক
এসিডের মাত্রা বেশি হলে খাবার নিয়ে বিশেষভাবে সচেতন হতে হবে। পিউরিন বা
পটাশিয়াম বেশি এমন শাকসবজি ও ফলমূলকে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে এবং চাল
কুমড়া, মিষ্টি পেঁপে, চিচিঙ্গা, ঝিঙে ইত্যাদি খাবার দৈনন্দিন খাবারের তালিকায়
রাখতে হবে। যে মেয়েগুলো কিডনি রোগে আক্রান্ত তাদের প্রোটিন জাতীয় খাবার কম
খেতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ যাদের রয়েছে তাদের কাঁচা লবণ কম খেতে হবে। ওজন কমানোর
জন্য ইন্টারমিটেন্ট ডায়েট জাতীয় ও অস্বাস্থ্যকর ডায়েট বাদ দিয়ে কায়িক
পরিশ্রম বাড়িয়ে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। ফাস্টফুড,জাঙ্ক ফুড, প্রসেস
ফুড, এগুলোকে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। ১০ থেকে ১২ গ্লাস
কমপক্ষে দৈনিক পানি পান করতে হবে। পানির সাথে লেবুর রস মিশাতে পারেন। কারণ
লেবুর রস শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে। সকালে
তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে। মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর জন্য ঘরোয়া উপায়ে
সঠিকভাবে খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে হবে।
পর্যাপ্ত পানি পান করার অভ্যাস করা
পানির অপর নাম জীবন। আর এই পানি পান করতে আমরা অনেক সময় অনীহা প্রকাশ করি।
বিশেষ লক্ষ্য করলে দেখা যায়,মেয়েরা পানি পান করতে চাই না। পানি আমাদের শরীরকে
সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি
পান করতে বলে থাকেন। সারাদিন সুস্থ থাকার জন্য হাইড্রেশন থাকা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ন। পর্যাপ্ত পানি পান করলে আপনার শরীরে আরো শক্তি
বাড়বে,স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে, যেকোনো কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে, আপনি
শক্তিশালী ও দ্রুতগামী
হবেন, আপনি স্লিম হবেন, আপনার হজমশক্তি বৃদ্ধি পাবে, আপনার ক্যালরি গ্রহণের
পরিমাণ কমবে, আপনার ত্বক আরো উজ্জ্বল হবে, আপনার মেজাজ ভালো থাকবে, আপনি শীতল
হবেন । তাই নিজে নিজে পানি পান করার একটি রুটিন তৈরি করুন এক ঘন্টা পর বা দুই
ঘন্টা পর পর এক বা দুই গ্লাস করে নিয়মিত পানি পান করুন। না হলে সাথে সবসময়
পানির বোতল রাখুন । অনেক সময় পানি খেতে ভুলে যান তাই ফোনে এলার্ম দিয়ে রাখতেও
পারেন।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা
দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখা। সাধারণত ফাইবার হল কৃত্রিম
জাতীয় পদার্থ যা গাছের ভিতর থেকে আসে। শাক-সবজি,ফল, বার্লি এবং ওটস থেকে পাই
ফাইবার প্রচুর পরিমাণে মানুষ। ফাইবার কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করা
ব্যবস্থাপনাকে সহজ করে। উদ্ভিদের বাইরের চামরাই পাওয়া যায় অদ্রবণীয় ফাইবার।
সরাসরি পাচনতন্ত্রের মধ্যে যায় যেমনঃ সেলারি, বীজ,তুষ, এবং গোটা শস্য
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
কয়েকটি উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হলঃ
কালো চকলেট, নাশপাতি, অ্যাভোকাডো, ওটস, আপেল, স্ট্রবেরি, মিষ্টি আলু, চিয়া
সিড, ভুট্টার খই, ছোলা, কাজুবাদাম,কুইনোয়া, মটরশুটি, বিভিন্ন রকম ডাল, বিভক্ত
ডাল,আর্টিকোক, কলা, ব্রকলি, বিটরুট, গাজর, শুকনো ফল, বাদাম, এডামামে, ব্রাসেলস
স্পাউট ইত্যাদি।
কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা
সাধারণত শর্করাযুক্ত খাবার কে কার্বোহাইড্রেট বলে। বস্টনের হার্ভাড মেডিকেল
স্কুলের গবেষকগণ তাদের গবেষণা অনুযায়ী বলেছেন, কার্বোহাইড্রেট দেহে
চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে, কর্মশক্তি বাড়ায় ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ
হয়। তবে সকল কার্বোহাইড্রেট সমান নয়। স্বাস্থ্যসম্মত কার্বোহাইড্রেট গুলো
হলোঃ গোটা শস্য, শাকসবজি, বিভিন্ন ধরনের খাবার, ফলমূল এবং ডাল থেকে
আসে। অন্যদিকে অদ্রবণীয় কার্বোহাইড্রেট হলোঃসাদা রুটি, মিষ্টি জাতীয় খাবার
এবং মেইক বা তৈরী করা খাবার। পরিশেষে বলা যায় যে, ভারসাম্য বজায় রাখতে
স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট এবং বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিসমৃদ্ধ উপাদানের সাথে
স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেটের উৎস খুঁজে বের করতে হবে। কার্বোহাইড্রেট থেকে
দৈনিক ৪৫ থেকে ৬২ শতাংশ ক্যালরি গ্রহণ করতে পারেন। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা থেকে
যদি
২০০০ ক্যালোরি গ্রহণ করেন তাহলে সেখান থেকে সাধারণত ৯০০ থেকে ১৩০০ ক্যালোরি
স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট থেকে আসে। কার্বোহাইড্রেট দৈনিক প্রায় ২২৫ থেকে
৩২৫ গ্রাম গ্রহণ করতে পারেন। সাধারণত বয়স, ওজন এবং স্বাস্থ্যের উপর এইমাত্রা
নির্ভর করে। অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা যাবে না।
গ্রীন টি পান করার অভ্যাস করা
গ্রিন টি খুবই পরিচিত স্বাস্থ্য সচেতন কারীদের মাঝে । বিপাক হার উন্নত হয়
নিয়মিত গ্রীন টি পান করলে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমে না। রক্তে শর্করার
মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে গ্রিন টি। গ্রিন টি পান করলে শরীরে ট্যানিন এসিডের
পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় । তখন অতিরিক্তি এসিডিটির থেকেও গ্রিন টি রক্ষা করে।
সাধারণত গ্রিন টি সকালবেলা হালকা কিছু খাওয়ার পর এবং বিকেলবেলা গ্রহণ করার
আদর্শ সময় । সকালবেলা গ্রিন টি দিয়ে শুরু করলে দিনের শুরুটা হয় স্বাস্থ্যকর ও
ফুরফুরা অবস্থায়। এতে করে দেহের রক্ত প্রবাহের মাত্রা ঠিক রাখে এবং ধমনী শিথির
হয় নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে।
গ্রিন টি খাওয়ার সঠিক সময়ঃ
- সকালবেলা নাস্তা করার পর।
- রাতের বেলা ঘুমাতে যাওয়ার আগে।
- ব্যায়াম করার পূর্বে।
- খাবার খাওয়ার ১ ঘন্টা আগে বা একঘন্টা পরে,
- চিনি,দুধ মেশাবেন না গ্রিন টি এর সাথে।
- গভীর রাতে গ্রিন টি পান করবেন না।
- খাবার গ্রহণের সময়গুলিতে গ্রিন টি খাবেন না যেমনঃ দুপুরে বা রাতের খাবারের সময়।
- দৈনিক তিন-চার কাপের বেশি গ্রিন টি পান করবেন না
- কোনভাবেই সকালের খাবারের আগে মানে খালি পেটে গ্রিন টি খাবেন না।
সাধ্যমত লেবু পানি পান করার অভ্যাস করা
লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা আমাদের শরীরে মেদ কমাতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দৈনিক দুই বা তিন গ্লাস লেবু পানি পান করলে
স্বাস্থ্য যেমন পাবে বিভিন্ন রকম উপকার তেমন ত্বক থাকবে সুস্থ ও প্রাণউজ্জ্বল ।
প্রত্যেকদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে কুসুম গরম পানির সাথে লেবু মিশিয়ে পানি পান
করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। মিষ্টি জাতীয় শরবত, সফট ড্রিংকস বাদ দিয়ে
যারা ওজন কমাতে চান তারা নিয়মিত লেবু পানি পান করতে পারেন। শরীরকে হাইড্রেট
রাখতে সহায়তা করে এই লেবু পানি। ত্বকের কোলাজেন রক্ষা করে ভিটামিন সি। লেবু
পানি কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। লেবু পানি পান করার ফলে শরীর সতেজ
থাকে এবং ক্লান্তি ভাব কম হয়। অতিরিক্ত লেবু পানি পান করবেন না অতিরিক্ত কোন
কিছুই ভালো না স্বাস্থ্যের পক্ষে। লেবু পানি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর
করে। লেবুর রস দিয়ে গরম পানি ভালো না লাগলে হালকা একটু মধু একটু লবণ মিশ্রত
করেও খেতে পারেন। লেবু পানি পানের উপকারিতা অনেক তাই নিয়ম মেনে সাধ্যমত লেবু
পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো
দৈনিক প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের স্মৃতিশক্তি ভালো রাখে, আবেগ গত সমস্যা দূর করেন, যৌনতাই
উন্নতি, আয়ু বাড়ায়, স্বাস্থ্য ভালো রাখে, প্রফুল্ল রাখে মনকে, রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ায়, সৃজনশীলতা বাড়ায়, মানসিক চাপ কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে
রাখে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সঠিক মাত্রায় ভালো ঘুম হলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
যাদের ওজন অনেক বেশি তাদেরও যদি ভালো ঘুম হয় তাহলে ওজন কমে। ভালো ঘুম হলে
বিপাক প্রক্রিয়া ঠিকঠাক সম্পন্ন
হয় ফলে যেগুলো মেদ বাড়ায় সেগুলো হজম হয়ে যায় তাড়াতাড়ি তখন শরীরে মেদ
জমেনা । শুধু খেলাধুলা, ব্যায়াম ,খাওয়া-দাওয়া এগুলোর দিকে লক্ষ্য রাখলেই হবে
না ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে কিনা সেটার দিকেও ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে। দৈনন্দিন
জীবনযাপনে সুস্থ থাকার জন্য শরীরে ঘুমের উপকারিতা অনেক। শারীরিক সুস্থতা,
মানসিক সুস্থতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের কোন
বিকল্প নেই।
মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট
পরিমিত পরিমানে খাবার গ্রহণ এবং খাবার যদি স্বাস্থ্যসম্মত হয় তাহলে অবশ্যই তার
শরীরে কোনরকম ফ্যাট,মেদ ভুঁড়ি এগুলো জমা হবে না। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও ডাক্তার
গণ বেশি বেশি শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন। ওমেন্স ওয়ার্ল্ড এর ডাক্তার মাইকেল
"গ্রেগর"সকলের কাছে প্রকাশিত করে তার একটি ডায়েট চার্ট। অতিরিক্ত মেদ বা ওজন
কমানোর ক্ষেত্রে প্রত্যেক খাদ্য তালিকাতে শাকসবজি রাখার গুরুত্ব প্রকাশ
পেয়েছেন সেখান থেকে। এবং তিনি আরো বলেছেন যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত শরীর চর্চা
করে এবং পাশাপাশি নিয়মিত উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্য গ্রহণ করে। সে ব্যক্তির ওজন
কমানোর জন্য কোনরকম ওষুধের প্রয়োজন হবে না। তাই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্য তালিকা
তৈরি করা খুবই জরুরী। প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ সকল প্রকার পুষ্টির প্রয়োজন
রয়েছে শরীরে। তাই জন্য একটি সুষম ডায়েট চ্যাটের প্রয়োজন। তাহলে চলুন জেনে
নেয়া যাক পুষ্টিবিদদের মতে কিভাবে সকল প্রকার খাদ্যের চাহিদা পূরণ করার
মাধ্যমে একজন মেয়ে সাত দিনে তার ওজন কমাতে সফল হয়। নিচে খাদ্য তালিকাটি
দেওয়া হলোঃ
ডায়েট চার্ট-1 to 7 DAYS | সকালের খাবারের তালিকা | দুপুরের খাবারের তালিকা | বিকালের হালকা নাস্তা | রাতেরর খাবারের তালিকা |
---|---|---|---|---|
DAY-1 | একগ্লাস গরম পানিতে দুই চামচ মধু ও লেবু মিশ্রিত পানি। | এক সাভাবক বাটিতে সাধ্যমত যে কোন ধরনের ফল ও সাথে ১ থেকে ২ গ্লাস পানি। | চিনি ছাড়া এক কাপ গ্রিন টি এবং এক ঘন্টা এক্সাসাইজ। | একটি লাল আটার রুটি এবং একটি কলা। |
DAY-2 | একটি সিদ্ধ আলু,স্বাদমত লবণ এবং দুই গ্লাস পানি। | শসা, টমেটো, আদা সিদ্ধ বিট অথবা পেঁপে এক বাটি। | এক বাটি বাঁধাকপি অথবা লাল লেটুস পাতা (কাঁচা)। | সামান্য লবণ ছিটিয়ে আধা সিদ্ধ ব্রকলি অথবা ফুলকপি। |
DAY-3 | ১টি আপেল বা ১টি কমলা সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা। | লেটুস পাতা, শসা এবং আধা সিদ্ধ টমেটো এক বাটি। | ফল অথবা ফলের রস বা জুস সঙ্গে এক ঘন্টা এক্সাসাইজ। | আধা সিদ্ধ ফুলকপি, কাঁচা পেঁপে এক বাটি। |
DAY-4 | হালকা গরম দুধ এক গ্লাস এবং দুটি কলা। | এক বাটি ভেজিটেবল স্যুপ। | দুইটি কলা। | এক বাটি ভেজিটেবল স্যুপ এবং কলা। |
DAY-5 | অল্প পরিমাণে মুরগির গোস্ত এবং স্যুপ। | টমেটো এবং গোস্ত দিয়ে কম তেলে রান্না সবজি। | এক গ্লাস গ্রিন টি সাথে এক ঘন্টা এক্সাসাইজ। | এক বাটি চিকেন সুপ সাথে বিট রুটের জুস। |
DAY-6 | এক সাভাবিক বাটিতে বিভিন্ন ধরনের সবজির সালাদ। | বিভিন্ন ধরনের সবজি তেল ব্যতীত এবং চিকেন অথবা গরুর গোস্ত অল্প পরিমাণে। | ভেজানো কাঁচা ছোলা এবং একটি খেজুর সাথে পর্যাপ্ত পানি পান করা। | মিশ্র সবজির তরকারি সাথে একটি লাল আটার রুটি। |
DAY-7 | একটি লাল আটার রুটি ও সাথে একটি খেজুর। | অল্প পরিমাণে ভাত সাথে পর্যাপ্ত শাকসবজির তেলবিহীন তরকারি। | একটি আপেল অথবা ১টি কমলা এবং সাথে এক ঘন্টা এক্সাসাইজ। | অল্প পরিমাণে ভাত অথবা একটি লাল আটার রুটি সাথে পরিমাণ মতো সবজি। |
উপরোক্ত বর্ণিত ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় যদি আপনারা Day -1 থেকে Day -7 পর্যন্ত
ডায়েট চার্ট সুন্দরভাবে আপনাদের দৈনন্দিন জীবনে ফলোআপ করেন তাহলে অবশ্যই আপনি
উপকৃত হবেন।এই ডায়েট চার্ট ফলো করতে গিয়ে যদি কোন সমস্যায় ভুগেন তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন এবং পরামর্শ নিয়ে সে অনুযায়ী ডায়েট চার্ট ফলো করবেন। তাহলে নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন ইনশাআল্লাহ ।
মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর ১০টি ব্যায়াম
সঠিক ডায়েট এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে যেমন শরীরের ওজন কমানো সম্ভব ঠিক তেমনি
নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে দ্রুত ওজন কমে। মেয়েদের ক্ষেত্রে অবশ্যই ডায়েট
চার্ট ফলোআপ করার পাশাপাশি অবশ্যই নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। ওজন কমানোর জন্য
মেয়েদের অনেক রকম ব্যায়াম রয়েছে।
নিচে কয়েকটি ব্যায়ামের কথা উল্লেখ করা হলোঃ
- মেয়েদের ওজন কমানোর জন্য কয়েকটি ব্যায়াম (Some Weight Loss Exercise For Women In Bengali )
- জগিং বা দৌড়ানো (Jogging or Running)
- হাঁটা (walking)
- হাই ইন্টেনসিটি ট্রেইনিং(High-Intensity Training )
- সার্কিট ট্রেনিং (Circuit Training)
- সাইকেল রাইডিং (Cycle Riding)
- স্ট্রেন্থ ট্রেনিং (Strength Training)
- মেয়েদের জন্য ওয়েট ট্রেনিং (Weight Training For Women)
- ফলিং পুশ আপ (Folling Push Up)
- নিয়মিত ইয়োগা করা (Regular Yoga)
সুস্থ শরীরের জন্য ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। পাশাপাশি ওজন কমানোর জন্য
ব্যায়ামের গুরুত্ব অপরিসীম। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক নিচে ব্যায়াম গুলো কি
কি?
- দৌড়ানো বা জগিং করাঃ প্রতিদিন নিয়মিত ৩০ মিনিট দৌড়ানো শরীরের মেদ কমানোর জন্য খুবই কার্যকরী। দুই থেকে তিন কিলোমিটার হাঁটতে ও পারেন। এতে করে শরীরের বাড়তি ক্যালরি বার্ন হয়ে যায়। দৌড়ানোর সময় একটু একটু করে দৌড়ানোর গতি বাড়াতে হবে এবং হাঁটার সময় দ্রুত হাঁটতে হবে।
- ফলিং পুশ আপঃ ফলিং পুশ আপ পুশ আপের থেকে আলাদা বা ভিন্ন রকম। ব্যায়াম করার সময় নতজানু হয়ে হাতের উপর ভর দিন। এরপর ধীরে ধীরে আপনার শরীরকে পুশ আপ অবস্থায় নিয়ে যান। তারপর আবার আগের অবস্থায় ফিরে যান। তিনবার করে প্রতিবার আটটি করে পুশ আপ করুন ।
- হাই ইন্টেনসিটি ইন্টারভ্যাল ট্রেইনিংঃ অনেক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দ্রুত ওজন কমানোর জন্য হাই ইন্টেনসিটি ইন্টারভেল ট্রেইনিং অনেক কার্যকরী ও উপকারী ব্যায়াম। এই কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম দ্রুত ওজন কমিয়ে শরীরের ফ্যাট কমিয়ে ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
পেটের মেদ কমানোর উপায়
- কোন বেলায় খাবার বাদ না দেওয়াঃ অনেকেই সকালের নাস্তা বাদ দিয়ে একবারে দুপুরবেলা খাই। একবেলা খাবার বাদ দিলে পরবর্তীতে বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে তখন শরীরের ওজন বাড়ার বা মেদ ভুরি বাড়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই কোন বেলায় খাবার বাদ দেওয়া উচিত নয়।
- আনমনি খাবার খাওয়াঃ অনেক সময় টিভি ফোন দেখতে দেখতে আমরা খাবার খাই তবে এটা মোটেও করা ঠিক নয় কারণ যখন আমরা টিভি দেখতে দেখতে খাবার খাই আর আমরা নিজেও বুঝতে পারি না পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলি তখন ওজন বেড়ে যায়। তাই আনমনে টিভি বা ফোন দেখে খাবার খাওয়ার অভ্যাসগুলো পরিত্যাগ করতে হবে।
- মানসিক চাপঃ মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের কারণেও অনেক সময় ওজন বাড়ে। আমরা যখন দিনের পর দিন মানসিক চাপে থাকি তখন আমাদের শরীর থেকে কর্টিসল নামক একটি হরমোন নিঃসৃত হয় এবং এই হরমোন টা বাড়লে অতিরিক্ত চিনি বা চর্বিযুক্ত খাবার খাবার ক্ষুধা অনেক বেড়ে যায়। আর এই কর্টিসল হরমোন পেটে বেশি মেদ বাড়ায়। এটিকে সেন্ট্রাল এডিপোসিটি বলে । তাই নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম,পছন্দের কাজ,মেডিটেশন প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে মানসিক চাপকে দূরে রাখুন।
- খারাপ ঘুমের অভ্যাসঃ নিয়মিত ঘুম কম হলে তখন সেটা মানসিক চাপ বা স্ট্রেস তৈরি করে। আর বিভিন্ন ভাবে সেই স্ট্রেস বাড়তি ওজন বা মেদ ভুরি বাড়ার কারণ হতে পারে। আর খারাপ ঘুমের অভ্যাস থাকলে তা দ্রুত ত্যাগ করতে হবে।
- দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস বাদ দেওয়াঃ খাবার দ্রুত খেলে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পেট ভরেছে কিনা সেটা ব্রেনে সিগনাল দিতে প্রায় ৩০ মিনিট মতো সময় লাগে। মনোযোগ দিয়ে ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া অভ্যাস করতে হবে।
- বড় প্লেটে খাবার খাওয়াঃ বড় প্লেটে খাবার না খেয়ে একটু ছোট প্লেটে খাবার খেলে বেশি ভালো তার কারণ অনেক সময় আমরা পরিমাণের চেয়ে বেশি খাবার হয়ে গেলে প্লেটে সেটি, আবার খেয়ে নি, তাই ছোট প্লেট নিলে সেখানে খাবারও কম থাকবে খাবারের পরিমাণটা ঠিক থাকবে। আমরা যদি খাবার নেওয়ার সময় লক্ষ্য রাখি পরিমাণটা ঠিক আছে কিনা তাহলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে আসবে।
- সৌজন্যবোধ থেকে বেশি খাওয়াঃ অনেক সময় আমরা দাওয়াতে গেলে প্লেটে খাবার বেশি করে দিয়ে দিলে সেজন্যবোধ থেকে আমরা সেটা খেয়ে ফেলি। এ অভ্যাসগুলো আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে। আর খেয়াল রাখতে হবে যেন দাওয়াতে অতিভোজন না হয়।
- সাদা চাল সাদা আটা খাওয়াঃ সাদা চাল , সাদা আটা তৈরি করার সময় ফাইবার গুলোকে ফেলে দেওয়া হয় এতে করে এটা খেলে আমাদের শরীরের ওজন বেড়ে যায়। তাই সাদা চান সাদা আটা এর পরিবর্তে লাল চাল লাল,লাল আটা খেতে হবে। ফাইবার আমাদের শরীরকে আস্তে আস্তে হজম করতে সহায়তা করে।
- লো ফ্যাট বা ফ্যাট মুক্ত খাবার খাওয়াঃ লো ফ্যাট যুক্ত খাবার সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর না । একটা খাবার যখন লো ফ্যাট করা হয় তখন সে খাবার থেকে ফ্যাট সরিয়ে নেওয়া হয় তখন সেটা অতো খেতে ভালো হয় না । দোকানে ফ্যাট যুক্ত খাবারে অতিরিক্ত চিনি মিশিয়ে দেওয়া হয় সুস্বাদু করার জন্য আর এই খাবার খেলে তখন ওজন বেড়ে যায়।
- শুয়ে বসে থাকাঃ শুয়ে বসে থাকলে শরীরের চর্বি বাড়ে এটা সাধারণত আমরা সবাই জানি। তাই দৈনিক সপ্তাহে পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে দ্রুত হাঁটলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। শরীরের চর্বির পরিমাণ কমবে। সাথে কিছু ব্যায়ামও করতে পারেন।
লেখকের ইতি কথাঃ মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর ৭টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে
প্রিয় সম্মানিত পাঠক, এই পর্যায়ে এসে আমরা জানতে বা উপলব্ধি করতে পেরেছি
ঘরোয়া উপায়ে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব যদি সঠিক গাইডলাইন এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস
ফলোআপ করে চলেন তাহলে অবশ্যই আপনাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবেন।
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের ওয়েবসাইটে এ ধরনের তথ্যবহুল আর্টিকেল আমরা
নিয়মিত পোস্ট করে থাকি। তাই আপনি যদি এ ধরনের আরো তথ্যবহুল পোস্ট পড়তে চান,
তাহলে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন। মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর ঘরোয়া
উপায় সম্পর্কে আপনার যদি কোন মতামত বা প্রশ্ন থাকে,তাহলে নিচে দেয়া মতামত
বক্সে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আবার কথা হবে আপনাদের সাথে নতুন কোন আর্টিকেল
নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ ও সুস্থ থাকুন!
কনফিডেন্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url